ফরিদপুর: ফরিদপুরে ইজিবাইকচালক বেলায়েত মোল্লাকে (৪০) হত্যার দায়ে অভিযুক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নৈশ্য প্রহরীসহ দুইজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ওই দুই ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে ফরিদপুরের বিশেষ দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. মতিয়ার রহমান এ রায় দেন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ওই দুই ব্যক্তি হলেন- ভাঙ্গার মাঝারদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম-নৈশ্যপ্রহরী আলগী ইউনিয়নের সোনাখোলা গ্রামের সেন্টু শেখ (৩৭) ও তার বন্ধু একই গ্রামের লুৎফর হাওলাদার ওরফে কালা (৩৬)।
রায় ঘোষণার সময় সেন্টু শেখ আদালতে হাজির ছিলেন। পরে তাকে পুলিশ প্রহরায় জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। অপর আসামি লুৎফর প্রথমে গ্রেফতার হয়েছিলেন। পরে জামিন নিয়ে পলাতক হন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, নিহত ইজিবাইক চালক মাঝারদিয়া গ্রামের বেলায়েত মোল্লা ২০১৭ সালের ৬ মে বিকেল ৫টার দিকে চা পান করতে বাড়ি থেকে বের হয়ে রাতে আর ফিরে আসেননি। পরদিন ৭ মে তার মরদেহ বাড়ি থেকে আনুমানিক ২০০ মিটার দূরে জনৈক মুন্নুর বাড়ির পাশে একটি বাঁশ ঝারের পাশে ডুমুর গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। ওই দিন মৃতের স্ত্রী পাখী বেগম (৩৬) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে ভাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভাঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) পীযূষ কান্তি হালদার ২০১৭ সালের ৫ ডিসেম্বর এ হত্যার ঘটনায় সেন্টু, লুৎফর, মো. স্বপন তালুকদার ও মো. কাইয়ুমকে আভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয় সেন্টু ও লুৎফরের সঙ্গে স্থানীয় একটি নারীর অবৈধ কর্মকাণ্ড দেখে ফেলে ইজিবাইক চালক বেলায়েত। প্রথমে তারা বেলায়েতকে এ ঘটনা এলাকায় ফাঁস না করার জন্য অনুরোধ জানান। বেলায়েত এ অনুরোধ উপেক্ষা করলে তারা বেলায়েতকে হত্যা করে একটি গামছা দিয়ে ডুমুর গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে এ মামলার রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (সহকারী পিপি) গোলাম হোসেন জানান, আদালত হত্যার দায় সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় সেন্টু ও লুৎফরকে সশ্রম যাবজ্জীবন কারাদণ্য দেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলার অপর দুই আসামি স্বপন ও কাইয়ুমকে বেকসুর খালাস দেন আদালত।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০২৩
আরএ