ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

নারী শিশু আইনের ১১ (গ) ধারা সংশোধনে নির্দেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩০৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৯
নারী শিশু আইনের ১১ (গ) ধারা সংশোধনে নির্দেশ

ঢাকা: নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের যৌতুক সংক্রান্ত ১১ (গ) ধারাটি ছয় মাসের মধ্যে সংশোধন করে আপসযোগ্য বিধান করতে বলেছেন হাইকোর্ট।

এ আইনের এক মামলায় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার ( ১০ এপ্রিল) এ আদেশ দেন।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১ (গ) ধারায় বলা হয়েছে, সাধারণ জখম করার জন্য অনধিক তিন বছর কিন্তু অন্যুন এক বছর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হবে এবং অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হবে।

এতে আপসের সুযোগ নেই। তবে ২০১৮ সালে প্রণীত যৌতুক নিরোধ আইনে বলা আছে, এ আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধ আমলযোগ্য, জামিন অযোগ্য এবং আপসযোগ্য হবে।

এ ধারা সংশোধনে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আর এতে সমন্বয় করবে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও ড্রাফটিং উইং।

ধারাটি সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত হাইকোর্টের এ রায়কে অনুসরণ করতে দেশের সব নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদেশে ১১ (গ) ধারার কোনো মামলা উভয়পক্ষ আপস করতে চাইলে সে সুযোগ দিয়ে মামলা নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে।

আদালতের আদেশে ওই ধারায় চট্টগ্রাম আদালতে ২০১২ সালের ২৩ জুলাই লাভলি আক্তারের করা মামলায় তার স্বামী শফিকুল ইসলামকে দেওয়া তিন বছরের সাজাও বাতিল করেছেন হাইকোর্ট।

আদালতে স্বামী ও স্ত্রীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন হাসান মাহমুদ খান ও সামিউল হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহমেদ ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইউসুফ মাহমুদ মোর্শেদ।

আইনজীবীরা জানান, ২০১২ সালের ১৩ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি উপজেলার ফুলবাড়িয়া গ্রামের লাভলি আক্তারের সঙ্গে একই উপজেলার গচিহাটা গ্রামের শফিকুল ইসলামের বিয়ে হয়। পরবর্তীতে চাকরির সুবাদে তারা চট্টগ্রামে বসবাস শুরু করেন। এর মধ্যে যৌতুক চাওয়ার অভিযোগে লাভলি আক্তার তার স্বামীর বিরুদ্ধে ২০১২ সালের ২৩ জুলাই চট্টগ্রাম আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১(গ) ধারায় মামলা করেন।

এই মামলায় বিচার শেষে শফিকুল ইসলামকে ২০১৪ সালে তিন বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত। এ রায়ের সময় শফিকুল পলাতক ছিলেন।

পরে শফিকুল নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে সাজার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে জামিনের আবেদন জানান। হাইকোর্ট ২০১৬ সালের ১৩ মার্চ তাকে জামিন দিলে কারাগার থেকে মুক্তি পান।

পরবর্তীতে তাদের মধ্যে বিরোধ মিটে যায়। গত আড়াই মাস আগে তাদের সংসারে একটি ছেলের জন্ম হয়।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহমেদ বলেন, মামলার পর দেখা যায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আপস হয়ে যায়। কিন্তু বিধান না থাকায় মামলা প্রত্যাহার করা যায় না। তখন এ মামলাগুলো আবার সাক্ষ্যগ্রহণ করে শেষ করতে হয়। এই কারণে আদালত ১১(গ) সংশোধন করে আপসযোগ্য করতে নির্দেশ দিয়েছেন।

বাংলারেদশ সময়: ২৩০৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৯
ইএস/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।