ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

আদালত অবমাননার দায় থেকে বিচারক সোহেল রানাকে অব্যাহতি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৪
আদালত অবমাননার দায় থেকে বিচারক সোহেল রানাকে অব্যাহতি

ঢাকা: আদালত অবমাননার দায় থেকে কুমিল্লার সাবেক চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সোহেল রানাকে অব্যাহতি দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

আদালত অবমাননার দায়ে হাইকোর্টের ৩০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে সোহেল রানার আপিল নিষ্পত্তি করে মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ রায় দেন।

বিচারক সোহেল রানার আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, যেহেতু দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে তাই তার আর কোনো দণ্ড থাকলো না।

তিনি আরও বলেন, হাইকোর্ট বিভাগ আদালত অবমাননার কারণে ৩০ দিনের সাজা দিয়েছিলেন এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেছিলেন। এর বিরুদ্ধে বিচারক সোহেল রানা আপিল করেছেন। সেই আপিলটা নিষ্পত্তি করেছেন এবং কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। আদালত অবমাননার যে দায় সেটা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বাকি বিচারক জীবনের জন্য কিছু নির্দেশনা দেবেন পূর্ণাঙ্গ রায়ে।  

এর আগে গত ছয় ডিসেম্বর এ আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়।

২০১৭ সালের ২৭ মার্চ কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানায় টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনে মামুন চৌধুরী ও রিয়া আক্তার দম্পতির বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়।

মামলাটির কার্যক্রমের বৈধতা নিয়ে তারা হাইকোর্টে একটি আবেদন করেন। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর হাইকোর্ট রুল জারি করে মামলাটির কার্যক্রম স্থগিত করেন।

এ স্থগিতাদেশ থাকা সত্ত্বেও কুমিল্লার তৎকালীন চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল রানা গত ১০ এপ্রিল মামলায় অভিযোগ গঠন করেন।

উচ্চ আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে বিচারকাজ পরিচালনার বিষয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন মামুন। পরে চলতি বছরের ১৪ আগস্ট হাইকোর্ট সোহেল রানাকে তলব করে অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গত ২১ আগস্ট হাজির হতে বলেন। ধার্য তারিখে সোহেল রানা হাইকোর্টে হাজির হন এবং পরে জবাব দাখিল করেন।  

তবে জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় গত ২৮ আগস্ট সোহেল রানার প্রতি স্বপ্রণোদিত আদালত অবমাননার রুল দেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি তাকে হাইকোর্টে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়।  

এদিকে হাইকোর্টে আদালত অবমাননার রুলের পর গত ৩১ আগস্ট সোহেল রানা মামলাটির অভিযোগ গঠনের আদেশ প্রত্যাহার করে নেন। বর্তমানে তিনি আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত।

আদালত অবমাননার রুলের পরিপ্রেক্ষিতে সোহেল রানা নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তবে তার ক্ষমা প্রার্থনা গ্রহণ না করে হাইকোর্ট ১২ নভেম্বর কারাদণ্ডের আদেশ দেন।

আদেশে ৩০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

একইসঙ্গে এ বিচারককে সাতদিনের মধ্যে ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

তবে এ আদেশের পরে একইদিন ওই বিচারক জামিন চেয়ে আবেদন করেন। হাইকোর্ট তাকে আপিলের শর্তে ৩০ দিনের জামিন দিয়েছেন।

এরপর বিকেলে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন সোহেল রানা। এ আবেদনের পর চেম্বার জজ আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ধার্য করেন।

এর মধ্যে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন বিচারক সোহেল রানা। আপিলে তিনি নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন। সেই আপিলের ওপর ৬ ডিসেম্বর শুনানি শেষ হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২৪
ইএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।