জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার (১২ মে) এ আদেশ দেন।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এ আদেশ বাস্তবায়ন করে ২৩ মে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান।
পরে শিহাব উদ্দিন খান বলেন, আদালত সেই ৫২ সাব-স্ট্যান্ডার্ড পণ্য অবিলম্বে বাজার থেকে অপসারণের নির্দেশ দিয়ে আইন অনুসারে ব্যবস্থা (জব্দ বা ধ্বংস) নিতে বলছেন। একই সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এসব পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা বিএসটিআইয়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হয়। দুইজন বিবাদী এ বিষয়ে ২৩ মে আদালত আদেশ বাস্তবায়নের প্রতিবেদন দিতে বলেছেন। এছাড়া আদালত রুল জারি করেছেন।
৫২টি কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানের ভেজাল ও নিম্নমানের পণ্য জব্দ বা প্রত্যাহার করতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না এবং ওই পণ্য প্রত্যাহার বা জব্দ করতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না-তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
খাদ্য ও বাণিজ্য সচিব, বিএসটিআই মহাপরিচালক, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
ভোক্তা অধিকার সংস্থা ‘কনসাস কনজুমার্স সোসাইটি’(সিসিএস)-এর নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান গত ৮ মে এ রিট করেন।
এর আগে তারা ওইসব পণ্য প্রত্যাহার ও জব্দ করার জন্য ২৪ ঘন্টার মধ্যে ব্যবস্থা নিতে দুই সচিবসহ ৫ জনের প্রতি আইনি নোটিশ পাঠিয়েছিলেন। বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্স অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিশনের (বিএসটিআই) পরীক্ষায় ওইসব কোম্পানির ভেজাল ও নিম্নমাণের পণ্য ধরা পড়ে। এরপরও সরকারের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ না নেওয়ায় গত ৬ মে ওই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়।
বিএসটিআই-এর বরাত দিয়ে ৩ ও ৪ মে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের তথ্য তুলে ধরে নোটিশে বলা হয়েছে, বিএসটিআই সম্প্রতি ২৭ ধরনের ৪০৬টি খাদ্য পণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছে। এর মধ্যে ৩১৩টি পণ্যের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
যেখানে ৫২টি পণ্য নিম্নমানের ও ভেজাল। বিএসটিআই ওই ৫২টি প্রতিষ্ঠানকে শোকজ করেছে।
নোটিশে বলা হয়, ভেজাল ও নিম্নমানের পণ্য মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারে। কিডনি, লিভারে জটিল রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
কিন্তু অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের পণ্যসমূহ জব্দ না করে শুধুমাত্র কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে ওইসব নিম্নমানের পণ্য বাজারে বিক্রির সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এসব পণ্য বাজারে বিক্রিও হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৮ ঘণ্টা, মে ১২, ২০১৯/আপডেট: ১৩৪৮ ঘণ্টা
ইএস/এমএ/