বুধবার (১৭ এপ্রিল) বিজিএমইএ’র সভাপতি বরাবরে এ নোটিশ পাঠানো হয়।
পরে মনজিল মোরসেদ বলেন, এ আবেদন প্রত্যাহার না করলে আদালত অবমাননার মামলা করা হবে।
তিনি বলেন, গত বছরের ২ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে অঙ্গীকারনামা দিয়ে শেষ বারের মতো চলতি বছরের ১২ এপ্রিল পর্যন্ত বিজিএমইএ ভবন খালি ও ভাঙার এক বছরের সময় বাড়িয়ে নেয়।
সে অঙ্গীকারনামায় বলা হয়েছিল, এ সময়ের পর সময় বাড়াতে আর কোনো আবেদন করবে না বিজিএমইএ।
কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের অফিস রেকর্ডে দেখা গেছে বিজিএমইএ ভবন খালি করতে আরও এক বছর সময় চেয়ে একজন অ্যাডভোকেট অন রেকর্ডের মাধ্যমে একটি আবেদন করা হয়েছে। এটি আপিল বিভাগের গত বছরের ২ এপ্রিলের সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন।
এদিকে ভবনটি অপসারণের অংশ হিসেবে এর মধ্যে থাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অফিসের মালামাল সরিয়ে নিতে চার দফায় সময় বেঁধে দেওয়ার পর মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে এটি সিলগালা করে দেওয়া হয় বিজিএমইএ ভবন।
১৯৯৮ সালের ২৮ নভেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজিএমইএ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। নির্মাণ শেষ হলে ২০০৬ সালের ৮ অক্টোবর ভবনটির উদ্বোধন করেন সে সময়কার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। এরপর থেকে এটি বিজিএমইএ’র প্রধান কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
কিন্তু রাজউকের অনুমোদন ছাড়াই কারওয়ান বাজার সংলগ্ন বেগুনবাড়ি খালে বিজিএমইএ ভবন নির্মাণ করা হয়েছে উল্লেখ করে ২০১০ সালের ২ অক্টোবর একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আসে। ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলের রায়ে বিজিএমইএ ভবন ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন। ভবনটি নির্মাণের আগে ওই স্থানের ভূমি যে অবস্থায় ছিল সে অবস্থায় ফিরিয়ে আনতেও নির্দেশ দেন বিজিএমইএকে।
একই বছরের ৫ এপ্রিল বিজিএমইএ’র আবেদনে হাইকোর্টের রায় ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন আপিল বিভাগ। পরবর্তী সময়ে স্থগিতাদেশের মেয়াদ আরও বাড়ান সর্বোচ্চ আদালত।
হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর লিভ টু আপিল করে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ। ২০১৬ সালের ২ জুন তা খারিজ হয়ে যায়। পরে আপিল বিভাগ তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুই দফায় ২০১৮ সালের ১২ এপ্রিল পর্যন্ত সময় দেন। এ সময় শেষ হওয়ার আগেই তারা আরও এক বছর সময় চেয়ে আবেদন করলে আদালত তাদের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে আরও এক বছর সময় দেন।
এ মামলার হাইকোর্টে থাকা অ্যামিকাস কিউরি ২০১৮ সালের ০২ এপ্রিল মনজিল মোরসেদ বলেছেন, ২০১৯ সালের ১২ এপ্রিল পর্যন্ত বিজিএমইএ সময় পেলো। অর্থাৎ ১৩ এপ্রিল থেকে এটা ভাঙতে হবে।
২০১৮ সালে ০২ এপ্রিল এ বিষয়ে বিজিএমইএ’র আইনজীবী ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ মইনুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অঙ্গীকারনামায় বলেছি এক বছর সময় পেলে আমরা আর সময় চাইবো না। আদালতের যে আদেশ দেওয়া হয়েছে সেটা মানবো। এ আন্ডারটেকিংয়ের জন্য বিজিএমইএ দায়বদ্ধ থাকবে।
প্রসঙ্গত আপিল বিভাগের রায়ে বিজিএমইএকে অবিলম্বে নিজেদের খরচে ওই ভবন ভেঙে ফেলতে বলা হয়েছিল। তারা তা না করলে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) রায়ের অনুলিপি হাতে পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করবে এবং ভবন ভাঙার খরচ বিজিএমইএ দেবে।
বাংলাদেশ সময়:১৪১৪ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭,২০১৯
ইএস/এসএইচ