ঢাকা: রাজধানীর বনানীতে সিটি করপোরেশনের জায়গায় ১৪ তলা বিল্ডিং নির্মাণে বোরাক রিয়েল স্টেট ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের সঙ্গে চুক্তিতে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।
রোববার (১১ জুন) এ রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
রিটে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র ও বোরাক রিয়েল স্টেট প্রাইভেট লিমিটেডকে বিবাদী করা হয়েছে।
আবেদনে সিটি করপোরেশনের জায়গায় ১৪ তলা বিল্ডিং নির্মাণে বোরাক রিয়েল স্টেট ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের সঙ্গে চুক্তিতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের জনস্বার্থ রক্ষায় বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।
একইসঙ্গে এ চুক্তিতে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশনা ও প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
আবেদনে ১ জুন ‘সরকারি জমিতে পাঁচ তারকা হোটেল’ শীর্ষক প্রতিবেদন ছাপা হয়। এ প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর সায়েদুল হক সুমন দুদকে একটি আবেদন দেন। তাতে সাড়া না পেয়ে এ প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট আবেদন করেন। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর অভিজাত এলাকা বনানীতে সিটি করপোরেশনের ৬০ কাঠা জায়গায় ২৮ তলা ভবন বানিয়ে একাই ভোগদখল করছে বোরাক রিয়েল এস্টেট প্রাইভেট লিমিটেড। সেখানে তৈরি করা হয়েছে পাঁচ তারকা হোটেল।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) কর্তৃপক্ষ বলছে, বোরাক রিয়েল এস্টেটের সঙ্গে চুক্তি ছিল ১৪তলা ভবন নির্মাণের। যার ৩০ শতাংশ পাবে সিটি করপোরেশন, বাকিটা বোরাক। সিটি করপোরেশনের হিসাব অনুযায়ী তাদের ভাগের সম্পদের মূল্য প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা। কিন্তু সে হিস্যা গত এক দশকেও বুঝে পায়নি সিটি করপোরেশন। উল্টা চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করে ১৪ তলার স্থলে ২৮ তলা ভবন নির্মাণ করে পুরোটাই নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে বোরাক।
অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র সাদেক হোসেন খোকার সময়ে বোরাক রিয়াল এস্টেটের সঙ্গে করপোরেশনের চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী, বনানী কাঁচাবাজারের পশ্চিম পাশে ও বনানী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের উত্তর পাশে সিটি করপোরেশনের জমিতে ‘বনানী সুপার মার্কেট কাম হাউজিং কমপ্লেক্স’ নির্মাণ করা হবে। ভবনের ৩০ শতাংশ পাবে সিটি করপোরেশন, ৭০ শতাংশ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। অসম এ চুক্তি নিয়ে তখন ব্যাপক সমালোচনা হয়। সংসদীয় কমিটিতেও আলোচনা হয়।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, ১৬ কাঠার খালি জমিতে অনুমোদন ছাড়াই নির্মিত ২৮ তলা ভবনে রয়েছে পাঁচ তারকা হোটেল শেরাটন। ভবনের ২৮ তলায় সুইমিংপুল, ২৭ তলায় ব্যায়ামাগার। ১৫তলায় রেস্টুরেন্ট ও ১১ তলায় রয়েছে বলরুম।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২২ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০২৩
ইএস/আরবি