ঢাকা: ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গ্রামীণ কল্যাণের চাকরিচ্যুত ও অবসরে যাওয়া ১০৬ শ্রমিককে মুনাফার অংশ দিতে নির্দেশ দেওয়া শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের রায় বাতিল করেছেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে জারি করা রুল মঞ্জুর করে বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) রায় ঘোষণা করেন বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. গোলাম রাব্বানী শরীফ। গ্রামীণ কল্যাণের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ ও আবদুল্লাহ আল মামুন।
শ্রম আইনে বলা আছে, শ্রম আইন কার্যকর হওয়ার দিন থেকে কোম্পানির লভ্যাংশের ৫ শতাংশ শ্রমিকদের কল্যাণ ও অংশগ্রহণ তহবিল দিতে হবে।
গ্রামীণ কল্যাণ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মালিকানাধীন গ্রামীণ কোম্পানিভুক্ত একটি অলাভজনক সামাজিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ১০৬ জন শ্রমিক ২০০৬ সাল থেকে ২০১৩ পর্যন্ত বিভিন্ন পদে এই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছেন। তাদের কেউ অবসরে গেছেন। আবার কেউ চাকরিচ্যুত হয়েছেন।
কিন্তু চাকরির পর প্রতিষ্ঠানটির মুনাফার কোনো অংশ তারা পাননি। অথচ ২০২১ সাল থেকে গ্রামীণ কল্যাণের মুনাফার অংশ শ্রমমিকদের দেওয়া হচ্ছে। যে কারণে এই শ্রমিকরা মুনাফার অংশ চেয়ে প্রথমে গ্রামীণ কল্যাণের কর্তৃপক্ষকে আইনি নোটিশ দেন। সাড়া না পেয়ে পরে তারা মামলা করেন। গত ৩ এপ্রিল এ মামলার রায় দেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল। রায়ে ট্রাইব্যুনাল আইন-বিধি অনুসারে ২০০৬ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত সময়ের মুনাফার অংশ দিতে নির্দেশ দেন।
পরে এ রায় চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন গ্রামীণ কল্যাণ কর্তৃপক্ষ। সে রিটের প্রাথমিক শুনানির পর হাইকোর্ট রুল জারি করেন। রুলে শ্রমিকদের মুনাফার অংশ দিতে নির্দেশ দেওয়া শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের রায় কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয়। চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলেন উচ্চ আদালত। এ রুল শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার রায় দেন হাইকোর্ট।
রায়ের পর আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, শ্রম আইনের ২৩১ ধারা অনুসারে দুই পক্ষের মধ্যে কোনো চুক্তি হলে এবং সে চুক্তি নিয়ে কোনো বিরোধ সৃষ্টি হলে তা নিষ্পত্তি করার এখতিয়ার শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের আছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের সঙ্গে গ্রামীণ কল্যাণের কোনো চুক্তি না থাকায় কোনো বিরোধও ছিল না। ফলে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়টি এখতিয়ারবহির্ভূত ঘোষণা করে তা বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। তবে উচ্চ আদালত রায়ে বলে দিয়েছেন, এই শ্রমিকরা চাইলে শ্রম আইনের ১৩২ ধারা অনুসারে প্রতিকার চেয়ে শ্রম আদালতে যেতে পারবেন।
তবে শ্রমিকদের পক্ষের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০২৩
ইএস/এমজেএফ