ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

বরেণ্য রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সুচিত্রা মিত্র আর নেই

রক্তিম দাশ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, কলকাতা | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০১১

প্রখ্যাত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সূচিত্রা মিত্র আর নেই। ৩ জানুয়ারি সোমবার দুপুরে কলকাতার গড়িয়াহাটের নিজ বাড়িতে উপমহাদেশের এই অগ্রগণ্য রবীন্দ্রসঙ্গীতশিল্পীর জীবনাবসান হয়।

তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।

অসুস্থ থাকায় দীর্ঘ ৬ মাস তিনি গান গাইতে পারেননি।

সুচিত্রা মিত্র ১৯২৪ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন।

স্কটিশ চার্চ কলেজে থেকে পড়াশুনা করার জন্য বিশ্বভারতীতে যান। কবিগুরুর কাছে গান শিখলেও তার প্রকৃত শিক্ষাগুরু ছিলেন রবীন্দ্রসঙ্গীতের আরেক দিকপাল শিল্পী পঙ্কজ কুমার মল্লিক। ১৯৪১ সাল থেকে রবীন্দ্রসঙ্গীত গাওয়া শুরু বিশ্বভারতীর সঙ্গীত ভবনের স্কলারশিপ পেয়ে।

১৯৭৩ সালে ভারত সরকার তাকে পদ্মশ্রী সম্মাননা দেয়। ১৯৮৬ সালে সঙ্গীত নাটক আকাদেমি, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আলাউদ্দিন পুরস্কার, বিশ্বভারতীর দেশিকত্তোমসহ দেশে বিদেশে বহু সম্মানে ভূষিত হয়েছেন তিনি।

দীর্ঘ দিন ধরে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে সঙ্গীত বিভাগের প্রধান ছিলেন। রবীন্দ্র নৃত্যনাট্যেও তিনি সমান দক্ষ ছিলেন। ১৯৯৮ সালে ঋতুপর্ণ ঘোষ পরিচালিত সিনেমা ‘দহন’-এ তিনি অভিনয় করেছিলেন। ১৯৯৩ সালে পরিচালক রাজা সেন তাকে প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করেন। রবীন্দ্রভারতী, যাদবপুর ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সাম্মানিক ডিলিট দেয়।

 ২০০১ সালে তিনি কলকাতা শহরের শেরিফ নিযুক্ত হন।

প্রবাদপ্রতিম এই শিল্পীর ৪৫০ টি রবীন্দ্র সঙ্গীতের রেকর্ড আছে। রবীন্দ্রসঙ্গীতের গায়কীর ক্ষেত্রে তাকেই আইকন বলতেন সমলোচকরা।

তার মৃত্যু সংবাদে কলকাতার সাংস্কৃতিক মহলে শোকের ছায়া নেমে আসে। তার অনুরাগী ও বিশিষ্টজনেরা তার বাসভবনে গিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় আগামীকাল শেষকৃত্য

আগামীকাল ৪ জানুয়ারি মঙ্গলবার কলকাতায় পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শিল্পী সুচিত্রা মিত্রের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।

আজ সন্ধ্যায় তার বাসভবন থেকে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় পিস হেভেন সংরক্ষাণাগারে। সেখানে কাল সকাল পর্যন্ত মরদেহ শায়িত থাকবে।

কাল স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় পিস হেভেন থেকে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে। সেখানে মরদেহ থাকবে আধ ঘণ্টা। সেখান থেকে শোকমিছিল করে নিয়ে যাওয়া হবে কলকাতার সাংস্কৃতিক প্রাণকেন্দ্র রবীন্দ্র সদন প্রাঙ্গণে। সেখানে রাজ্য সরকারের তরফে  শ্রদ্ধা জানানো হবে। মরদেহ রাখা হবে দুই ঘণ্টা।

তারপর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে তার প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান রবিতীর্থে। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হবে কলকাতার কেওড়াতলা মহাশশ্মানে। সেখানেই সুচিত্রা মিত্রের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।

বাংলাদেশ সময় ২১৪০, ৩ জানুয়ারি, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।