ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে হাইকোর্টে তলব

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২৩
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে হাইকোর্টে তলব

ঢাকা: কারাগারে চিকিৎসক নিয়োগের আদেশ বাস্তবায়ন না করার অভিযোগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে তলব করেছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আগামী ২৪ জানুয়ারি হাইকোর্টে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে কারা অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. শফিকুল ইসলাম। রিটকারী পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জে আর খান রবিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

এর আগে গত ১৩ ডিসেম্বর কারাগারে চিকিৎসক নিয়োগের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করা হয়।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের ৬৮ কারাগার ও কারা হাসপাতালে ১৪১টি চিকিৎসকের পদের বিপরীতে প্রেষণে ও সংযুক্ত মিলিয়ে মোট ৯৩ জন চিকিৎসক রয়েছে।

এরপর আদালত শূন্য পদগুলোতে অবিলম্বে কারা চিকিৎসক নিয়োগ দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়ে ৮ জানুয়ারির মধ্যে অগ্রগতি জানাতে বলেন।

মঙ্গলবার জে আর খান রবিন জানান, চিকিৎসক নিয়োগের ব্যর্থতায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ২৪ জানুয়ারি তাকে সশরীরে হাজির হয়ে এর কারণ ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন আদালত।

২০১৯ সালে রিটটি করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জে আর খান রবিন। তখন আদালত কারাগারে চিকিৎসক নিয়োগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা নিয়ে রুল জারি করেন। সেই সঙ্গে চিকিৎসা ব্যবস্থা, চিকিৎসক নিয়োগসহ কারাগারের সার্বিক অবস্থা নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষকে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন।

পরে কারা কর্তৃপক্ষ প্রতিবেদন দিয়ে কারাগারে ২৪ জন চিকিৎসক থাকার কথা জানায়। পরে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি হাইকোর্ট শূন্য পদে চিকিৎসক নিয়োগ দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেন। পরে গত বছর ১৭ জানুয়ারি কারা কর্তৃপক্ষ প্রতিবেদন দিয়ে জানায় ১৪১ পদের বিপরীতে ১২২ জন চিকিৎসক দেশের বিভিন্ন কারাগারে নিয়োজিত আছেন। ১২২ জনের মধ্যে ৭ জন কাজ করছেন। বাকি ১০৫ জন পর্যায়ক্রমে সংযুক্ত হবেন। এরপর করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে প্রেষণ বাতিল করে বেশকিছু চিকিৎসককে তুলে নিলে পরে আর নিয়োগ হয়নি।

আইনজীবী জে আর খান রবিন জানান, সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৪১টি কারা চিকিৎসকের শূন্য পদে চিকিৎসক আছে মাত্র চার জন। যে কারণে শূন্য পদগুলোতে চিকিৎসক নিয়োগে আদালতের আগের আদেশ বাস্তবায়নের অবস্থা জানানোর নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করি। ১৫ নভেম্বর আদালত আগের আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলেছেন। আর এ বিষয়ে কারা মহাপরিদর্শক ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিবকে প্রতিবেদন দিতে মৌখিকভাবে আদেশ দিয়েছেন।

সে অনুসারে ১৩ ডিসেম্বর প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

কারা মহাপরিদর্শকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের ৬৮টি কারাগার ও একটি ২০০ শয্যার কারা হাসপাতালে বিভিন্ন স্তরের মোট ১৪১ সংখ্যক চিকিৎসকের অনুমোদিত পদ রয়েছে। অনুমোদিত পদের মধ্যে মাত্র চার জন সহকারী সার্জন। তারা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে প্রেষণে নিয়োজিত।

এছাড়া করোনাভাইরাস মহামারির সময় বন্দিদের স্বাস্থ্যসেবার কথা বিবেচনা করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্থানীয় সিভিল সার্জনের মাধ্যমে ৮৯ জন চিকিৎসক সাময়িকভাবে বিভিন্ন কারাগারে সংযুক্ত করা হয়।

সংযুক্ত চিকিৎসকরা সবসময় কারা এলাকায় না থাকায় তাদের কাছ থেকে সার্বক্ষণিক চিকিৎসাসেবা পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বর্তমানে জে এম বি, আনসারউল্লাহ বাংলা টিম, হরকাতুল জেহাদের জঙ্গি, গ্রেনেড হামলা ও দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা, বিডিআর বিদ্রোহ মামলা সাজাপ্রাপ্তসহ দুর্ধর্ষ প্রকৃতির বন্দিরা কারাগারে আছেন। নিরাপত্তাজনিত কারণে কারা হাসপাতালে ভর্তি রেখে তাদের যতদূর সম্ভব চিকিৎসা দেওয়া হয়। অন্যান্য সাধারণ বন্দিদের মধ্যে অনেকে নানা রকম জটিল রোগে ভুগছেন। নিয়মিত চিকিৎসক না থাকায় কারাগারে এসব বন্দিদের দৈনন্দিন চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২৩
ইএস/এমএইচএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।