২০১৭ সালের ১৪ নভেম্বর রাজধানীর লালমাটিয়ার ডি-ব্লকের দুইটি ভবনে গড়ে তোলা হয় বেঙ্গল বই। মূলত বই বিক্রির বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য নিয়ে বেঙ্গল বই এর কার্যক্রম শুরু হলেও এখানে বই পড়া যায় সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।
বেঙ্গল বই-এ ঘুরে দেখা যায়, প্রায় সাত হাজার বর্গফুট আয়তনের ভবনের দোতলা ও তিনতলা জুড়ে রয়েছে দেশি-বিদেশি বই এর কালেকশন। নিচতলায় সব শ্রেণির পাঠকের জন্য আছে বই ও ম্যাগাজিন, সঙ্গে চা-নাস্তার ব্যবস্থা। দোতলায় নিভৃতে বসে বই পড়ার জন্য রয়েছে আধুনিক ক্যাফে। চাইলে বারান্দায় বসেও কফি খেতে খেতে করা যাবে গল্প; দেওয়া যাবে আড্ডা। এছাড়াও উন্মুক্ত বারান্দায় গাছে ছায়াতলে বসে বই পড়ার ব্যবস্থাও আছে এখানে। আর ছাদে রয়েছে মন জুড়ানো এক চিলেকোঠা।
ভবনের তিন তলায় করা হয়েছে শিশু কর্নার। ফ্লোরের প্রায় পুরোটা জুড়েই শিশুদের বই। বই পড়ার পাশাপাশি শিশুদের জন্য নিয়মিতভাবে গল্পবলা, আবৃত্তি, ছবি দেখা ও আঁকাআঁকির আয়োজন করে কর্তৃপক্ষ।
প্রতিষ্ঠানটির ব্র্যান্ড ও কমিউনিকেশন বিভাগের উপ ব্যবস্থাপক এ আর এম আখতার হোসেন জানান, পাঠকদের জন্য আমাদের তরফ থেকে যেসব আয়োজন আছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, দু’টি যেকোনো পুরাতন বই দিয়ে আমাদের সংগ্রহ থেকে পছন্দমতো একটি পুরনো বই নেওয়ার সুযোগ। পাশাপাশি লেখক ও পাঠকদের নিয়ে আমরা নিয়মিতভাবে প্রতিমাসে অন্তত একটি ‘আলাপে বিস্তার’ শিরোনামে মিলন মেলার আয়োজন করে থাকি।
এছাড়া সরকারি ছুটির দিনে বাগানের উঠানে বই পড়ার পাশাপাশি থাকছে সকালের নাস্তার ব্যবস্থা। লুচি, খিচুরির মতো খাবারের মাধ্যমে বাঙালি ঐতিহ্যের ছোঁয়া নিতে পারবেন অতিথিরা।
বেঙ্গল বই এ প্রতিদিন প্রায় চার থেকে পাঁচ’শ দর্শনার্থী আসেন। আর ছুটির দিন হলে পাঠক-দর্শনার্থীর সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যায়।
বেঙ্গল বই এ আসা তেমনি কয়েকজন অতিথির সাথে কথা হয় বাংলানিউজের। বই না কিনেও পড়া যায় বলে প্রায়ই এখানে আসেন বলে জানান ইডেন মহিলা কলেজের ছাত্রী ফেরদৌসি আফরিন লোপা। তিনি বলেন, অনেক সময় কিছু বই পড়তে ইচ্ছে হয় যেগুলো হয়ত চট করেই কেনা যায় না। বিশেষ করে বিদেশি লেখকদের বই। দাম বেশি হওয়ায় আমরা শিক্ষার্থীরা সহজেই এসব বই কিনতে পারি না। তাই এখানে এসে বিনামূল্যেই পড়া যায় বই।
আবার বাজে সময় নষ্ট না করে বই এর সাথে সময় কাটাতে বেঙ্গল বই এ প্রায়ই আসেন সিটি ইউনিভার্সিটির ছাত্র নূরে আলম। তিনি বলেন, ঢাকায় মেসে থাকি। আমাদের মতো ছেলেরা অবসর সময় পেলে দেখা যায় আড্ডা দিচ্ছে। কিন্তু এসব আড্ডার থেকে এখানে এসে বই পড়লে তা অনেক বেশি কাজে লাগে বলে আমার মনে হয়। তাই কিছু সময় পেলে অন্য কোথাও আড্ডা না দিয়ে এখানেই চলে আসি। মাঝে মাঝে আমার কিছু বন্ধুরাও আসে। সময় কেটে যায়।
প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকে বেঙ্গল বই।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০১৯
এসএইচএস/এসআইএস