কিডনি শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। আমাদের কিডনিতে মোট ২০ থেকে ২৫ লাখ ছাকনি রয়েছে, যা শরীরের রক্তকে পরিশোধন করে।
কিডনির প্রধান কাজ হলো শরীর থেকে সব বর্জ্য বের করে দেওয়া, শরীরে পানি ও মৌলিক পদার্থের ভারসাম্য রক্ষা, ভিটামিন ডি ও আমিষের বিপাক ঘটানো ইত্যাদি।
তবে সঠিক নিয়ম মেনে না চললে ও খাদ্যাভ্যাস যথাযথ না হলে, এমনকি ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের প্রভাবেও কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কিছু খাবার আপনার খাদ্যতালিকায় রেখে সহজেই কিডনিকে সুস্থ রাখতে পারেন।
তবে চলুন কিডনি ভালো রাখে এমন কিছু খাবার সম্পর্কে জেনে নিই।
রসুন
প্রদাহ ও কোলেস্টেরল কমাতে রসুনের জুড়ি নেই। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ রসুন শরীরের বিষ তাড়াতে সহায়তা করে এবং এর মধ্যকার অ্যান্টি-ক্লটিং প্রপার্টিজ রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না। তবে রান্না করা রসুনে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের মাত্রা ঠিক থাকলেও অ্যান্টি-ক্লটিং ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানের মাত্রা কমে যায়। প্রতিদিন দুই থেকে তিন কোয়া কাঁচা রসুন খেলে কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায় প্রায় ৩০ শতাংশ।
পেঁয়াজ
ফ্লেভোনয়েড সমৃদ্ধ পেঁয়াজ রক্তনালী থেকে চর্বিযুক্ত উপাদান অপসারণ করে ও রক্তের রঙ ঠিক রাখে। এছাড়াও এতে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা হৃদরোগ প্রতিরোধ করে। প্রদাহনাশক ও কম পটাশিয়াম যুক্ত পেঁয়াজ কিডনির পাথর এবং ব্লাডারের ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
আপেল
বিশেষজ্ঞরা বলেন, যারা রোজ একটি করে আপেল খান তাদের ডাক্তারের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। উচ্চমানের ফাইবার ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান সমৃদ্ধ আপেল ফল হিসেবে কিডনির জন্য সবচেয়ে উপাকারী বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
স্ট্রবেরি
স্ট্রবেরিতে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি, ম্যাঙ্গানিজ ও ফাইবার। যা কিডনির পক্ষে সহায়ক। এছাড়াও এতে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি-ক্যান্সার প্রপার্টিজ যা হৃৎপিণ্ডকে রাখে সুস্থ।
চেরি
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ফাইটোকেমিকেলস সমৃদ্ধ চেরি কিডনি রোগের ভালো পথ্য। প্রদাহনাশক হিসেবেও চেরির জুড়ি নেই।
লাল আঙুর
আঙুরে রয়েছে ইউরিক এসিড যা প্রদাহনাশক ও কিডনির ওপর চাপ কমায়। প্রতিদিন এক কাপ আঙুরের রস খেলে কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে অনেকাংশে।
ডিমের সাদা অংশ
ডিমের সাদা অংশে রয়েছে উচ্চমানের প্রোটিন ও প্রয়োজনীয় অ্যামিনো এসিড যা কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমায়। অন্যান্য প্রোটিন জাতীয় খাবারের তুলনায় এতে ফসফরাসের মাত্রা কম বলে এটি কিডনির পক্ষে সহায়ক খাদ্য।
মাছ
মাছে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ফ্যাট ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় মাছ রেখে সহজেই এড়াতে পারেন কিডনির সমস্যা। বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছ যেমন স্যালমন ও টুনাতে রয়েছে প্রচুর ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড।
অলিভ অয়েল
অলিভ অয়েলে রয়েছে অলিক এসিড, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ফ্যাটি এসিড যা অক্সিডেশন প্রতিরোধ করে। অক্সিডেশন একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া যা শক্তি উৎপাদনের জন্য শরীরে বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটায় এবং ডিএনএ ও কোষের নানাবিধ ক্ষতি করে। এছাড়াও এতে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও পলিফেনল, যা প্রদাহ নাশ করে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৮ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০২৩
এসআইএস