শত বছর আগে নারীর স্বাধীনতা-অধিকার নিয়ে কথা বলেছেন বাঙালি নারীর মুক্তির স্বপ্নদ্রষ্টা বেগম রোকেয়া। আর আজকের দিনে এসে বাঙালি নারীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সম্পৃক্ত করতে কাজ করছেন মঞ্জুলিকা চাকমা।
রাঙ্গামাটির কারুশিল্পী মঞ্জুলিকা চাকমা বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রথম নারী উদ্যোক্তা। এবার বেগম রোকেয়া পদক পেলেন ৭৬ বছর বয়সী তাঁত বস্ত্র ব্যবসায়ী মঞ্জুলিকা চাকমা।
মাত্র দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় তার বিয়ে হয়। এরপর তিনি উচ্চ মাধ্যমিক ও বিএ পাশ করেন। মঞ্জুলিকা ১৯৬১ সালে রাঙ্গামাটি শাহ বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক তার কর্মজীবন শুরু করেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি আদিবাসী বস্ত্রশিল্পের উন্নয়নে ‘বেইন টেক্সটাইল’ নামে আদিবাসী তাঁত বস্ত্র প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। পরে শিক্ষকতা ছেড়ে পুরোপুরি ব্যবসায় মনোযোগ দেন।
১৯৮০ ও ১৯৯০-এর দশকে দু’টি কারখানা গড়ে তোলেন তিনি এসময় তার স্বামীও যুক্ত হন ব্যবসায়। মঞ্জুলিকা ১৯৬৫ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত রাঙ্গামাটি সমবায় সমিতির প্রথমে সভাপতি পরে সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়াও তিনি রাঙ্গামাটির রোটারি ক্লাবের সভাপতি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্রাফট কাউন্সিলের সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ ফ্যামিলি প্ল্যানিং অ্যাসোসিয়েশনের রাঙ্গামাটি শাখার সহ-সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচীর চট্টগ্রাম পাহাড়ি ট্রাস্ট উন্নয়ন ফ্যাসিলিটির জেলা কমিটির সদস্য, রাঙ্গামাটি চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক, চিটাগাং উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক, সমবায় ব্যাংকের পরিচালকসহ বিভিন্ন সময় পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
মঞ্জুলিকা ১৯৪৪ সালের ২৬ অক্টোবর রাঙ্গামাটিতে জন্মগ্রহণ করেন। তার জন্ম নাম মঞ্জুলিকা খীসা। কালী রতন খীসা এবং মাতা পঞ্চলতা খীসার সাত সন্তানের ভেতর মঞ্জুলিকা তৃতীয়। তার বাবা-মাও তাঁত শিল্পী ছিলেন। তার মা ‘অল পাকিস্তান উইমেনস অ্যাসোসিয়েশনের’ সদস্য ছিলেন। ছোটবেলায় পরিবার থেকে তিনি কাপড় বোনার কাজে আগ্রহী ।
আদিবাসী বস্ত্রের উন্নয়নে অবদান ও নারী উদ্যোক্তার স্বীকৃতি হিসেবে শিলু আবেদ পুরস্কার, ডেইলি স্টার-ডিএইচএল উইমেন্স অ্যান্ট্রপ্রেনিউরস অ্যাওয়ার্ড , বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট উইমেন্স ফেডারেশন সম্মাননা ও বাংলা একাডেমি ফেলোসহ বেশ কিছু সম্মানা পেয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০২০
এসআইএস