ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

শেষ কর্মদিবসে যা বললেন বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১, ২০২২
শেষ কর্মদিবসে যা বললেন বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ

ঢাকা: বিচার বিভাগের স্বাধীনতা কাগজে-কলমে নিরঙ্কুশভাবে বাস্তবায়ন হলেও একজন বিচারক যদি তার মননে, চলনে, বিশ্বাসে নিজেকে স্বাধীন মনে না করেন তবে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সুদূর পরাহত।  

৪১ বছরের বিচারিক জীবনের শেষ কর্মদিবসে বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) বিদায়ী সংবর্ধনায় এমন মন্তব্য করেছেন আপিল বিভাগের বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ।

 

আগামী ৯ অক্টোবর অবসরে যাচ্ছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একমাত্র নারী বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ।

ওইদিন সুপ্রিম কোর্টের অবকাশ থাকায় বৃহস্পতিবার বিচারিক কর্ম জীবনের শেষ দিনে তাকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া হয়।  

তার আগে আরও দুজন নারী বিচারপতি আপিল বিভাগ থেকে অবসর নিয়েছেন। তারা হলেন- দেশের প্রথম নারী বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা ও দ্বিতীয় বিচারপতি জিনাত আরা।

বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথকে এদিন আপিল বিভাগের এক নম্বর বিচারকক্ষে সংবর্ধনা দেয় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ও অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস।

অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের পক্ষ থেকে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষে সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকির বক্তব্য দেন। এরপর সংবর্ধনার জবাবে বক্তব্য দেন বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ।

বক্তব্যে বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ বলেন, আমার এ ৪১ বছরের বিচারিক জীবনে এ বিশ্বাসে আমি উপনীত হয়েছি যে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা কাগজে-কলমে নিরঙ্কুশভাবে বাস্তবায়ন হলেও একজন বিচারক যদি তার মননে, চলনে, বিশ্বাসে নিজেকে স্বাধীন মনে না করেন তবে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সুদূর পরাহত।  

তিনি বলেন, আজকের এ শেষ দিনে এ আশা নিয়েই বিচারাঙ্গন থেকে বিদায় নিতে চাই যে, একজন বিচারক বিচারকাজে সম্পূর্ণ স্বাধীন এ মূলমন্ত্র ধারণ করেই বিচারকাজ সম্পন্ন করবেন আর আপনারা অর্থাৎ বিজ্ঞ আইনজীবীরা সে কাজে সহযোগিতা করবেন এ প্রতিষ্ঠানের স্বার্থেই।

কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার পুড্ডায় দীনেশ চন্দ্র দেবনাথের গ্রামের বাড়ি। তবে বাবার কর্মস্থল রাজবাড়ী মুনসেফ কোয়ার্টারে ১৯৫৫ সালের ১০ অক্টোবর জন্ম নেন কৃষ্ণা দেবনাথ। ১৯৭০ সালে সিলেট গার্লস স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন (মাধ্যমিক) পাস করেন তিনি। রংপুর বেগম রোকেয়া কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাস করেন। পরে রাজশাহী জেলা আইন সমিতিতে আইন পেশা শুরু করেন। এরপর ১৯৮১ সালের ৮ ডিসেম্বর জুডিসিয়াল সার্ভিসে মুনসেফ (সহকারী জজ) হিসেবে নিয়োগ পান কৃষ্ণা দেবনাথ। ১৯৯৮ সালের ১ নভেম্বর জেলা জজ হিসেবে পদোন্নতি পান তিনি।  

২০১০ সালের ১০ জানুয়ারি ঢাকার জেলা জজ হিসেবে দায়িত্ব পান বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ। তিনি ঢাকা জেলার প্রথম নারী জেলা জজ। পরে ২০১০ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। দুই বছর পর তিনি স্থায়ী হন। এরপর চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০২২
ইএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।