মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সূবর্ণচরের ধর্ষণের শিকার গৃহবধূর বিষপানে আত্মহত্যার ঘটনায় দায়ের করা রিট আবেদনের ওপর শুনানিকালে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
আদালত বলেন, সমাজটা কোথায় চলে গেছে? নৈতিক অবক্ষয় এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে, আমাদের একের পর এক ঘটনা দেখতে হচ্ছে।
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার বলেন, শিক্ষকদের কেউ কেউ ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির ঘটনায় জড়িত হয়ে পড়ছেন। যেমন ফেনীর সোনাগাজীতে নুসরাতের ঘটনা অন্যতম।
এ সময় আদালত বলেন, এই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক অভিযোগ এসেছে, যদি শুরুতেই ওই ঘটনায় মাদ্রাসার গভর্নিং বডি ও স্থানীয় প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নিতো, তাহলে নুসরাতের এ পরিণতি হতো না। আদালত আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজে বিষয়টি নজরদারি করছেন। পিবিআই তদন্ত করছে। তদন্তও অনেক দূর এগিয়েছে।
গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষার কেন্দ্রে গেলে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে রাফির গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায় মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা। এর আগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে করা শ্লীলতাহানির মামলা প্রত্যাহারের জন্য রাফিকে চাপ দেয় তারা।
পরে আগুনে ঝলসে যাওয়া রাফিকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল রাতে নুসরাত জাহান রাফি মারা যায়।
শ্লীলতাহানির মামলায় আগে থেকেই কারাবন্দি ছিলেন সিরাজ উদদৌলা। আর হত্যা মামলা হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এরমধ্যে সিরাজ উদদৌলার ‘ঘনিষ্ঠ’ নুরউদ্দিনকে বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) রাতে ময়মনসিংহের ভালুকা থেকে এবং শাহাদাত হোসেন শামীমকে শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সকালে মুক্তাগাছা থেকে গ্রেফতার করে পিবিআই। নুসরাত হত্যা মামলায় নুর উদ্দিন ২নং আসামি এবং শামীম ৩নং আসামি।
বাকি আসামিদের মধ্যে সিরাজ উদদৌলাসহ ১০ জন রিমান্ডে রয়েছেন। এরা হলেন- সিরাজউদদৌলা ৭ দিন, আওয়ামী লীগ নেতা মকসুদ ৫ দিন, জাবেদ হোসেন ৭ দিন, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, আবছার উদ্দিন, আরিফুল ইসলাম, উম্মে সুলতানা পপি ও যোবায়ের হোসেন ৫ দিন করে রিমান্ডে রয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০১৯
ইএস/আরবি/