ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

চাঁদপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২৩
চাঁদপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

চাঁদপুর: চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার মিরপুর গ্রামে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী সেলিনা বেগমকে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে স্বামী মাসুদ আলম ঢালীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

 

বুধবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে চাঁদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আব্দুল হান্নান এ রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মাসুদ আলম ঢালী উপজেলার মিরপুর গ্রামের মৃত বশির উল্যা ঢালীর ছেলে। হত্যার শিকার সেলিনা বেগম একই উপজেলার কড়ইতলী গ্রামের মৃত হাজী আবুল হাশেম খানের মেয়ে।

মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে মাসুদ আলম ঢালীর সঙ্গে সেলিনা বেগমের ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের দুই ছেলে রয়েছে। এরই মধ্যে যৌতুক চাওয়ায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহ দেখা দেয়। সর্বশেষ ২০০৮ সালের ৭ এপ্রিল বিকেল আনুমানিক ৩টার সময় দুই লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে স্বামী মাসুদ সেলিনার গলাটিপে ধরে হত্যার চেষ্টা এবং ব্যাপক মারধর করেন। মার সহ্য করতে না পেরে সেলিনা ঘরে থাকা কীটনাশক পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। কিন্তু তার স্বামী মাসুদ আবার সেখান থেকে তাকে নিয়ে এসে বেদম মারধর করে জখম করেন। এরপর বাড়ির লোকজন ও স্বজনরা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে প্রথমে ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন ৮ এপ্রিল বিকেল পৌনে ৪টার দিকে সেলিনা মারা যান। এমন সংবাদ জেনে তার শ্বশুর ও পরিবারের লোকজন হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান। সংবাদ পেয়ে সেলিনার মা আয়েশা বেগম এসে তার মেয়েকে মৃত অবস্থায় পান।

এ ঘটনায় সেলিনার মা আয়েশা বেগম ২০০৮ সালের ৫ জুলাই ফরিদগঞ্জ থানায় মাসুদ আলম ঢালীসহ পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলাটি চাঁদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ৭ জুলাই গৃহীত হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন সময় ফরিদগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুভাষ কান্তি দাস তদন্ত শেষে ২০০৮ সালের ৭ আগস্ট আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সায়েদুল ইসলাম বাবু জানান, ১৪ বছরের বেশি সময় ধরে চলা মামলাটিতে ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। সাক্ষ্যগ্রহণ ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা এবং আসামি তার অপরাধ স্বীকার করায় আদালত এ রায় দেন। তবে আসামি জামিনে গিয়ে পলাতক রয়েছেন। রায়ের সময়ও আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।

রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) ছিলেন খোরশেদ আলম শাওন এবং বিবাদী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন মনিরা বেগম চৌধুরী।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।