ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

অনৈতিক সম্পর্কের জেরে যুবককে হত্যা, ৫ বন্ধুর যাবজ্জীবন 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২২
অনৈতিক সম্পর্কের জেরে যুবককে হত্যা, ৫ বন্ধুর যাবজ্জীবন 

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলায় অনৈতিক সম্পর্কের জেরে মাকছুদুর রহমান নামে এক যুবককে হত্যার দায়ে পাঁচ বন্ধুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

 

বুধবার (১৯ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন। রায়ের সময় চার আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। একজন পলাতক।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- জেলার কমলনগর উপজেলা চর জাঙ্গালিয়া গ্রামের মৃত তরিক উল্যার ছেলে মো. মোবারক হোসেন (৩১), মৃত মাস্টার মহসীন ও রেবেকা মহসীনের ছেলে মো. মাহমুদুল হাসান হিরু (৩৫), মোস্তফা কামালের ছেলে আরাফাত আরেফিন (৩২), রুহুল আমিনের ছেলে মো. মানিক (৪০) ও সফিক উল্যার ছেলে মো. বাবুল হোসাইন বাবলু (২৫)। তারা সবাই একে অপরের বন্ধু।  

মামলার বাদী ভিকটিম মাকছুদের ছোট ভাই বেলাল হোসেন (২৬)। তিনি কমলনগরের চরলরেন্স গ্রামের মৃত এনায়েত উল্যার ছেলে। ২০১৬ সালের ২৯ মে গভীর রাতে মাকছুদকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে মৃতদেহ সেপটিক ট্যাংকে লুকিয়ে রাখেন হত্যাকারীরা। ঘটনার এক সপ্তাহ পর তার গলিত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।  

মামলার এজাহার ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, মাকছুদুর রহমান উপজেলার চরলরেন্স বাজারে মুক্তিযোদ্ধা ক্লাবের 'টি বয়' হিসেবে কাজ করতেন। রাতে বাজারেই থাকতেন তিনি। ঘটনার আট-নয় মাস আগে রেবেকা মহসীন নামে এক নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। বিষয়টি ওই নারীর ছেলে মাহমুদুল হাসান হিরু জানতে পেরে মাকছুদকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তিনি তার বন্ধুদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন এবং মাকছুদকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন।  

২০১৬ সালের ২৯ মে গভীর রাতে মাকছুদ চরলরেন্স বাজার পাহারা দেওয়ার সময় বাজারের সরকারি পুকুর পাড়ে যান। ওই সময় সেখানে আগে থেকে ওত পেতে থাকা হিরু ও তার বন্ধুরা মাকছুদের মাথায় আঘাত করেন। পরে তারা গলায় দড়ি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন তাকে। এরপর পরনের পোশাক খুলে নিয়ে তার মৃতদেহ লরেন্স বাজারের পাশের একটি সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেন তারা। এ ঘটনায় করা মামলাটি তদন্ত শেষে পুলিশ মো. শরীফ হোসেনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। তবে মামলাটি বিচারাধীন থাকার সময় মো. শরীফ হোসেনের মৃত্যু হওয়ায় তার নাম মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়।  

কমলনগর থানার তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন মামলাটি তদন্ত করে
২০১৭ সালের ৩১ জুলাই অভিযোগপত্রটি দাখিল করেন।  

গ্রেফতারের পর আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এছাড়া সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে 
অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় বুধবার এ রায় দেন আদালত।  

জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।