ঢাকা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে সোমবার (১৯ আগস্ট) ঢাকার আদালতে দুটি মামলা হয়েছে। ঢাকার মিরপুর ও শেরেবাংলা নগর থানা এলাকায় দুটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এ মামলা হয়।
একটি মামলা হয় মিরপুরে লিটন হাসান লালু ওরফে হাসান নামে এক ব্যক্তি খুনের ঘটনায়। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৪৮ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালতে হাসানের ভাই মিলন এ মামলা দায়ের করেন। আদালত মিরপুর মডেল থানা পুলিশকে মামলাটি এজাহার হিসেবে নেওয়ার নির্দেশ দেন।
মামলায় আরও যাদের আসামি করা হয়েছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য- সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সংসদ সদস্য মাইনুল হোসেন খান (নিখিল), ইলিয়াস মোল্লা, কামাল আহমেদ মজুমদার, আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিআইজি হারুন-অর-রশীদ, অতিরিক্ত যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার ও ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের সদস্য সচিব এস এম মান্নান (কচি)।
বাদীপক্ষের আইনজীবী ইলতুৎমিশ সওদাগর এ্যানী মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
অভিযোগে বলা হয়, দেশে মুক্তিকামী ছাত্র-জনতার ন্যায্য ও যৌক্তিক দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলাকালে হাসান ৪ আগস্ট মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। দুপুর ২ টার দিকে শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, আব্দুল্লাহ আল মামুন, হারুন-অর-রশীদ, আসাদুজ্জামান খান কামাল, বিপ্লব কুমার ও হাবিবুর রহমানের নির্দেশে অন্যান্য আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ২০০-৩০০ জন ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অবৈধ অস্ত্র দিয়ে গুলিবর্ষণ করেন। অজ্ঞাত আসামিদের ছোড়া বুলেটে হাসান গুলিবিদ্ধ হন। আগারগাঁও নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭ আগস্ট হাসান মারা যান।
এদিকে শেরেবাংলা নগর থানা এলাকায় কাঠমিস্ত্রি তারিক হোসেনকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ফারহা দিবা ছন্দার আদালতে তারিকের মা মোসা. ফিদুশি খাতুন এ মামলা দায়ের করেন।
আদালত বাদীর জবানবন্দি নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
মামলায় আরও যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন- সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিআইজি হারুন-অর-রশীদ ও অতিরিক্ত যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার।
বাদীপক্ষের আইনজীবী লিটন মিয়া এ তথ্য জানান। মামলায় অভিযোগ করা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ৫ আগস্ট সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে শেরেবাংলা নগর থানার সামনে রাস্তায় গুলিবিদ্ধ হন তারিক হোসেন। তাকে দ্রুত পার্শ্ববর্তী শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯ আগস্ট তিনি মারা যান।
গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশত্যাগের পর হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে সারা দেশে আদালত ও থানায় বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। অভিযোগ দেওয়া হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২৪
কেআই/আরএইচ