ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

সচেতনতায় সুন্দর ত্বক: ডা. ঝুমু খান

লাইফস্টাইল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০১৬
সচেতনতায় সুন্দর ত্বক: ডা. ঝুমু খান

সৌন্দর্য সচেতন মানুষের কাছে চেহারায় বয়সের ছাপ এক অস্বস্তিকর সমস্যা। আমাদের কর্মব্যস্ত জীবনে অবিরাম ছুটে চলা, নানাবিধ দুঃচিন্তা আর মানসিক চাপ, কড়া রোদ ইত্যাদির প্রভাবে চোখের তলায় ভাঁজ, ত্বক ঝুলে যাওয়া ও বলিরেখা দেখা দেয়।

আমাদের ত্বক হয়ে যায় নির্জীব। এসবের ফলে বয়সের তুলনায় আরো বেশি বয়স্ক দেখায়। যাকে আমরা বয়সের ছাপ বা এজিং বলি।


ত্বক আমাদের শরীরের স্পর্শকাতর অংশ। তাই, ত্বকের প্রতি আমাদের সচেতন থাকা উচিত। ত্বকের যেকোনো সমস্যা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

এ বিষয়ে বিশিষ্ট ত্বক বিশেষজ্ঞ ডা. ঝুমু খান জানান, দৈনন্দিন জীবনের কিছু বদঅভ্যাস ও অসচেতনতার কারণেই বয়সের আগেই বুড়িয়ে যেতে পারে আমাদের চেহারা। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে রোদের ক্ষতিকর প্রভাবকে অবহেলা করা। ত্বকের সবচেয়ে বড় ক্ষতি করে রোদ। সারাদিন বাইরে রোদের মধ্যে থাকলে, ইউভি রশ্মি থেকে ত্বকের সেল ড্যামেজ হয়। বয়সের ছাপ বা এজিংয়ের অন্যতম কারণ এই সেল ড্যামেজ। এর ফলে ত্বকের বিভিন্ন স্তর, বিশেষ করে সাপোর্টিভ লেয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ধূমপান বয়সের ছাপের আরেকটি কারণ। যাদের ধূমপানের অভ্যাস আছে তাদের ত্বকে দ্রুত বলিরেখা পড়ে যায়। আমাদের মধ্যে অনেকেরই রয়েছে মিষ্টি জাতীয় খাবারের প্রতি বেশ দুর্বলতা। অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। এতে ত্বকে দ্রুত বলিরেখা পড়ে।

 লেজার চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ ঝুমু খান আরও বলেন, চিন্তা ছাড়া মানুষ হয় না, নূন্যতম চিন্তা সবারই থাকে। কিন্তু অতিরিক্ত মানসিক চাপ ত্বকের ক্ষতি করে। এর প্রভাবেও চেহারায় বয়সের ছাপ পড়ে অনেকের। টিনজাত বা প্রক্রিয়াজাত খাবার বেশি খেলেও চেহারায় বয়সের ছাপ পড়ে। কারণ, এসব খাবার সংরক্ষণের বিভিন্ন রকম কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় যা ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। এসব ছাড়াও রয়েছে অতিরিক্ত চুইংগাম খাওয়া, মেকআপ করার পর সেটা ঠিকমতো না তোলা, গালে ভর দিয়ে ঘুমানো, ত্বক টানা, অতিরিক্ত মদ্যপান ইত্যাদি।

ঝুমু খানের মতে,  জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাসে একটু সচেতনাই পারে এধরণের সমস্যা থেকে আমাদেরকে দূরে রাখতে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে খাদ্যাভ্যাস। তবে এটা ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ার আগেই শুরু করা উচিত। ত্বককে ভেতর থেকে স্বাস্থ্যজ্জ্বল করার জন্য  প্রয়োজন ভালো ডায়েট এবং স্বাস্থ্যকর খাবার। কিছু মিনারেল এবং ভিটামিন ভেতর থেকে সুন্দর ত্বক এনে দিতে পারে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়- ব্রকলি, ক্যাপসিকাম, স্ট্রবেরি, লেবু, কমলা, আনার, খেজুর, কাজুবাদাম, দুধ, গাজর, মিষ্টি কুমড়া, পালং শাক, মাশরুম ইত্যাদি। এসব খাদ্যে রয়েছে ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয় পাঁচটি উপাদান- ভিটামিন সি, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, বিটা ক্যারটিন ও আয়রন। এসব খাবার খাওয়ার পাশাপাশি রোদ এড়িয়ে চলতে হবে, ব্যবহার করতে হবে ছাতা। বাইরে থেকে ফিরে পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালো করে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে এবং ঘুমানোর সময় গালে ভর দিয়ে ঘুমানোর অভ্যাস থাকলে তা ত্যাগ করতে হবে। এড়িয়ে চলতে হবে ধুমপান ও মদ্যপান।

সুন্দর ত্বক পাওয়ার জন্য আমরা কত না ক্রিম ও ফেসপ্যাক ব্যবহার করি। বাজারের ক্রিম বা লোশন সাময়িকভাবে ত্বক উজ্জ্বল করে ঠিকই তবে, এগুলো থেকে দীর্ঘমেয়াদী ফল লাভ করা সম্ভব নয়। ফলে, বাজারের বিভিন্ন ধরণের ওষুধ ও প্রসাধনী ব্যবহার করেও যাদের ত্বকে ইতিমধ্যে এজিং বা বয়সের ছাপ পড়ে গেছে স্থায়ীভাবে বয়সের ছাপ দূর করতে ব্যর্থ হয়ে তারা প্রায়ই হতাশ হন।

ঝুমু খান বলেন, বয়সের ছাপ নিয়ে হতাশার কিছুই নেই। কারণ, বর্তমানে এ থেকে মুক্তিলাভ আর অসম্ভব ব্যাপার নয়। দেশেই এখন পাওয়া যাচ্ছে বয়সের ছাপ দূর করার অত্যাধুনিক সব চিকিৎসা।

লেজার মেডিকেল সেন্টারসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেগুলো ত্বকের লেজার চিকিৎসায় বেশ উন্নতি লাভ করেছে। বিস্তারিত জানতে: www.lasermedicalbd.com

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।