স্থানীয়া বাসিন্দাদের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া।
চার সপ্তাহের মধ্যে পানিসম্পদ সচিব, ভূমি সচিব, এলজিআরডি সচিব, ওয়াপদার মহাপরিচালক, লালমনিরহাটের ডিসি, ওয়াপদার প্রধান প্রকৌশলী (নর্দান জোন-রংপুর)সহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
সাইফুল ইসলাম প্রধানসহ ৫ জন এ সংক্রান্ত জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে এ রিট করেন।
১৩ এপ্রিল ‘পাটগ্রামে ভুট্টা ও বোরো ধান নষ্ট করে পাউবোর ক্যানেল নির্মাণ: দিশেহারা কৃষক’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, লালমনিরহাটের পাটগ্রামে কোনো পূর্ব নোটিশ প্রদান ছাড়াই কৃষকের আবাদি জমির ভুট্টা ও বোরো ফসল নষ্ট করে ক্যানেল নির্মাণ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। এতে কয়েকশো কৃষক জমি এবং ক্ষেতের ফসল হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, লালমনিরহাট পাউবো ১৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে পাটগ্রাম উপজেলার পাটগ্রাম ইউনিয়নের ঘোনাবাড়ি বাঁশভাঙ্গা থেকে জোংড়া ইউনিয়নের কুমারপাড়া ১০ কিলোমিটার ক্যানেল নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করে। জিওবির অর্থায়নে উপরে দশ মিটার দৈর্ঘ্য এবং তলদেশ (ডিপ) সাড়ে চার মিটার রেখে প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি শুরু প্রকল্পের কাজ আগামী বছরের ৩১ মে শেষ হওয়ার কথা। তবে ইতোমধ্যে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ খনন প্রায় সম্পূর্ণ হয়েছে। তিনটি এসকেভেটার দিয়ে প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত খননকাজ চলছে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডি) বজলার রহমান জানান, ৬৪ জেলার অভ্যন্তরে যে ছোট নদী, খাল, জলাশয় আছে সেখানে পুনর্খনন প্রকল্প করা হচ্ছে। আমাদের লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলাধীন জগৎবেড় ইউনিয়নের হাঁসমারা খাল, জিরো পয়েন্ট জিরো জিরো থেকে কিলোমিটার দশ পয়েন্ট জিরো পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার পুনর্খনন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রকল্পটি খাল, ছোট নদী বা খাস জমির ভেতর দিয়ে করা হচ্ছে পাউবো কর্তৃপক্ষ এমন দাবি করলেও বাস্তবের সাথে তার কোনো মিল নেই। এই ক্যানেল করা হচ্ছে কৃষকের জমি এবং জমির ফসল নষ্ট করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব জমি কারও পৈতৃক সূত্রে পাওয়া কারও দলিল মূলে কেনা। তবে যে স্থানে খনন করা হচ্ছে, ওই স্থান দিয়ে বর্ষা মওসুমে জলাধারের সৃষ্টি হয়। শুকনো মওসুমে তার কোনো অস্তিস্ত না থাকায় কৃষক ওইসব স্থানে ভুট্টা তামাক বোরো ধানসহ বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করেন। এই জলাধারের দু-একটি জায়গায় কিছু খাস জমি থাকতে পারে। তবে সেসবও সরকারি কবুলিয়াতের মাধ্যমে গরিব কৃষকদের কাছে বন্দোবস্ত করে দেয়া হয়েছে। এসব জমিতে গত মওসুমে আমন ধান ঘরে তোলার পর চলতি মওসুমে কৃষক বোরো ধান এবং ভুট্টা রোপণ করেন। এক থেকে দেড় মাস পরই এই ভুট্টা এবং বোরো ধানের কাটা ও মাড়াইর যখন শুরু হবে, ঠিক তার পূর্ব মুহূর্তে ঠিকাদারের লোকজন ক্যানেলের খননকাজ শুরু করায় শত শত কৃষকের ভুট্টা এবং বোরো ফসল নষ্ট হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৫ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৯
ইএস/এমজেএফ