ঢাকা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আবু সাঈদ, মীর মাহবুবুর রহমান মুগ্ধ, মো. ওয়াসিম আকরামসহ আরও নিহতদের স্মরণ করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। একইসঙ্গে আহত অসংখ্য শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের দ্রুত নিরাময় ও সুস্থতা কামনা করেন তিনি।
নব-নিযুক্ত এই প্রধান বিচারপতিকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ও অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
সেই সংবর্ধনায় সোমবার (১২ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি এই বক্তব্য দেন।
বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি বলেন, শুরুতেই কৃতজ্ঞতা ও গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি, গণজাগরণে আত্মদানকারী প্রত্যেক শহীদের স্মৃতির প্রতি। তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। ছাত্র-জনতার এই অভ্যুত্থানের সময় অসংখ্য শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ আহত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাদের অনেকেই এখনো চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের সবার দ্রুত নিরাময় ও সুস্থতা কামনা করছি। আমি শ্রদ্ধাবনত চিত্তে স্মরণ করছি আবু সাঈদ, মীর মাহবুবুর রহমান মুগ্ধ, মো. ওয়ামিস আকরামসহ আরও অসংখ্য শহীদদের।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিষয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, স্মরণ করছি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সব বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সম্ভ্রম হারানো মা-বোনকে। অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি সব বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি। তাদের অশেষ আত্মত্যাগের কারণে আমরা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিলাম।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিষয়ে ২৫তম প্রধান বিচারপতি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের দীর্ঘ ইতিহাসের প্রতি দৃষ্টিপাত করলে বোঝা যায় ইতিহাসের যেকোনো ক্রান্তিলগ্নে আমাদের পূর্ব-পুরুষরা সবসময় ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা ও অধিকারের সুরক্ষার জন্য নিরন্তর সংগ্রাম করে গেছেন। সেই সব ধারাবাহিক লড়াই সংগ্রামের সর্ব-সাম্প্রতিক সংগ্রামটি হলো ২০২৪ সালের সংঘটিত আমাদের এই গণঅভ্যুত্থানে। এক্ষেত্রে লক্ষণীয় যে, আমাদের বীর ছাত্র-জনতা ইতিহাসের এক মহাক্রান্তিকালের অনিবার্য আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে এক মহা-জাগরণের উন্মেষ ঘটিয়েছেন।
প্রধান বিচারপতি পদে দায়িত্ব পাওয়া নিয়ে তিনি বলেন, সীমাহীন আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে সফল বিপ্লবের দ্বারা অর্জিত একটি নতুন রাষ্ট্র ব্যবস্থার যুগ-সন্ধিক্ষণে আপনারা আমাকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব অর্পণ করেছেন। এজন্য আমি আপনাদের দেওয়া এই গুরুদায়িত্ব কৃতজ্ঞতার সঙ্গে মাথা পেতে নিলাম। বৈষম্যহীন সমাজ নির্মাণের যে সুবিশাল বিচার বিভাগীয় দায়িত্ব ছাত্র-জনতার বিপ্লবের ফলে আমার কাঁধে অর্পিত হয়েছে সেই দায়িত্ব আমি সততা, দক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করতে সচেষ্ট হব। আমি অবগত আছি যে, আপনাদের প্রত্যাশা অনেক, কিন্তু আমার হাতে সময় খুবই কম। তারপরও গণঅভ্যুত্থান-উত্তর সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, অধিকারের সুরক্ষা ও সুবিচারের সংস্কৃতির সুপ্রতিষ্ঠার জন্য যা যা করণীয় আমি তার সবকিছু করার জন্য অক্লান্ত চেষ্টা করে যাব।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০২৪
ইএস/এএটি