ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

আইনজীবী অনুপস্থিত, খালেদার আপিল শুনানি ফের মুলতবি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০২ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০১৮
আইনজীবী অনুপস্থিত, খালেদার আপিল শুনানি ফের মুলতবি

ঢাকা: আইনজীবীরা উপস্থিত না থাকায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৫ বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার করা আপিলের শুনানি ৮ আগস্ট পর্যন্ত মুলতবি করেছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার (০১ আগস্ট) এ আদেশ দেন।

আদালতে উপস্থিত ছিলেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইউসুফ মাহমুদ মোর্শেদ।

খুরশীদ আলম খান বলেন, শুরুতে ওনার (খালেদা জিয়ার) আইনজীবীরা পাস ওভার নিয়েছিলেন। পরে যখন শুনানির জন্য মামলা আসলো তখন আর তার আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন না।
 
এরপর ইউসুফ মাহমুদ মোর্শেদ বলেন, আজ কোর্ট বসার পর খালেদা জিয়ার দুইজন আইনজীবী এসে বললেন, পাসওভার (স্বল্প সময়ের জন্য মুলতবি) করেন। তখন আদালত বলেন, কোনো পাসওভার দেওয়া হবে না, আজকেই শুনানি হবে। কোর্ট তখন এক নম্বর আইটেমটা (মামলা) রেখে কার্যতালিকার ৮৯টি আইটেম শোনার পর এক নম্বর আইটেম (খালেদা জিয়ার আপিল) কল করলেন। কিন্তু সে সময় ওনাদের (খালদার আইনজীবীদের) কাউকে পাওয়া যায়নি।
 
তখন আদালত মামলার নথি হাতে নিয়ে ওকালত নামায় দেখলেন, খালেদা জিয়ার পক্ষে কতজন আইনজীবী আছেন। দেখা গেল খালেদা জিয়ার পক্ষে ২৫ জন আইনজীবী এ মামলাটি পরিচালনার জন্য ওকালতনামা জমা দিয়েছেন। কিন্তু শুনানি করতে একজন আইনজীবীও উপস্থিত ছিলেন না।
 
তখন কোর্ট খুব অসন্তুষ্টি, উষ্মা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘এ মামলার কারণে অন্যান্য মামলা কার্যতালিকায় আনা যাচ্ছে না। যার কারণে বিচারপ্রার্থীরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন’।
 
ইউসুফ মাহমুদ মোর্শদ আরও বলেন, যে কারণে কোর্ট আদেশে বলেছেন, পরে মামলাটির শুনানি ৮ আগস্ট পর্যন্ত মুলতবি করেন আদালত।
 
গত ১২ জুলাই এ আপিল শুনানি শুরু হয়।

এ মামলায় ছয় আসামির মধ্যে খালেদা জিয়াসহ তিনজন কারাবন্দি। বাকি তিন আসামি পলাতক রয়েছেন। খালেদা জিয়া ছাড়া বাকি দু’জন হলেন-মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ।

পলাতক তিনজন হলেন- বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান মামলাটিতে খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন।  

একইসঙ্গে খালেদার ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ওমমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত।

রায় ঘোষণার ১১ দিন পর ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রায়ের সার্টিফায়েড কপি বা অনুলিপি হাতে পান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এরপর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ২০ ফেব্রুয়ারি তারা এ আবেদন করেন।  

২২ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ এবং অর্থদণ্ড স্থগিত করে নথি তলব করেন। এরপর ৭ মার্চ অপর আসামি মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামালের আপিলও শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট।

পরে ২৮ মার্চ খালেদার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুদকের করা আবেদনে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। ১০ মে আরেক আসামি শরফুদ্দিনের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন আদালত। এখন তিন আসামির আপিল ও দুদকের আবেদনের রুল এ আদালতে শুনানি হচ্ছে।

এ মামলায় খালেদা জিয়াকে ১২ মার্চ হাইকোর্ট চার মাসের জামিন দেন। চার মাস শেষে ১৯ জুলাই পর্যন্ত তার জামিনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিলো। পরে দ্বিতীয় দফায় ২৬ জুলাই এবং তৃতীয় দফায় ৩১ জুলাই পর্যন্ত বর্ধিত করেছেন হাইকোর্ট। এবার মঙ্গলবার চতুর্থ দফা বাড়ানো হলো।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৮ ঘণ্টা,জুলাই ৩১, ২০১৮
ইএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।