ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

হাইকোর্টে মৃত্যুদণ্ডের ৩ মামলার রায় রোববার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০২২
হাইকোর্টে মৃত্যুদণ্ডের ৩ মামলার রায় রোববার

ঢাকা: কুষ্টিয়ার এক ছাত্রী, নারায়ণগঞ্জের এক ব্যবসায়ী ও কুমিল্লার এক রেস্টুরেন্টকর্মী হত্যার ঘটনায় আসামিদের আপিল ও মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদন প্রশ্নে আগামী রোববার (২ অক্টোবর) রায় ঘোষণা করবেন হাইকোর্ট।

হাইকোর্টের পৃথক তিনটি বেঞ্চে এ রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য রয়েছে।

২০০৭ সালে কুমিল্লার জহির হত্যা
২০০৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে জহির মিয়াকে স্যালাইনের সঙ্গে বিষাক্ত ওষুধ মিশিয়ে ইনজেকশনের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করিয়ে মুখে কস্টেপ ও বালিশ দিয়ে চেপে হত্যা করা হয়। এরপর জহির মিয়ার বড় ভাই বাদী হয়ে মৃত জহির মিয়ার স্ত্রী শিরিন আক্তারসহ অজ্ঞাত ২/৩ জনকে আসামি করে কুমিল্লা আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

পরে আদালতের নির্দেশে কবর থেকে জহিরের মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়। তদন্ত শেষে জহির মিয়ার স্ত্রী শিরিন আক্তার ও শিরিন আক্তারের কথিত প্রেমিক দুলাল চন্দ্র ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ।

বিচার শেষে ২০১৭ সালের ২১ মার্চ কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক এম আলী আহমেদ দুজনকে মৃত্যুদণ্ড দেন।

মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্তরা হলেন- মৃত জহির মিয়ার স্ত্রী একই জেলার বুড়িচং উপজেলার ভারেল্লা গ্রামের রওশন আলীর মেয়ে শিরিন আক্তার ও শিরিন আক্তারের কথিত পরকীয়া প্রেমিক নগরীর ঝাঁকুনীপাড়া এলাকার মৃত কুমোদ চন্দ্র ভট্টাচার্যের ছেলে দুলাল চন্দ্র ভট্টাচার্য।

পরে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি আসামিরা আপিল করেন।    

এ ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর গত সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) শুনানি শেষে বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি কে এম ইমরুল কায়েশের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ের জন্য আগামী ২ অক্টোবর দিন ঠিক করেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান জামান। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. জাহেদুল আলম।    
 
২০১৩ সালে কুষ্টিয়ায় শিক্ষার্থী স্নিগ্ধা হত্যা
২০১৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৩টার দিকে স্বামী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিহাব উদ্দিন শিশিরের হাতে খুন হন কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের অনার্সের ছাত্রী স্নিগ্ধা আক্তার রিমি (২০)। এ ঘটনার পরদিন স্নিগ্ধার খালাতো ভাই আবদুল্লাহ আল মামুন মিরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার বিচার শেষে ২০১৭ সালের ২০ মার্চ কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক রেজা মহম্মদ আলমগীর হাসান এ রায় দেন। রায়ে শিশিরকে মৃত্যুদণ্ড দেন। তবে শিশির পলাতক রয়েছেন।

পরে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। ওই ডেথ রেফারেন্সের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ের জন্য আগামী ২ অক্টোবর দিন রাখেন।

আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী বুলবুল রাবেয়া বানু।

রিমি কুষ্টিয়া শহরতলীর চৌড়হাস ফুলতলা এলাকার মো. আব্দুল খালেকের মেয়ে। আসামি শিহাব মিরপুর উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়নের চুনিয়াপাড়া গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে

২০০৭ সালে সোনারগাঁর মনির হত্যা
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় আলোচিত মনির হোসেন হত্যা মামলায় ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে।

গত সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ের জন্য আগামী ২ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম এম জি সারোয়ার পায়েল।

আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ও এস এম শাহজাহান। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী ফরিদ উদ্দিন, মো. আব্দুস সালাম, আহসানুল কাইয়ুম ও মিজানুর রশিদ।

সবজি ব্যবসায়ী নিহত মনির হোসেন সোনারগাঁ উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের মুসারচর গ্রামের আক্কাস আলীর ছেলে। পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে ২০০৭ সালের ১৮ জুন রাতে আসামিরা মনিরকে ডেকে নিয়ে একটি মাঠে ছুরিকাঘাত করে পার্শ্ববর্তী ডোবায় ফেলে দেয়। এরপর কচুরিপানা দিয়ে মরদেহ ঢেকে রাখেন।

এ ঘটনার বিচার শেষে ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ নারায়ণগঞ্জ দ্বিতীয় জেলা ও দায়রা জজ কামরুন্নাহার চারজনের মৃত্যুদণ্ড ও দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- আতাউল হামিদ পরাগ, আলমগীর হোসেন, এরশাদ হোসেন ভুট্টু ও রতন ইবনে মাসুদ। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- গোলজার হোসেন ও শাহীন। এদের মধ্যে আসামি শাহীন পলাতক। পরে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি আসামিরা আপিল করেন।  

গত সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) শুনানি শেষে বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ের জন্য আগামী ২ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২৩০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০২২
ইএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।