ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

আল্লাহর জিকির কল্যাণের দুয়ার খোলে: শায়খ ড. হুজাইফি

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ৬, ২০১৯
আল্লাহর জিকির কল্যাণের দুয়ার খোলে: শায়খ ড. হুজাইফি

গেল শুক্রবারে মসজিদে নববীতে জুমার খুতবা দিয়েছেন প্রবীণ খতিব ও ইমাম শায়খ ড. আলী আবদুর রহমান আল-হুজাইফি। জুমার খুতবায় তিনি নেক-আমল ও পুণ্যকাজের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার সান্নিধ্য-মাধ্যম অবলম্বনে উৎসাহ দেন।

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘হে মুমিনগণ! আল্লাহকে ভয় করো, তার প্রতি নৈকট্য-মাধ্যম অন্বেষন করো এবং তার পথে সংগ্রাম করো, যাতে তোমরা সফলকাম হও। (সুরা মায়েদা, আয়াত: ৩৫)

অসিলা বা মাধ্যম গ্রহণ হলো- সমগ্র আদেশ কর্মের মাধ্যমে পালন করা।

সব ধরনের নিষেধ থেকে বিরত থাকা। এক্ষেত্রে সব রকমের অনুসরণ ও আনুগত্য অন্তর্ভুক্ত।

শায়খ হুজাইফি বলেন, জিকির ও আল্লাহর স্মরণ হলো- কল্যাণের উন্মুক্ত দ্বার, শাস্তি থেকে মুক্তির মাধ্যম, পুণ্যার্জনের মহৎ পন্থা ও অমঙ্গল থেকে রক্ষার কারণ। কেননা, জিকির ফরজ-ওয়াজিব ইবাদতকে পূর্ণতা দেয়। আমলের ঘাটতি পূরণ করে। সওয়াব-পুণ্য বিপুল করে দেয়। গুনাহ-ত্রুটি মিটিয়ে দেয়।

মসজিদে নববীতে জুমার খুতবার সময়কার দৃশ্য।  ছবি: সংগৃীত

জিকিরের মাহাত্ম্য, মর্যাদা ও কল্যাণের দিক থেকে এর অবস্থান বোঝা যায়, আল্লাহ তাআলা জিকিরকে নামাজ ও হজসহ অনেকগুলো ইবাদতে ফরজ করেছেন। আর শরিয়তও সর্বাবস্থায় জিকিরের প্রতি উৎসাহিত করেছে।

জিকিরের সওয়াব ও প্রাপ্য হলো, আল্লাহ তাআলা এর বিনিময়ে এমন পুরস্কার দেবেন, যা কোনো চোখ দেখেনি, কোনো কান শোনেনি এবং কোনো হৃদয় তা কল্পনাও করেনি।

আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, “যে ব্যক্তি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির’ দিনের প্রথম ভাগে বলবে, বিনিময়ে তাকে দশ জন দাস স্বাধীন করার সওয়াব দেওয়া হবে। তার জন্য একশটি নেকি লেখা হবে। তার একশটি গুনাহ মাফ করা হবে। এই দোয়া সন্ধ্যা পর্যন্ত তার জন্য শয়তান থেকে রক্ষাকবচ হবে। এরচেয়ে বেশি কল্যাণ আর কেউ অর্জন করতে পারবে না; তবে যে এই আমলটি বেশি করবে সেই কেবল পারবেন। ” (মুসলিম, হাদিস: ১৪১২)

জিকিরের সবচেয়ে বড় সওয়াব হলো, জান্নাত অর্জন ও জাহান্নাম থেকে রক্ষা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ। জিকির আদায়কারীকে আল্লাহ তাআলা বিপদ-দুর্বিপাক, কষ্ট-অসুবিধা ও সামগ্রিক সমস্যা থেকে রক্ষা করেন। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করেন, ‘যদি তিনি আল্লাহর তসবিহ পাঠ না করতেন, তবে তাকে পুনরুত্থানের দিন পর্যন্ত মাছের পেটেই থাকতে হতো। ’ (সুরা সাফফাত, আয়াত: ১৪৪)

আল্লাহ তাআলা আরও বলেন, ‘...সুতরাং তোমরা আমাকে স্মরণ করো, আমিও তোমাদের স্মরণ করবো এবং আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো; অকৃতজ্ঞ হয়ো না। (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫২)

জিকিরের একটি পার্থিব লাভ হলো, জিকির আত্মা ও শরীরকে শক্তিশালী করে। ইবাদতে নিমগ্ন হতে সহায়তা করে। হারাম ও নিষিদ্ধ কাজ থেকে বাঁচিয়ে রাখে। জিকিরের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা রিজিকে বরকত দান করেন। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘নুহ আ. তার পুত্রকে বলেছেন, তোমাকে সুবহানাল্লাহ ওয়া বিহামদিহি পড়ার তাগিদ দিচ্ছি। কারণ এটি হলো সৃষ্টির সালাত, সৃষ্টির তাসবিহ। আর এটির মাধ্যমে সৃষ্টিকে রিজিক দেওয়া হয়। ’ (মুসনাদ আহমদ, হাদিস: ৬৫৮৩)

আল্লাহ তাআলা আমাদের বিপুল পরিমাণে জিকির করার তাওফিক দান করুন।

ইসলাম বিভাগে আপনিও লিখতে পারেন। লেখা পাঠাতে ই-মেইল করুন: bn24.islam@gmail.com

বাংলাদেশ সময়: ২০০৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০১৯
এমএমইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।