ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

সিলেটাঞ্চলের জলে জঙ্গলে

ফরিদ ফারাবী | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৩
সিলেটাঞ্চলের জলে জঙ্গলে

নানা ব্যস্ততায় অনেকদিন থেকে সবাই মিলে কোথাও যাওয়া হয়ে উঠছিলো নাশেষবার সবাই একসাথে ট্যুরে গিয়েছিলাম রাংগামাটি, বৈশাখ মাসের বিজু উৎসবে

এবার যখন সিলেট যাওয়ার একটা পরিকল্পনা হল তখন সবাই মোটামুটি এক বাক্যেই রাজি হয়ে গেলোবর্ষাকালে পাহাড়ি অঞ্চল ভ্রমণটা একটু বেশি রোমাঞ্চকর

কেননা পাহাড়ে সবুজ দেখার এটাই শ্রেষ্ঠ সময় এছাড়া ঝর্ণাধারা দেখতে হলে তো বর্ষার বিকল্প নেইপ্রথমদিকে সবার সাড়া বেশ ভালো থাকলেও নানা ব্যস্ততায় শেষ পর্যন্ত আমাদের দল ছয় জনে গিয়ে ঠেকলোট্রেন ভ্রমণের ইচ্ছা থাকলেও টিকেট না পেয়ে শেষ পর্যন্ত বাসেই টিকেট কাটতে হল

 

নির্ধারিত দিনে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সবাই কল্যাণপুর বাস স্ট্যান্ডে একত্রিত হলাম১১টায় বাস ছাড়লোবাসে হুলস্থুল করতে করতেই আমাদের যাত্রা শুরু হল

পথিমধ্যে উজান ভাটি রেস্টুরেন্টে থামলো বাসসেখানে চা নাস্তা সেরে আবার গিয়ে বাসে উঠলামমাঝে ঘণ্টা দুয়েকের একটা ঘুম দিয়ে নিলামসকাল সাড়ে পাঁচটায় বাস সিলেট শহরে গিয়ে থামলপূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বাস থেকে নেমেই রাতারগুলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম

সিলেট শহর থেকে রাতারগুলের দূরত্ব প্রায় ২৬ কিলোমিটাররাতারগুল যাওয়ার ২ টা পথের একটা হল জাফলংয়ের বাসে উঠে সারিঘাট হয়ে যাওয়াআমরা সে পথেই রওয়ানা হলামসিলেট শহর ছাড়িয়ে জাফলং রোডে উঠতেই দুই পাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে লাগলামভোরের আকাশে দূরের পাহাড়ঘেরা নদীর সৌন্দর্য সবাইকে বিমহিত করেছিলঘণ্টাখানেকের মধ্যেই পৌঁছে গেলাম সারি ঘাটসারি ঘাট নেমে আগে পেটপুজা সেরে নিলামসেখান থেকে সিনএনজি নিয়ে রওয়ানা হলাম গোয়াইন ঘাটপ্রায় আধা ঘণ্টার রাস্তাঘাটের কিছু দূর আগেই নামিয়ে দেয়াতে হাটতে হল কিছুক্ষণঘাটে পৌছতেই প্রায় ৯টা বেজে গেলোবনের ভেতরে ডিঙ্গি নৌকা ভ্রমণসহ ১২০০ টাকায় আপ-ডাউন রাজি করালামপ্রায় দেড় ঘণ্টা লাগলো ইঞ্জিন নৌকায় বনের কাছে আসতেসেখান থেকে ডিঙ্গি নৌকায় প্রবেশ করলাম বাংলাদেশের একমাত্র স্বীকৃত সোয়াম্প ফরেস্ট রাতারগুলের ভেতর Ratargul2

সোয়াম্প ফরেস্ট বলতে মূলত জলের উপর যেসব গাছ বেঁচে থাকে সেসব গাছ নিয়ে গড়ে ওঠা বনবনের ভেতর কোনো গাছের নিচের অংশ ডুবে আছে পানিতে আবার একটু ছোট যেগুলো, সেগুলো শরীরের অর্ধেকটাই ডুবিয়ে আছেকোথাও কোথাও মাছ ধরার জাল পেতেছে জেলেরাঘন হয়ে জন্মানো গাছপালার কারণে কেমন অন্ধকার হয়ে আছে পুরো বনটামাঝেমধ্যেই গাছের ডালপালা আটকে দিচ্ছে পথহাত দিয়ে ওগুলো সরিয়ে পথ তৈরি করে এগুচ্ছিগাছের পাতার ফাকে ফাকে মাঝে মাঝে বর্ণিল পাখির দেখা মেলে।  শুনেছি রাতারগুল হচ্ছে সাপের আখড়াবর্ষায় পানি বাড়ায় সাপেরা ঠাঁই নেয় গাছের ওপরতাই সব সময়ই সতর্ক ছিলাম গাছের ডালে ঝুলে থাকা সাপের জন্যযদিও সাপের দেখা মেলেনিআরো কয়েক দল ট্যুরিস্টের সাথে দেখা হল বনেহঠাৎ করেই আকাশ কালো হয়ে ঝুম বৃষ্টি নামলোগহীন বনে বৃষ্টির অনুভুতি ছিলো আসাধারণবনে ঘুরে বেড়ালাম প্রায় ঘণ্টা দেড়েকতারপর আবার সেই গোয়াইন নদীতে এসে উঠলাম

ইউটিউব সাবস্ক্রাইব করুন  
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।