ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

অনলাইনে ঈদ শপিং 

লাইফস্টাইল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৬ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৯
অনলাইনে ঈদ শপিং  অনলাইনে ঈদের পোশাক

ছোট ছোট চারটি বাচ্চা নিয়ে গৃহিণী মলির সংসার চালানোই কঠিন ছিল। তার স্বামী বাবুল একটা বেসরকারি চাকরি করেন। যে বেতন পেতেন তাতে ঘর ভাড়া দিয়ে মাসের ১৫ দিন মোটামুটি চললেও পরের ১৫ দিন চালাতে মলির জন্য প্রায় অসম্ভব হয়ে যাচ্ছিল। 

এমন অবস্থায় ইসলামপুরের এক কাপড়ের দোকান থেকে কিছু সস্তা কাপড় এনে স্কুলের গেটে বিক্রি করতে শুরু করেন মলি। একসময় তার কষ্টের দিন শেষ হয়, স্কুলের সামনে গিয়েও আর পোশাক বিক্রি করতে হয় না, ফেসবুকের কল্যাণে।

 

মিলি বলেন, প্রতিদিন নির্দিষ্ট একটা সময়ে ফেসবুকে লাইভে এসে তার পোশাকগুলো দেখান। লাইভ চলার সময়ই ২০-২৫টি পোশাক বিক্রির জন্য বুক হয়ে যায়। পরের দিন কুরিয়ারের লোককে ক্রেতার ঠিকানা ও নাম্বার দিয়ে পোশাকগুলো পাঠিয়ে দেন। এভাবেই চলছে তাদের কেনা-বেচা।

যারা অনলাইনে থাকেন, তারা জানেন ফেসবুকের পেজগুলোতে প্রয়োজনীয় সব পণ্যই পাওয়া যায়, এগুলোর মান ভালো, দামও বাজারের তুলনায় কম।  

শায়লা একটি ব্যাংকে চাকরি করেন, তিনি পোশাক থেকে শুরু করে কসমেটিকস, ঘরের পণ্য সবই কেনেন অনলাইন থেকে। কারণ জানতে চাইলে জানালেন, সারাদিন ব্যস্ত থাকি, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে অনেক জমানো কাজ থাকে, ঈদে অনেকের জন্য শপিং করতে হয়। সুবিধামতো কেনাকাটা করতে কোনো শপিংমলে যেতে সময় দরকার হয় অনেক বেশি। কিন্তু অনলাইনে অর্ডার করলে, তারাই পণ্য পৌঁছে দিচ্ছে, মান নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। কোনো সমস্যা হলে তারা ফিরিয়ে নিয়ে যায়।  আবার দূরে কাউকে উপহার পাঠাতে এখন আর নিজের যেতে হয় না, অনলাইনে অর্ডার করে সরাসরি তার ঠিকানায় দিয়ে পাঠানো যায়। এটাও বড় সুবিধা।  

আর একারণেই অনলাইন ব্যবসার সঙ্গে যারা জড়িত এই ঈদে তাদের ব্যস্ততাও কয়েকগুন বেড়ে ‍যায়। অনলাইনে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে পোশাক। বিশেষ করে মেয়েদের থ্রি পিস-শাড়ি। এগুলো বেশিরভাগই আবার ইন্ডিয়ান বা পাকিস্তানি। বড় বড় শপিং মলের মোটামুটি সব কালেকশনই পাওয়া যাচ্ছে অনলাইন পেজগুলোতে।  

ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর জয়েন্ট সেক্রেটারি ও ওমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরামের চেয়ারম্যান নাসিমা আক্তার নিশা বাংলানিউজকে বলেন, অনলাইন প্লাটফর্মগুলোর ব্যবহারে মানুষের জীবন অনেক সহজ হয়েছে। এখন সারা বছরই মানুষ অনলাইনে কেনাকাটা করছে। এতে করে ক্রেতার যেমন সময় ও অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে, অন্যদিকে নতুন নতুন কমসংস্থানের সুযোগ তৈরি হচ্ছে।   
 
অনলাইন কেনাকাটায় অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারা, কী প্রভাব পড়ছে দেশি ফ্যাশন হাউসগুলোতে? জানতে চাইলে সাদাকালো ফ্যাশন হাউসের কর্নধার আজহারুল হক আজাদ বলেন, এই কাজগুলোতে বেশিরভাগ সময়ই দেখা যায় নারীরা ব্যবসাগুলো চালাচ্ছেন, এটা সাধুবাদ জানাতেই হবে। তবে অনলাইনে বিদেশি পোশাক কেনাকাটা করার একটা নেতিবাচক প্রভাব দেশি হাউসগুলোর ওপরে পড়ে। অনলাইন ব্যবসা পরিচালনার জন্য একটা নীতিমালা অবশ্যই প্রয়োজন, না হলে ক্রেতাদের প্রতারিত হওয়ার সুযোগ থেকেই যায়। আর সরকারও তার প্রাপ্য রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।  
 


বাংলাদেশ সময়: ১২৩৫ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৯
এসআইএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।