টিয়ে-ময়না বা কাকাতুয়ার কদর অন্য পাখিদের চেয়ে বেশি। কেন বলো তো? কারণ তারা কথা বলতে পারে।
এ প্রশ্নগুলো তোমার মাথায় আসতেই পারে। যদি উত্তরগুলো কখনো না জানা হয়ে থাকে, তবে এখন জেনে নাও।
প্রথমত, পশু-পাখিরা কথা বলতে পারে না- এ কথাটা পুরোপুরি ঠিক নয়। পশু-পাখিরা নিজেদের মধ্যে ঠিকই ভাববিনিময় করতে পারে। তাদেরও নিজস্ব ভাষা রয়েছে। এই যে আমরা একেক প্রাণীর একেক রকম ডাক শুনি, এই ডাকই ওদের যোগাযোগের মাধ্যম। মুশকিল হচ্ছে, আমরা ওদের ভাষা জানি না। তাই বুঝতে পারি না ওরা কী বলছে।
একজন চায়নিজ মানুষ তোমার সঙ্গে চীনা ভাষায় কথা বললে তুমি সেটা বুঝবে না। কিন্তু আরেকজন চায়নিজ মানুষকে একই কথা বললে সে কিন্তু সেটা ঠিকই বুঝবে। ব্যাপারটা এমন।
তবে পশু-পাখি আসলে পরিপূর্ণভাবে কথা বলতে পারে না। যদি পারত, তবে আমাদের ভাষাগুলো ওরা ঠিকই শিখে ফেলত, কিংবা আমরা ওদের ভাষা শিখতে পারতাম। এবার বলো তো, শব্দই যদি করতে পারে, তবে ওরা কথা বলতে পারে না কেন?
মানুষ আর পশু-পাখির শারীরিক গঠনে অনেক পার্থক্য। এ কারণেই মানুষ কথা বলতে পারে, অন্য কোনো প্রাণী পারে না। ‘ব্রোকা’স এরিয়া’ নামক মস্তিষ্কের একটা অংশের উপরে অনেকটাই নির্ভরশীল আমাদের কথা বলার ব্যাপারটা। এই অংশটা মানুষের যেমন, অন্য কোনো প্রাণীর তেমন নয়।
এছাড়া পশু-পাখির কণ্ঠনালী, দাঁত, চোয়াল- কোনোটাই কথা বলার জন্য খুব একটা উপযোগী নয়। মানুষের ক্ষেত্রে বাগযন্ত্র এমনভাবে গঠিত যে আমরা অনায়াসে কথা বলতে পারি। কিন্তু পশু-পাখিরা সে সুবিধা পায় না।
এবার ভাবো, ময়না-টিয়ে দু’য়েকটা শব্দ বলতে পারে কেন?
আসলে অনেক বেশি শব্দ ধারণ করার ক্ষমতা ওদের মস্তিষ্কের নেই। বারবার শুনে শুনে অল্প কিছু শব্দ ওরা মস্তিষ্কে ধারণ করতে পারে এবং সেগুলো মুখস্ত উচ্চারণ করতে পারে। কিন্তু সেই শব্দগুলোর অর্থ কিন্তু ওরা বোঝে না।
তবে কথা বলতে না পারলেও পশু-পাখিরা যোগাযোগ করতে পারে ঠিকই। নিজেদের মধ্যে তারা নিজেদের ভাষায় যোগাযোগ করে, আর মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করে সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ বা ইঙ্গিতে। চেষ্টা করলে দেখবে, তুমিও পশু-পাখির ইঙ্গিত-ইশারা বুঝতে পারবে, ওদের মনের ভাব বুঝতে পারবে। পোষা প্রাণীর ক্ষেত্রে এমনটা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। আর ওদের মনের ভাব যদি বুঝতেই পারো, তাহলে ওরা কথা না বলতে পারলেও বা ক্ষতি কী?
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৭ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৫
এএ