দেশজুড়ে দেখা দিয়েছে বিদ্যুৎ সংকট, যা আমাদের প্রত্যেকের দৈনন্দিন কার্যক্রমকে নানাভাবে ব্যাহত করছে। দীর্ঘক্ষণ বিদ্যুৎ না থাকার কারণে আমাদের ফ্রিজে থাকা খাবার পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে থাকে।
তবে কিছু বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করে আপনি এই ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকতে পারেন। আসুন জেনে নেয়া যাক, বিদ্যুৎ সংকটের সময় আপনার ফ্রিজে থাকা খাবার কীভাবে ভালো রাখা যায়।
রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজারে থাকা খাবার রাখার যে কিছু দিনের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যায়, এমন নয়। রেফ্রিজারেটরের খাবার ৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার কম তাপমাত্রায় ভালো থাকতে পারে, যেখানে শূন্য ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার নিচে ফ্রোজেন খাবারগুলো সংরক্ষণ করা হয়। রেফ্রিজারেটরের দরজা বারবার খোলা হলে এর ভেতরের তাপমাত্রা বেড়ে যেতে পারে। তাই বিদ্যুৎ সংকটের সময় চেষ্টা করতে হবে, রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজারের দরজা যত কম খোলা যায়। যুক্তরাষ্ট্র ডিপার্টমেন্ট অব অ্যাগ্রিকালচার (ইউএসডিএ) মতে, বিদ্যুৎ সংকটের সময় একটি বন্ধ রেফ্রিজারেটর ৪ ঘণ্টা পর্যন্ত এর তাপমাত্রা ধরে রাখতে পারে। এছাড়া, খাবারে অর্ধেক পূর্ণ একটি ফ্রিজার ২৪ ঘণ্টা ও খাবারে পুরোপুরি পূর্ণ ফ্রিজার ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত এর তাপমাত্রা ধরে রাখতে পারে। তাই বিদ্যুৎ কতক্ষণ থাকছে না তার ওপর নির্ভর করে কেবলমাত্র ফ্রিজের দরজা বন্ধ রেখেই অনেক ক্ষেত্রে খাবার আপনি ভালো রাখতে পারবেন।
একটি রেফ্রিজারেটরের তুলনায় ফ্রিজার দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত তাপমাত্রা ধরে রাখতে পারে। যদি কোনো খাবারকে দীর্ঘসময় সঠিক তাপমাত্রায় সংরক্ষিত রাখতে হয়, তাহলে সেটা রেফ্রিজারেটর থেকে সরিয়ে ফ্রিজারে রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকে ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)।
বাংলাদেশের আবহাওয়া যদিও যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে তুলনামূলকভাবে গরম, তারপরও এই পরামর্শ অনুসরণ করে যে খাবারগুলো আপনার এখনই প্রয়োজন হচ্ছে না, সেগুলো রেফ্রিজারেটর থেকে সরিয়ে ফ্রিজারে রাখার মাধ্যমে নষ্ট হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে পারবেন। এভাবে বিদ্যুৎ ছাড়াই আপনি আপনার খাবারকে দীর্ঘ সময় ধরে ভালো রাখতে পারবেন।
বর্তমানে বিদ্যুৎ না থাকলেও তাপমাত্রা প্রয়োজনীয় মাত্রায় ধরে রাখার উদ্ভাবনী ফিচারসহ মডেলের বিভিন্ন রেফ্রিজারেটর নিয়ে এসেছে বাজারের অনেক ব্র্যান্ড। এরমধ্যে ‘কুলপ্যাক’ ফিচারসহ রেফ্রিজারেটর নিয়ে এসেছে স্যামসাং, যা বিদ্যুৎবিভ্রাটে খাবার নষ্ট হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করবে। বিদ্যুৎ না থাকলে ফ্রিজার সেকশন থেকে প্রচুর পরিমাণ তাপ ভেতরে শোষণ করে নিতে পারে কুলপ্যাক ফিচার। ফলে বিদ্যুৎ ছাড়াও ফ্রিজের ভেতর খাবার দীর্ঘসময় ঠাণ্ডা থাকে। এই ফিচারের মাধ্যমে খাবার সংরক্ষিত থাকার সময় ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত বেড়ে যায়।
যেহেতু বিদ্যুৎ সংকট এখন আমাদের নিত্য সঙ্গী হয়ে গেছে, তাই রেফ্রিজারেটর যেন দীর্ঘসময় খাবার ভালো রাখতে পারে তা নিশ্চিত করাও আমাদের জন্য জরুরি। ওপরে উল্লেখিত নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করে এবং স্যামসাং, এলজি বা দেশি ওয়ালটন রেফ্রিজারেটরের কুলপ্যাকের মতো উদ্ভাবনী ফিচারসহ কোনো রেফ্রিজারেটর ব্যবহার করে এই বিদ্যুৎ সংকটকালে খাবার সংরক্ষণ নিয়ে নিশ্চিন্তে থাকতে পারবেন আপনিও।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০২২
এসআইএস