লন্ডন: বাংলাদেশকে প্রকৃতভাবে ভালোবাসতে চাইলে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুকে জানার পরামর্শ দিয়েছেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।
সোমবার লন্ডনে শুরু হওয়া তিনদিনব্যাপী বঙ্গবন্ধু বইমেলার সমাপ্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ পরামর্শ দেন।
পূর্ব লন্ডনের হোয়াইট চ্যাপেল রোডের কলেজ অব অ্যাডভান্স স্টাডিজে আয়োজিত তিনদিনব্যাপী এ বইমেলায় বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাবেশ ঘটে।
বঙ্গবন্ধু সেন্টার, লন্ডন কলেজ অব ল ও সেন্টার অব বাংলাদেশ স্টাডিজের যৌথ উদ্যোগে শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা বই নিয়ে আয়োজিত এই বইমেলা গত শনিবার উদ্বোধনও করেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী।
বঙ্গবন্ধু সেন্টারের সভাপতি আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর সভাপতিত্বে সোমবার আয়োজিত মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ব্রিটেনে বাংলাদেশের নবনিযুক্ত হাইকমিশনার আব্দুল হান্নান।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফারুক ও ইউরোপীয়ান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ গণি প্রমুখ।
সমাপনী অনুষ্ঠানের শুরুতে মেলার অন্যতম উদ্যোক্তা প্রশান্ত বড়ুয়া মেলা সফলে সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, দেশকে কীভাবে ভালোবাসতে হয়, তা জানতে হলে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনকে পরিপূর্ণভাবে জানার কোনো বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, আমরা সবাই বলি, বঙ্গবন্ধু ‘জাতির জনক’, ‘তিনি আমাদের নেতা’ ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু তাকে সম্পূর্ণভাবে আমরা জানি কজন?
আসাদুজ্জামান নূর বলেন, বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী পড়ে তাকে পরিপূর্ণভাবে জানতে পারলে প্রতিটি মানুষের মধ্যেই দেশের প্রতি, দেশের মানুষের প্রতি ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধের উন্মেষ ঘটবে, এটি নিশ্চিত করে বলা যায়।
কিংবদন্তি নাট্যব্যক্তিত্ব সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, রাজনীতি যে রাতারাতি নেতা হওয়া বা আর্থিকভাবে পরিপুষ্ট হওয়ার কোনো মাধ্যম নয়, বঙ্গবন্ধুকে বিশ্লেষণ করলে এই সত্যই বেরিয়ে আসে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের কথা শুধু বক্তৃতা বিবৃতিতে সীমাবদ্ধ না রেখে, তার স্বপ্নটি কী ছিল, তা আমাদের আগে বুঝতে হবে, জানতে হবে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে জেনেবুঝে যারা তার রাজনৈতিক দর্শনে আস্থা স্থাপন করবেন, একমাত্র তারাই পারবেন তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের আন্দোলনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে।
সংস্কৃতিমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চলমান সংগ্রামে তার সহযাত্রী হতে সবাইকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীকে সঙ্গী করেই আগ্রহীদের এই সংগ্রামে নামতে হবে।
এর আগে শনিবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংস্কৃতিমন্ত্রী শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুর বই নিয়ে আয়োজিত লন্ডনের এই মেলাকে একটি ব্যতিক্রমী অনন্য মেলা হিসেবে অভিহিত করেন। এ ধরনের মেলা বাংলাদেশেও হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী নিজে কবিতা আবৃত্তিতেও অংশ নেন। ব্রিটেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার খোন্দকার এম তালহাও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লন্ডনে আয়োজিত এই বইমেলা মূলত শুরু হয় গত বছর থেকে। গত বছর মেলাটি উদ্বোধন করেছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানা। উদ্যোক্তা সংগঠক প্রশান্ত বড়ুয়া ও মইনুল হোসেন মুকুল জানান এখন থেকে প্রতি বছরই বঙ্গবন্ধু বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে লন্ডনে। আগামীতে আরও বড় পরিসরে এটি আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে আরেক উদ্যোক্তা সংগঠক জামাল খানও এমনটি জানান বাংলানিউজকে।
উদ্যোক্তারা জানান, এবারের তিনদিনব্যাপী মেলায় বিপুল সংখ্যক বই বিক্রি হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৪