এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৩ মে) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
দুই সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব, আইন সচিব, শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, সব বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ সংশ্লিষ্ট ২১ জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী শিকদার মাহমুদুর রাজী ও আইনুন নাহার সিদ্দিকা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
আইনজীবী শিকদার মাহমুদুর রাজী বলেন, বোর্ডের রুলস ও রেগুলেশন অনুসারে খাতা পুনর্মূল্যায়নের কোনো সুযোগ নেই। রেজাল্ট প্রকাশের ত্রিশ দিনের মধ্যে কেবল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করা যাবে। ফলে প্রাপ্ত নম্বরের বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ থাকলেও খাতা পুনর্মূল্যায়নের কোনো সুযোগ নেই। এ কারণে পরীক্ষার খাতা পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ চেয়ে আদালতে রিট করা হয়। বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে আদালত রুল জারি করেছেন।
একটি জাতীয় দৈনিকের ‘ইংরেজি প্রথম পত্রে কম নম্বর পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন’ শীর্ষক প্রতিবেদন যুক্ত করে এ রিট করা হয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণিতে (ইংরেজি ভার্সনের একটি শাখা) ১ রোল নম্বর ছিল নাফিস সাদিক ভূঁইয়ার। বিদ্যালয়ের সব পরীক্ষায় সে ভালো ফল করত। ৬ মে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর দেখা যায় নাফিস ইংরেজি প্রথম পত্রে ৬৩ নম্বর পেয়েছে। অন্য সব বিষয়ে ‘এ প্লাস’ (৮০-র বেশি নম্বর) পেয়েছে সে। এমনকি গণিতে ১০০-তে ১০০ পেয়েছে। সব মিলিয়ে জিপিএ-৫ পেলেও ইংরেজি প্রথম পত্রে এত কম নম্বর পাওয়ার বিষয়টি কোনোভাবেই মানতে পারছে না সে। তার পরিবারেরও একই প্রশ্ন মনে।
নাফিসের অভিভাবকেরা পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, শুধু সে একাই নয়, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ২০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী ইংরেজি প্রথম পত্রে গড়ে ৬০ বা এর সামান্য বেশি নম্বর পেয়েছে। কেউ পেয়েছে ৬৩, কেউ ৬০ বা ৬১, কারও নম্বর ৬২, ৬৪, ৬৬। অথচ অন্যান্য বিষয়ে তাদের সবার নম্বর ন্যূনতম ৮০। শ্রেণিতে মেধাতালিকায় সব সময় ওপরের দিকে থাকত তারা। এসএসসির ফলে ইংরেজিতে কম নম্বর পাওয়ার বিষয়টি তারা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা বলেন, আইডিয়াল স্কুলের বাংলা ভার্সনের বহু শিক্ষার্থী যেখানে ইংরেজি প্রথম পত্রে ৯০-এর ওপরে নম্বর পেয়েছে, সেখানে শ্রেণিতে প্রথম দিকে থাকা ইংরেজি ভার্সনের শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে এত খারাপ করার কোনো কারণ থাকতে পারে না। তাদের আশঙ্কা, এসব শিক্ষার্থীর উত্তরপত্র মূল্যায়নে কোনো গলদ হয়েছে। এ জন্য তারা এসব খাতা পুনর্মূল্যায়ন চান।
অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম বলেন, ইংরেজি প্রথম পত্রে মেধাবী শিক্ষার্থীরা অস্বাভাবিক কম নম্বর পাওয়ায় বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য বোর্ডকে অনুরোধ করেছেন তিনি।
যদিও বোর্ডের আইনানুযায়ী, খাতা পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ নেই। পুনর্নিরীক্ষার সুযোগ আছে। এর মানে হলো, উত্তরপত্রের নম্বরে যোগ-বিয়োগে ভুল থাকলে সেটা ঠিক করা যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৯
ইএস/এএ