সোমবার (১৩ মে) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ দুদকের আবেদন খারিজ করে দেন। ফলে সংশ্লিষ্ট হাইকোর্ট বেঞ্চে সুয়োমুটো রুলের শুনানি হবে।
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। অন্য পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী অমিত দাশগুপ্ত।
গত জানুয়ারিতে একটি জাতীয় দৈনিকে ৩৩ মামলায় ‘ভুল’ আসামি জেলে ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না...’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাশ গুপ্ত।
এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তা, মামলার বাদীসহ চারজনকে তলব করেন বিচারপতি নাজমুল আহাসান ও বিচারপতিকে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ। এছাড়া রুলও জারি করেছেন আদালত।
পরে ৩ ফেব্রুয়ারি সংশ্লিষ্টরা হাজিরের পর হাইকোর্ট জাহালমকে মুক্তির নির্দেশ দেন এবং দুদকের কাছে ঘটনার বিষয়ে হলফনামা আকারে জানতে চেয়েছেন। সে আদেশ অনুসারে দুদক হলফনামা আকারে তা উপস্থাপন করেন।
এর ধারাবাহিকতায় হাইকোর্ট গত ১৭ এপ্রিল জাহালম কাণ্ডে কে বা কারা দায়ী তা দেখার জন্য এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রতিবেদন চেয়েছেন।
এর আগে গত ০৬ মার্চ জাহালম প্রশ্নে ব্যাংক ঋণ জালিয়াতির ৩৩ মামলার এফআইআর, চার্জশিট, সম্পূরক চার্জশিট এবং সকল ব্যাংকের এ সংক্রান্ত নথিপত্র দাখিল করতে দুদককে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এরপর আদালত ২ মে পরবর্তী আদেশের জন্য দিন ঠিক করেন।
এরমধ্যে দুদকের এক আবেদনের প্রেক্ষিতে চেম্বার বিচারপতির আদালত হাইকোর্টে জাহালম বিষয়ক সুয়োমুটো রুলের শুনানি ১৩ মে পর্যন্ত স্থগিত করে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান।
ওই সময় দুদকের যুক্তি ছিলো যে, বেঞ্চ স্বতপ্রণোদিত হয়ে রুল দিয়েছেন সে বেঞ্চের দুদক সংক্রান্ত মামলা শুনানির এখতিয়ার নাই। দুদকের জন্য আলাদা বেঞ্চ আছে। আমরা আপিল বিভাগের একটি নজির দেখিয়েছি। হাইকোর্টের একটি রেগুলার বেঞ্চ জামিন দিয়েছিলেন। সেটা বাতিল করেছেন আপিল বিভাগ।
কিন্তু সোমবার আপিল বিভাগ দুদকের আবেদন খারিজ করে দেন। ফলে বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের বেঞ্চে এ রুলের শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী অমিত দাশগুপ্ত।
জাহালম নিয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘স্যার, আমি জাহালম। আমি আবু সালেক না… আমি নির্দোষ। ’ আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়ানো লোকটির বয়স ৩০-৩২ বছরের বেশি না। পরনে লুঙ্গি আর শার্ট। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এ বিচারকের উদ্দেশে তাকে বারবার বলতে দেখা যায়, ‘আমি আবু সালেক না। ’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আবু সালেকের বিরুদ্ধে সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির ৩৩টি মামলা হয়েছে। কিন্তু আবু সালেকের বদলে জেল খাটছেন, আদালতে হাজিরা দিয়ে চলেছেন এই জাহালম। তিনি পেশায় পাটকল শ্রমিক।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৬ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৯
ইএস/এমজেএফ