ঢাকা: শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ছাত্রলীগ নেতা ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের ২১ ব্যাচের ছাত্র ইমতিয়াজ হোসেন রাহিমের আবাসিক হলের সিট বাতিলের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
সিট বাতিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তার করা রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার (৮ এপ্রিল) বিচারপতি মো.খসরুজ্জামান ও বিচারপতি জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
এর ফলে ইমতিয়াজ রাহিমের হলে থাকতে আর কোনো বাধা নেই।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক।
ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা বুয়েট ক্যাম্পাসে গত ২৮ মার্চ মধ্যরাতে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে নেতাকর্মীদের একটি দল প্রবেশ করে। এর প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।
সেখানে তারা যে পাঁচ দফা দাবি জানান, তার প্রথমটি হচ্ছে - বিশ্ববিদ্যালয়ের সুস্পষ্ট বিধিমালা লঙ্ঘনের দায়ে রাজনৈতিক সমাগমের মূল সংগঠক পুরকৌশল বিভাগের ২১তম ব্যাচের ছাত্র ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইমতিয়াজ হোসেন রাহিমকে বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কার এবং হল (আবাসিকতা) বাতিল।
এরপর ২৯ মার্চ উপাচার্য সত্যপ্রসাদ মজুমদারের নির্দেশে একটি বিজ্ঞপ্তি দেয় বুয়েট প্রশাসন।
বিজ্ঞপ্তির ভাষ্য অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট সবার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে ২৮ মার্চ মধ্যরাতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সংঘটিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১তম ব্যাচের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রাহিমের হলের সিট বাতিল করা হলো। এছাড়া সার্বিক বিষয়ে তদন্ত করে সুপারিশ দেওয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পরীক্ষাসহ সব শিক্ষা কার্যক্রম চলমান থাকবে।
এ বিজ্ঞপ্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন ইমতিয়াজ।
আদেশের পর আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক জানান, ২৮ তারিখ রাতের ঘটনার কারণে ইমতিয়াজ রাহিমের হলের সিট বাতিল করা হয়েছিল। কিন্তু কেন বাতিল করেছিল, তার ভুল কি, কোনো কিছু বলা হয়নি। আর ন্যাচারাল জাস্টিস হচ্ছে সিট বাতিল করতে হলে শোকজ করতে হয় সেটাও করেনি। চিঠিতে এ বিষয়ে সার্বিক তদন্ত কমিটি গঠনের কথা আছে। কোর্টের কনসার্ন ছিল, এটা হলে কোনো অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির সূচনা হবে কিনা। আমি আশ্বস্ত করেছি অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির তৈরি হবে না। তার সিট বাতিলকে কেন্দ্র করে বা তার হলে ওঠাকে কেন্দ্র করে কোনো অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি ঘটবে না। কোর্ট শুধু বিজ্ঞপ্তির সিট বাতিলের অংশটুকু স্টে করেছেন। আর ইনকোয়ারি কমিটি ইনেকায়ারি করতে পারবে। এর ফলে তিনি (ইমতিয়াজ) সিটে উঠতে পারবেন এবং হলে থাকতে পারবেন।
ইমতিয়াজ জানিয়েছেন, ঈদের পর তিনি হলে উঠবেন। এর আগে ১ এপ্রিল ইমতিয়াজ রাহিমের অপর এক রিটে বুয়েটের রাজনৈতিক কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞাও স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০২৪
ইএস/এসএএইচ