যশোর: প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, ত্রিশ লাখ মানুষের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ উপহার দিয়ে গেছেন। তাদের রক্তের দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে।
শনিবার (৫ আগস্ট) যশোর জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে আইনজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
মামলার জট প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, যশোর আদালতে ২০ বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেছে এমন মামলা পেন্ডিং আছে। এটার মানে আমরা গত ২০ বছরে ওই লোকগুলোকে বিচার দিতে পারিনি। এরজন্য দায়ী কে? আমি মনে করি বিচারক ও আইনজীবী দুজনই দায়ী। আর কিছুটা দায়ী হতে পারে প্রসেস।
তিনি আরও বলেন, সেবাপ্রার্থীরা আমাদের বাবা, চাচা নয় খালু। তাদের কষ্টের কথা ভেবে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সহজেই মামলা ডিসপোজাল হয়, সেই চেষ্টা করুন। আমরা আদালতের বারান্দা থেকে যদি একদিন আগেও কষ্ট থেকে মুক্তি দিতে পারি, তবে তিনি স্বস্তি পাবেন। এজন্য আপনাদেরকে অনুরোধ করি, আসুন আমরা চেষ্টা করে দেখি। এটা কারো একার পক্ষে সম্ভব নয়। একে অপরকে সহযোগিতা করতে হবে।
যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. মোহাম্মদ ইসহকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবু মর্ত্তুজা ছোটর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, আসুন সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করি। পরিশ্রম করে জুডিসিয়ারির গতি বৃদ্ধি করি।
বিচারপ্রার্থীকে আর যাতে বছরের পর বছর, ২০-৩০ বছর আদালতের বারান্দায় ঘুরতে না হয়। আইনজীবী হতে হলে কঠোর পরিশ্রম করা ছাড়া বিকল্প নেই। আমাদের ঘোড়ার মত পরিশ্রম করতে হবে, সন্ন্যাসীর মত সাধক হতে হবে।
আপনাদের হতে হবে একজন মোশারফ হোসেন খান, একজন নুরুল ইসলাম, সৈয়দ হাসান ইমামের মত। এটা হতে গেলে অবশ্যই কঠোর পরিশ্রমী হতে হবে। আইনজীবী হতে গেলে সততার কোনো বিকল্প নেই। কোনো আইনজীবীর মধ্যে অসততা থাকলে তিনি বেশি দূর উঠতে পারবেন না।
মতবিনিময় সভায় প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীকে যশোর আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। এছাড়াও পাবলিক প্রসিকিউটরদের পক্ষ থেকে রুপার খেজুর গাছ উপহার দেওয়া হয়।
এর আগে সকালে জেলা জজ আদালত চত্বরে বিচারপ্রার্থীদের বিশ্রামের জন্য ন্যায়কুঞ্জ উদ্বোধন করেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। এরপর তিনি আদালত চত্বর একটি জলপাই গাছের চারা রোপণ করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- জেলা ও দায়রা জজ শেখ নাজমুল আলম, স্পেশাল জেলা জজ মো. সামছুল হক, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক গোলাম কবীর, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট তাহমিদা জাহাঙ্গীর, জেলা প্রশাসক আবরাউল হাছান মজুমদার ও পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার।
বাংলাদেশ সময়: ২৩২৭ ঘণ্টা, ০৫ আগস্ট, ২০২৩
ইউজি/ এসএম