ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম ছবি

বিপুল হাসান | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১০

বিদায়ী ২০১০ বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের জন্য মোটেও শুভ ছিল না। চলচ্চিত্রের দুই দশকের ইতিহাসে এ বছরই সবচেয়ে কম ছবি মুক্তি পেয়েছে।

বছরজুড়ে চলচ্চিত্রে সংকট লেগেই ছিল। নতুন ছবির সংকট, নায়ক-নায়িকা সংকট, চিত্রনাট্য ও মেধার সংকট, নির্মাণ ব্যয় বৃদ্ধি,  ক্রমাগত সিনেমা হল বন্ধ হওয়া, ভারতীয় ছবি অবমুক্ত করার পাঁয়তারা, দর্শক প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থতা সবকিছু মিলিয়ে বছরটি বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের জন্য ছিল অনেকটাই হতাশার।

সাফল্য-ব্যর্থতা
ঢালিউডে ২০১০ সালে মোট মুক্তি পেয়েছে ৫৭টি ছবি। এর মধ্যে কয়েকটি ছবি শুধু রাজধানী ঢাকার দুটি সিনেমা হল ছাড়া প্রদর্শন করা যায়নি। দেশজুড়ে মুক্তি পাওয়া ছবিগুলোর মধ্যে শতকরা ২০ ভাগ ছবি ব্যবসাসফল হয়েছে। ৩০ ভাগ ছবি লগ্নীকৃত পুঁজি কোনও রকমে ফেরত পেয়েছে। বাকি ৫০ ভাগ ছবি মারাত্মকভাবে আর্থিক তির সম্মুখীন হয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠিত প্রযোজকই এ বছর চলচ্চিত্র থেকে নিজেদের পুঁজি গুটিয়ে নিয়েছেন। প্রযোজক-পরিবেশক সমিতি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

২০১০ সালে চলচ্চিত্র শিল্পের ভিডিও পাইরেসি বন্ধে সাফল্য আসে। ভিডিও পাইরেসি চক্রের মূল হোতা বিপ্লব, পোস্টার মিলন, খুলনা মিলন ও বিডিআর শাজাহানকে আটক করা হয়। এতে ভিডিও পাইরেসি রোধ করা গেলেও মূলধারার বাণিজ্যিক ছবির মান ক্রমশ নিম্নমুখী হওয়ায় দর্শকদের সিনেমা হলে আকর্ষণ করা সম্ভব হয়নি। বৈচিত্র্যহীন বিষয়, খাপছাড়া গল্প, নির্মাণে অদতা, বার বার একই মুখ দর্শকদের বিনোদনের খোরাক জোগাতে পারেনি। বরং অনেক দর্শকই বিরক্ত হয়ে সিনেমা হলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।

অনেক সংকটের মধ্যেও এ বছর কয়েকটি ভালো মানের ছবি নির্মিত হয়েছে, যা বাংলাদেশের মৃতপ্রায় চলচ্চিত্রকে কিছুটা হলেও নতুন আশার আলো দেখিয়েছে। এসব ছবির মধ্যে রয়েছে ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ‘মনের মানুষ’ ও ‘গহীনে শব্দ’, আমজাদ হোসেনের ‘গোলাপী এখন বিলাতে’, মনোয়ার হোসেন ডিপজলের ‘আমার স্বপ্ন আমার সংসার’, জাকির হোসেন রাজুর ‘ভালবাসলেও ঘর বাঁধা যায় না’, খিজির হায়াত খানের  ‘জাগো’, এমএ জলিল অনন্তের ‘খোঁজ দ্য সার্চ’ প্রভৃতি।

নায়ক-নায়িকাদের অবস্থান
ঢালিউডে এবারও একচেটিয়া রাজত্ব করেছেন শাকিব খান। তার পাশে সর্বাধিক ছবিতে নায়িকা হিসেবে ছিলেন অপু বিশ্বাস। এ বছর শাকিব খান অভিনীত ১৮টি এবং অপু বিশ্বাস অভিনীত ১৫টি ছবি মুক্তি পায়। নায়কদের মধ্যে নয়টি ছবি নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন কাজী মারুফ। ৫ ছবি নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন ডিপজল। অপু বিশ্বাসের পর নায়িকাদের মধ্যে নয়টি ছবি নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন রেসী। আট ছবি নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন পূর্ণিমা। অন্য নায়কদের মধ্যে আমিন খান অভিনীত চারটি,  ইমন অভিনীত চারটি, ফেরদৌস অভিনীত তিনটি এবং মান্না, সম্রাট এবং নীরব অভিনীত দুটি করে ছবি মুক্তি পায়। অন্য নায়িকাদের মধ্যে সাহারা অভিনীত সাতটি, রুমানা অভিনীত পাঁচটি, শাবনূর অভিনীত চারটি এবং পপি, নিপুণ ও শাকিবা অভিনীত তিনটি করে ছবি মুক্তি পায়।

অভিনয়-জীবনের ইতিহাসে এবারই সবচে কম ছবি মুক্তির রেকর্ড গড়েছেন ঢালিউডের তিন তারকা রুবেল, মৌসুমী ও রিয়াজ। ২০১০ সালে রুবেল ও মৌসুমী অভিনীত একটি করে এবং রিয়াজ অভিনীত দুটি ছবি মুক্তি পায়। ২০১০ সালে বেশ কজন ভারতীয় শিল্পীর ছবি দেখার সুযোগ পেয়েছে দর্শকেরা। মিঠুন চক্রবর্তী, প্রসেনজিৎ এবং পাওলি ধামের পর্দা উপস্থিতি দর্শকদের একঘেয়েমি দূর করতে কিছুটা হলেও সহায়তা করে।

নতুন নায়ক-নায়িকা
২০১০ সালে ঢালিউডে অনেক নতুন নায়ক-নায়িকার অভিষেক হলেও কেউই সেরকম আশা জাগাতে পারেননি। দর্শকদের মনে স্থায়ী আসন গড়ে তোলার মতো সফল কোনও নতুন মুখ পাওয়া যায়নি। ২১ জন নতুন নায়ক-নায়িকা এবার যুক্ত হয়েছে চলচ্চিত্রে। তারা হলেন অনন্ত, বর্ষা, ববি  (খোঁজ দ্য সার্চ), আরেফিন শুভ, নাদিম, রওনক হাসান (জাগো),কুসুম সিকদার (গহীনে শব্দ), বাঁধন ও সজল (নিঝুম অরণ্যে), শখ ও তমা মির্জা (বলো না তুমি আমার), মিমো ও জয় (এক জবান), মিতালী ও শায়ের খান (অরুণ শান্তি), সানাই (তুমি ছাড়া বাঁচি না), প্রিয়াংকা (অবুঝ বউ), আবির খান (বাপ বড় না শ্বশুর বড়), নজরুল (নাগনাগিণীর স্বপ্ন), তাথৈ (মনের মানুষ) এবং এসডি রুবেল (এভাবেই ভালবাসা হয়)।

ব্যবসাসফল ১০ ছবি
১. আমার স্বপ্ন আমার সংসার
২. নাম্বার ওয়ান শাকিব খান
৩. রিকশাওয়ালার ছেলে
৪. মায়ের চোখ
৫. হায় প্রেম হায় ভালবাসা
৬. পাঁচ টাকার প্রেম
৭. ভালবাসলেই ঘর বাঁধা যায় না
৮. জীবন মরণের সাথী
. বড় লোকের ১০ দিন গরিবের ১ দিন
১০.বস্তির ছেলে কোটিপতি।

বছরের আলোচিত ৫ ছবি
১.  মনের মানুষ
. গহীনে শব্দ
৩. খোঁজ দ্য সার্চ
৪. গোলাপী এখন বিলাতে
৫. জাগো।

বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ২০৩০, ডিসেম্বর ২৮, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।