কক্সবাজার: মিয়ানমারে যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে বাংলাদেশের ক্যাম্প ছেড়ে রাখাইনে যাওয়া এবং পরে অস্ত্রসহ ফিরে আসা ২৩ রোহিঙ্গার মধ্যে ২২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শ্রীজ্ঞান তঞ্চঙ্গ্যা শুনানি শেষে প্রত্যেকের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উখিয়ার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাছির উদ্দিন মজুমদার।
এ সময় গ্রেপ্তারের পর কারাগারে থাকা মো. সাদেক নামের এক রোহিঙ্গা অসুস্থ হওয়ায় তার রিমান্ডের অনুমতি দেননি বিচারক।
সংঘাতের মধ্যে বিদ্রোহীদের তাড়া খেয়ে প্রাণ বাঁচাতে ৬ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারের উখিয়া সীমান্তের বিভিন্ন স্থান দিয়ে বিজিপি সদস্যদের পাশাপাশি ২৩ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকে পড়েন। পরে ৯ ফেব্রুয়ারি বিজিবির ৩৪ ব্যাটালিয়নের পালংখালী বিওপির নায়েব সুবেদার মো. শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে মামলা করে তাদের ১২টি অস্ত্রসহ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
এর আগে শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে ২৩ রোহিঙ্গাকে হাজির করে প্রত্যেকের ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন পুলিশ। বিচারক ফাহমিদা সাত্তার আবেদন আমলে নিয়ে রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) শুনানির দিন ঠিক করে দেন।
পরিদর্শক নাছির উদ্দিন বলেন, মিয়ানমার থেকে অনুপ্রবেশের সময় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ২৩ রোহিঙ্গার সবাই উখিয়ার বালুখালী ও কুতুপালং ক্যাম্পের বাসিন্দা। স্বাভাবিক কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ছেড়ে তাদের মিয়ানমারে যাওয়ার কথা না। কিন্তু কী কারণে মিয়ানমারে গেল আর তাদের হাতে অস্ত্র কেন? এসব রহস্য বের করার চেষ্টা করা হবে।
২৩ রোহিঙ্গা হলেন, উখিয়ার বালুখালী ৮ নম্বর ক্যাম্পের কবির আহমদের ছেলে মো. হোসেন আহমদ (৩০), একই ক্যাম্পের মো. ইউনুসের ছেলে মো. রফিক (২৩), আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে আয়াতুল্লাহ (৩০), ৯ নম্বর ক্যাম্পের মো. রফিকের ছেলে মো. জুনাইদ (১৯), একই ক্যাম্পের নুর কালামের ছেলে মো. হারুন (২৩), সমসের আলমের ছেলে মো. কায়সার (১৯), রশিদ আহমেদের ছেলে মো. সাবের (১৯), ১০ নম্বর ক্যাম্পের আবদুল্লাহর ছেলে ওসামা (১৯), একই ক্যাম্পের জাফর আলমের ছেলে ওমর ফারুক (১৯), মো. তোহার ছেলে মো. সাদেক (১৯), মকবুল আহমদের ছেলে হারুন অর রশিদ (২৪), হামিদ হোসেনের ছেলে ইয়াসিন আরাফাত (১৯), দিল মোহাম্মদের ছেলে মো. ইসমাইল (১৯), মো. হোসেনের ছেলে মো. রহিম (১৯), ১১ নম্বর ক্যাম্পের আতা উল্লাহর ছেলে নজু মোল্লা (৩৮), ১৫ নম্বর ক্যাম্পের মো. সৈয়দের ছেলে সৈয়দ উল্লাহ (১৯), একই ক্যাম্পের দিল মোহাম্মদের ছেলে হাফেজ আহমেদ (১৯), ২০ নম্বর ক্যাম্পের মো. রশিদের ছেলে মো. জোবায়ের (১৯), কুতুপালং এলাকার ৬ নম্বর ক্যাম্পের ইউসুফের ছেলে আব্দুল্লাহ (২০), একই এলাকার ৩ নম্বর ক্যাম্পের আবুল হাসেমের ছেলে এনামুল হাসান (২২), ২ নম্বর ক্যাম্পের ইমাম হোসেনের ছেলে মো. রফিক (২৪), একই ক্যাম্পের আবুল কালামের ছেলে সৈয়দুল ইসলাম (২৪) ও ৭ নম্বর ক্যাম্পের মো. জলিলের ছেলে মো. আরমান (২১)।
এ ঘটনায় উদ্ধার ১২টি অস্ত্রের মধ্যে পাঁচটি এসএমজি (সাবমেশিন গান), একটি জি-৩ রাইফেল, দুইটি পিস্তল ও চারটি রিভলভার রয়েছে।
এছাড়া রয়েছে এসএমজি গুলি ১৯৮ রাউন্ড, এমজি গুলি ৯৮ রাউন্ড, রাইফেলের গুলি ২৭৬ রাউন্ড, জি-৩ রাইফেলের গুলি ১০৩ রাউন্ড, পিস্তলের গুলি ১৯৩ রাউন্ড, পিস্তলের খালি কার্তুজ ২৫ রাউন্ড, রাইফেলের গ্রেনেড ফিউজ ৫ রাউন্ড, এসএমজি ম্যাগজিন ছয়টি, এলএমজি ম্যাগজিন চারটি, জি-৩ ম্যাগাজিন একটি, পিস্তল ম্যাগজিন দু’টি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৪
এসবি/এএটি