ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

বনের রাজা

নাজমুল আহসান পলাশ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১০
বনের রাজা

এক বনে একবার সিংহ মশাই অন্য রাজ্যে গেল বেড়াতে। সিংহ ছিল বনের রাজা।

রাজা বিহীন রাজ্যে কেউ কাউকে মানতে চায় না। সবাই নিজেকে রাজা ভাবতে লাগলো। সবাই যার যার মত চলতে থাকলো। এক সময় বিশাল একটা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হলো। বনের যারা পন্ডিত এরা চিন্তা করলো এভাবে তো চলতে দেওয়া যায় না। কিছু একটা করতে হবে। পন্ডিতদের প্রধান হলো শিয়াল। সে বনের সবাইকে নিয়ে একটা সভা ডাকলো। সভায় বনের সকলে মিলিত হলো। সভার মাঝখানে দাঁড়িয়ে শিয়াল বললো, এভাবে রাজা ছাড়া রাজ্য চলতে পারে না। যেহেতু রাজা নেই সেহেতু আমাদের মধ্য থেকে কয়কদিনের জন্য একজনকে রাজা হতে হবে।

হাতি বললো, আমি হবো।
বানর বললো, তুইতো ব্যাটা শরীর নিয়ে নড়তে পারিস না। রাজ্য চালাবি কিভাবে? রাজা আমি হবো।
হরিণ বললো, তুইতো থাকিস গাছের উপর, নিচে কি হচ্ছে জানবি কিভাবে? রাজা আমি হবো।
বাঘ বললো, তাহলে তো একদিন পরপর রাজা পাল্টাতে হবে। যেই রাজা হও আমার কিছু বলার নেই। আমার শুধু খাইতে পারলেই হলো।
গন্ডার বললো, তাহলে আমি রাজা হই।
জিরাফ বললো, একটা লাথি মারলে সাত দিন পর টের পাও তুমি হবা রাজা। রাজা আমি হবো।
শুকর বললো, ব্যাটা লম্বু তোর বুদ্ধি হইলো হাটুতে। তুই হবি রাজা? রাজাতো আমি।
মহিষ বললো, তোর নাম বললেইতো মনে হয় গালি দিতেছি, তুই রাজা হবি কেমনে? রাজাতো আমি হবো।
ছাগল বললো, ব্যাটা জংলী ভূত, রাজা হওয়ার অধিকার আমার।
গাধা বললো, ছাগলে কিনা বলে, পাগলে কিনা খায়, তুই হবি রাজা। রাজা আমি।

এভাবে সবাই নিজেকে রাজা দাবি করতে লাগলো। কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি না। এক সময় সবার মধ্যে তর্ক বেঁধে গেলো। তর্ক আস্তে আস্তে মারামারির রূপ ধারণ করলো। শিয়াল পড়ল মহাবিপদে। একি অবস্থা, মিল করতে এসে মারামারি বেধে গেল। এখন জীবনটা যায় যায় অবস্থা। ওদিকে বাঘও মহাখুশি। খাবারের অভাব নেই। একেই বলে রাজভোগ।

হঠাৎ করে কে যেন হুংকার দিয়ে বলে উঠলো, কে আমার রাজ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। হুংকার শুনে সবাই নিশ্চুপ হয়ে গেল। সবাই বুঝে গেছে, এই হুংকার বনের রাজা সিংহ ছাড়া আর কারও না। সবাই যে যার মত লেজ গুটিয়ে পালাতে শুরু করলো।

শিয়াল হাসতে হাসতে বললো, যে রাজা তাকে বলতে হয় না, সে এমনিতেই রাজা।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।