ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

কাজলের বয়স ৫৬ বছর !

অনন্যা আশরাফ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ৬, ২০১১

বলিউডের গ্ল্যামার ভুবনে একজন অভিনেত্রী কী শুধু অভিনয় দিয়ে শীর্ষে পৌঁছাতে পারে? সবাই না পারলেও কেউ কেউ পারেন।   কাজল-ই তার অন্যতম প্রমাণ।

গত ০৫ আগস্ট ছিল কাজলের ৩৬ তম জন্মদিন। স্বামী অজয় দেবগন আর দুই সন্তানের সঙ্গে কাছের মানুষদের নিয়ে ঘরোয়াভাবেই দিনটি পালন করেছেন কাজল।   একই সঙ্গে কাজল পূর্ণ করেছেন বলিউডে পথ চলার ২০ বছর। তাই মজা করে কাজল অনেককেই বলছিলেন, তিনি (৩৬+২০) ৫৬ বছর পূর্ণ করেছেন।

বলিউডের স্বতস্ফুর্ত ও প্রতিভাময়ী অভিনেত্রী কাজল। শুধু অসাধারণ অভিনয় দিয়ে তিনি জয় করে নিয়েছেন লাখ লাখ দর্শকের হৃদয়। বাঙালি  বংশোদ্ভূত কাজল মুখার্জি ১৯৭৪ সালের ৫ আগষ্ট মুম্বাইতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা সমু মুখার্জি ছিলেন চলচ্চিত্র প্রযোজক। মা তনুজা মুখার্জি ছিলেন অভিনেত্রী।

১৯৯৯ সালের ০৪ ফেব্রুয়ারিতে কাজল বলিউডের আরেক নামি অভিনেতা অজয় দেবগনের সঙ্গে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর কাজল মুখার্জি থেকে কাজল দেবগন নামে তিনি পরিচিত। বর্তমানে এ দম্পতির দুই সন্তান, মেয়ে ৮ বছর বয়সী নিশা এবং ছেলে দেড় বছর বয়সী যোগ।

বলিউডের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে ২০ বছর অতিক্রম করেছেন কাজল। সব বয়সী সব শ্রেণীর দর্শকের কাছেই বেশ জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী। নতুন নতুন চরিত্রে নিজেকে উপস্থাপন করেছেন তিনি সম্পুর্ণ নিজস্ব ভঙ্গিমায়। বিভিন্ন ছবিতে কাজলের অভিনীত অনেক চরিত্রই পেয়েছে তুমুল জনপ্রিয়তা। সেখান থেকে কয়েকটি চলচ্চিত্রের কথা উল্লেখ করা হলো

১৯৯২ সালে ‘বেখুদি’ ছবিটি দিয়ে কাজল প্রথম ফিল্মে পা রাখেন। তার ১৬ তম জন্মদিনে ছবিটির শুটিং শুরু হয়। তবে এ ছবিটি কাজলকে খুব একটা পরিচিতি এনে দিতে পারে নি।

কাজল পরিচিতি পান ১৯৯৩ সালের ‘বাজিগর’ ছবিটি মাধ্যমে। সুপার হিট হওয়া এই ছবিটিতে তিনি অভিনয় করেছিলেন শাহরুখের বিপরীতে। ছবিটির জনপ্রিয়তা দুজনের ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে ধরা হয়।

১৯৯৪ সালে মুক্তি পাওয়া ছবি ‘ইয়ে দিল্লাগী’। এটি একটি আকর্ষনীয় ত্রিভুজ প্রেমের কাহিনী নিয়ে নির্মিত। এই ছবিতে কাজল অভিনয় করেছিলেন সাঈফ আলী খান এবং অক্ষয় কুমারের বিপরীতে।

১৯৯৪ সালে ‘উধার কি জিন্দেগি’ ছবিটিতে একজন পূর্ণবয়স্ক এবং সংযত নারীর চরিত্রে অভিনয় করে কাজল অসংখ্য দর্শকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ছবিটির মাধ্যমে তিনি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের অভিনয়-ক্ষমতা দর্শকদের এবং পরিচালকদের কাছে প্রমান করেন।

১৯৯৫ সালে ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে ’ কাজল-শাহরুখ জুটির আরেকটি সুপারহিট ছবি। ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর বলিউডে প্রেমের বন্যা বয়ে যায়। দর্শকদের কাছে এই জুটি এতটাই জনপ্রিয় হয় যে তাদেরকে ‘বেষ্ট অন স্ক্রিন কাপল’ হিসেবে এখনও আখ্যায়িত করা হয়। ছবিটিতে অভিনীত ‘সিমরান’ চরিত্রটি কাজলের কাছে সবচেয়ে প্রিয়।

১৯৯৭ সালে ‘গুপ্ত’ ছবিটি কাজলের ক্যারিয়ারে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। রহস্যময়ী খুনীর চরিত্রে অসাধারণ অভিনয় করে কাজল সেই বছর ‘বেষ্ট ভিলেন অ্যাওয়ার্ড’ জিতে নিয়েছিলেন।

১৯৯৮ সালে ‘দুশমান’ একটি নারী কেন্দ্রীক ছবিতে অভিনয় করেন কাজল। প্রতিশোধ-ধর্মী এই ছবিটি বক্স অফিসে খুব একটা ব্যবসা করতে না পারলেও কাজলের শক্তিশালী পারফরমেন্স সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ছবিটিতে তার বিপরীতে ছিলেন সঞ্জয় দত্ত।

১৯৯৮ সালে ‘পেয়ার তো হোনাহি থা’ অজয় দেবগনের সাথে কাজলের সম্পর্ক গড়ে উঠার পর প্রথম প্রেমের ছবি। বিয়ের পর কাজলকে দেখা যায় কেবলমাত্র তার স্বামী অজয়ের সাথেই একটানা বেশ কিছু ছবি করতে। ‘দিল কেয়া কারে’, ‘রাজু চাচা’, ‘ইউ মি অর হাম’ এবং ‘তনপুর কা সুপার হিরো’ নামে বেশ কিছু ছবি করে যা বক্স অফিসে তেমন সাড়া পায়নি। তাদের অন স্ক্রিন ক্যামিষ্ট্রি দর্শকদের কাছে খুব একটা জনপ্রিয় হয়নি।

১৯৯৮ সালে ‘পেয়ার কিয়া তো ডারনা কেয়া’ ছবিতে সালমান খানের বিপরীতে অভিনয় করেন কাজল। ছবিটি এক মজার প্রেমের কাহিনী নিয়ে নির্মিত। এতে কাজলের অভিনয়  ভক্তদের ভীষন ভালো লাগে।

১৯৯৮ সালে ‘কুচ কুচ হোতা হে’ ছবিটিতে বহু বছর পর আবারো কাজল-শাহরুখ জুটিকে একসঙ্গে দেখা যায় । এই ছবিতে অভিনয় করেছেন কাজল দুরন্ত মেয়ের চরিত্রে। ঘটনাচক্রে একসময় তাকে শাড়ি পরিহিত লজ্জাবনত নারীতে রূপান্তরিত হতে দেখা যায়। এ ছবিতে হৃদয়ছোঁয়া অভিনয়ের মাধ্যমে কিং খানের পাশে নিজের অবস্থানটি করে নিয়েছিলেন কাজল ।

১৯৯৯ সালে ‘হাম আপকে দিলমে রেহেতে হে’ ছবিটি কাজলের বিয়ের আগে অভিনীত শেষ ছবি। অনিল কাপুরের বিপরীতে অভিনিত এই ছবিতে কাজলের অভিনয় শক্তি এবং কঠিন পারফরমেন্স উপস্থাপন করেন যা ছবিটিকে হিট করেছিলো।

২০০১ সালে ‘কাভি খুশি কাভি গাম’ ছবিটিতে লম্বা বিরতির পর কাজলকে আবার পর্দায় দেখা যায়। ব ন্ধু করণ যোহরের পরিচালনায় শাহরুখের বিপরীতে এই ছবিতে কাজল চাদনী চকের এক চঞ্চল তরুণীর চরিত্রে অভিনয় করেন। বরাবরের মত এই জুটির ছবিটি তুমুল জনপ্রিয়তা পায়।

২০০৬ সালে ‘ফানা’ ছবির মাধ্যমে তিন বছরের দীর্ঘ বিরতির পর কাজল অন স্ক্রিনে অভিনয়ে আসেন। এ ছবিতে প্রথম বারের মত তিনি আমির খানের বিপরীতে অভিনয় করে সমালোচকদের দৃষ্টি আকর্ষন করেন। ছবিটি ব্যবসা সফল না হলেও তাদের দুজনের অভিনয়ই ছিল মনে রাখার মত।

২০১০ সালে ‘মাই নেম ইজ খান’ কাজলের অভিনীত এই পর্যন্ত মুক্তি পাওয়া সর্বশেষ ছবি। ছবিটি বক্স অফিসে তুমুল সাড়া জাগিয়েছিলো। শাহরুখের বিপরীতে আবারো করন যোহরের পরিচালনায় এক ভিন্নধর্মী প্রেমের কাহিরীতে কাজল অভিনয় করেন। সারা বিশ্বে ছবিটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়।

এই ছবিগুলো ছাড়াও আরো অনেক ছবি কাজল বলিউডকে উপহার দিয়েছেন। তবে উল্লেখিত ছবিগুলো ছিল তার ক্যারিয়ারের টানিং পয়েন্ট। এসব ছবিতে কাজলকে ভিন্নধর্মী চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গেছে। ঘর-সংসার নিয়ে ব্যস্ত কাজল এখন অভিনয়ে খুব একটা সময় না দিলেও ভক্তদের কাছে এখনো
 তার জনপ্রিয়তা রয়ে গেছে আগের মতোই অটল।

বাংলাদেশ সময় ১০১৫, আগস্ট ০৬, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।