গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জে লুৎফর মোল্লা হত্যা মামলায় তিন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাদের পাঁচ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১০ জুলাই) দুপুরে গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক মাকসুদুর রহমান এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলার চরকুশলী গ্রামের আলমগীর শিকদারের বাড়ির ভাড়াটিয়া ও খুলনা জেলার দাকোপ থানার আমতলা উত্তরপাড়া গ্রামের মো. শফি হাওলাদার ওরফে শফিউদ্দিন হাওলাদারের ছেলে মফিজুর রহমান ওরফে মাহফুজ ওরফে মো. মফিজ হাওলাদার (৩৩), চরকুশলী গ্রামের মো. পান্নু শিকদারের ছেলে মো. আব্দুল্লাহ শিকদার (১৯) ও একই গ্রামের মো. মন্টু শিকদারের ছেলে মো. সাজেদুল ইসলাম (২৩)।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, গত ২০২১ সালের ৭ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে লুৎফর পাশের নিলফা বাজারে যান। তিনি নিলফা বাজারের ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করার জন্য সুদে টাকা দিতেন। সন্ধ্যা সোয় ৭টার দিকে ওই বাজারের পাট ব্যবসায়ী ছিকু শিকদার তার কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা নেন। রাত পৌনে ১০টার দিকে টাকাসহ লুৎফর নিলফা বাজার থেকে সোনা খাঁর ভ্যানে করে চরকুশলী গুচ্ছ গ্রামে রবিউল নামে এক ব্যক্তির চায়ের দোকানে যান। সেখানে চা, পান খাওয়ার সময় রাত ১০টা ১০মিনিটে তার মোবাইল ফোনে একটি কল আসে। তখন তিনি হেঁটে বাড়ির দিকে রওনা হন। রাত পৌনে ১১টার দিকে স্থানীয় সোলায়মান শিকদারের বাগানে কয়েকজন তাকে কুপিয়ে ফেলে রেখে যান। এদিকে রাত বেশি হলেও বাড়ি না ফেরায় তাকে খুঁজতে শুরু করেন স্বজনরা। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে ওই বাগানে তার মরদেহ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় নিহত লুৎফর মোল্লার ছেলে সজীব মোল্লা বাদী হয়ে টুঙ্গিপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় তিন আসামির সংশ্লিষ্টতা পান
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও টুঙ্গিপাড়া থানার সেই সময়ের পরিদর্শক এ কে এম সুলতান মাহমুদ। গ্রেপ্তারের পর ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর ওই তিন আসামি ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। পরে তাদের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
২০২২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি আদালত তিন আসামির নামে দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় অভিযোগ গঠন করেন।
সোমবার পেনাল কোড, ১৮৬০ এর ৩০২ ও তৎসহ পঠিত ৩৪ ধারার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তিন আসামিকে সর্বোচ্চ সাজা দেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন পিপি সুভাষ জয়ধর আর আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট দ্বীপংকর বালা অনিতোষ ও মো. আবু সুফিয়ান মোল্লা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৩ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০২৩
এসআই