রোববার (৬ অক্টোবর) রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য ছিল। তবে এদিন মামলার একমাত্র আসামি ওবায়দুল হককে আদালতে হাজির না করায় ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ রায়ের জন্য নতুন এ দিন ধার্য করেন।
মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহমেদ বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আদালত পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পূজার নিরাপত্তাজনিত কারণে কাশিমপুর কারাগার থেকে কোনো আসামি রোববার ও সোমবার নিম্ন আদালতে হাজির করা হবে না। তাই রিশা হত্যা মামলার আসামি ওবায়দুলকে আদালতে হাজির করা হয়নি।
এ মামলার বিচার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে গত ১১ সেপ্টেম্বর। ওইদিনই ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ রায়ের জন্য ৬ অক্টোবর দিন ধার্য করেছিলেন।
পুরান ঢাকার সিদ্দিক বাজারের ব্যবসায়ী রমজান হোসেনের ১৪ বছর বয়সী মেয়ে রিশা ঢাকার কাকরাইলের উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়তো। ২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট দুপুরে স্কুলের সামনে ফুটব্রিজে তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। চারদিন পর হাসপাতালে মারা যায় সে।
হামলার দিনই রিশার মা তানিয়া বেগম রমনা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারায় এবং দণ্ডবিধির ৩২৪/৩২৬/৩০৭ ধারায় হত্যাচেষ্টা ও গুরুতর আঘাতের অভিযোগে মামলা করেন। রিশা মারা যাওয়ার পর এটি হত্যা মামলায় পরিণত হয়। মামলার একমাত্র আসামি ওবায়দুল দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের মীরাটঙ্গী গ্রামের আবদুস সামাদের ছেলে। তিনি রাজধানীর ইস্টার্ন মল্লিকা শপিংমলে বৈশাখী টেইলার্স নামে একটি দর্জির দোকানের কর্মচারী ছিলেন।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, ঘটনার পাঁচ-ছয় মাস আগে রিশা ও তার মা তানিয়া ইস্টার্ন মল্লিকা মার্কেটে বৈশাখী টেইলার্সে কাপড় সেলাই করাতে যান। এসময় তার মা ওই দোকানের রসিদের রিসিভ কপিতে ফোন নম্বর দিয়ে আসেন। ওই টেইলার্সের কর্মচারী ওবায়দুল রিসিভ কপি থেকে ফোন নম্বর নিয়ে রিশাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বিরক্ত করতেন। রিশার মা এ বিষয়ে ওবায়দুলকে সতর্ক করেন।
২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট রিশা ও তার বন্ধু মুনতারিফ রহমান রাফি পরীক্ষা শেষে কাকরাইল ওভারব্রিজ পার হওয়ার সময় ওবায়দুল রিশাকে আবারও প্রেমের প্রস্তাব দেন। রিশা তা প্রত্যাখ্যান করলে ওবায়দুল তাকে ছুরিকাঘাত করেন। হত্যাকাণ্ডের পর রিশার সহপাঠীদের বিক্ষোভের মধ্যে ৩১ অগাস্ট নীলফামারীর ডোমার থেকে গ্রেফতার করা হয় ওবায়দুলকে।
মামলার তদন্ত শেষে রমনা থানার পরিদর্শক আলী হোসেন ২০১৬ সালের ১৪ নভেম্বর ওবায়দুলকে একমাত্র আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। এতে রিশার চার সহপাঠীসহ ২৬ জনকে সাক্ষী করা হয়।
২০১৭ সালের ১৭ এপ্রিল আদালত অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে আসামি ওবায়দুলের বিচার শুরুর আদেশ দেন। বাদীপক্ষের ২৬ সাক্ষীর মধ্যে ২১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করে গত ১১ সেপ্টেম্বর এই মামলার বিচার কাজ শেষ হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০১৯
কেআই/এএ