ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ঔষধ প্রশাসনের চাকরিতে সেই ২ কর্মকর্তার নিষেধাজ্ঞা বহাল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৯
ঔষধ প্রশাসনের চাকরিতে সেই ২ কর্মকর্তার নিষেধাজ্ঞা বহাল

ঢাকা: রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে ২৮ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় অদক্ষতা ও অযোগ্যতার কারণে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক শফিকুল ইসলাম ও আলতাফ হোসেনের ফের ঔষধ প্রশাসনে চাকরির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।

রোববার (১৩ অক্টোবর) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে ওই দুই কর্মকর্তার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সত্য রঞ্জন মন্ডল।

বাদীপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনিজল মোরসেদ।

পরে সত্য রঞ্জন মন্ডল বলেন, হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আবেদনের পর চেম্বার জজ আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন। চেম্বার জজের আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আবেদন করেন মনজিল মোরসেদ। যেটি রোববার অ্যালাউ করেন আপিল বিভাগ। ফলে ওই দুই কর্মকর্তার চাকরিতে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে।
 
গত ১৮ জুলাই মনজিল মোরসেদ জানিয়েছিলেন, ২০০৯ সালে রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে সারাদেশে অনেক শিশু মারা যায়। এ ঘটনায় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মামলার বিচার শেষে ২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর পাঁচজনকে খালাস দেন বিচারিক আদালত।

ওই রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারিক আদালত বলেছিলেন, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর মামলাটি করার ক্ষেত্রে ১৯৮০ সালের ড্রাগ আইন যথাযথভাবে অনুসরণ করেনি। মামলায় যথাযথভাবে আলামত জব্দ করা, তা রাসায়নিক পরীক্ষাগারে প্রেরণ এবং রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন আসামিদের দেওয়া হয়নি। এক্ষেত্রে ড্রাগ আইনের ২৩, ২৫ ধারা প্রতিপালন করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে তৎকালীন ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক শফিকুল ইসলাম ও আলতাফ হোসেন চরম অবহেলা, অযোগ্যতা ও অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।

এদিকে বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে পরে হাইকোর্টে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওই আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন ২০১৭ সালের ০৯ মার্চ।

ওই সময় মনজিল মোরসেদ বলেছিলেন, রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে ২৮ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় আদালতের রায়ে ঔষধ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তার অদক্ষতা ও অযোগ্যতা এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে অবহেলার বিষয়টি উঠে আসার পর তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট।

এরপর স্বাস্থ্য সচিবের একটি প্রতিবেদন দেওয়া হয়। এতে বলা হয়-ওই দুই কর্মকর্তাকে সতর্ক করা হয়েছে। অথচ আদালত জানতে চেয়েছিলেন- কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ব্যবস্থা না নেওয়ায় ব্যাখ্যা দিতে স্বাস্থ্য সচিবকে ২০১৭ সালের ২৩ আগস্ট তলব করেন হাইকোর্ট। পরে ওই বছরের ২৪ আগস্ট সচিব আদালতকে জানান দুই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়।  
 
চলতি বছরের ৩১ মার্চ পৃথক আদেশে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম তাদের ‘তিরস্কার’ লঘু দণ্ড দিয়ে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারসহ বিভাগীয় মামলার দায় হতে অব্যাহতি দেন।
 
মনজিল মোরসেদ আরও জানান, এরপর তারা ফের চাকরি শুরু করেন। এর বিরুদ্ধে আবেদনের পর ১৮ জুলাই  হাইকোর্ট ৩১ মার্চের মন্ত্রণালয়ের জারি করা আদেশ কেন অবৈধ এবং আইনগত কর্তৃত্ব বর্হিভূত ঘোষণা করা হবে তা ২ সপ্তাহের মধ্যে জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন। এছাড়া অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে ঔষধ প্রশাসনে তাদের চাকরির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন।  তবে স্বাস্থ্য সচিব ও ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক যদি তাদের অন্য কোনো দপ্তরে পদায়ন করার প্রয়োজন মনে করেন তাহলে তা করতে বাধা নেই।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩ , ২০১৯
ইএস/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।