লন্ডন: রাজনীতির নামে সহিংসতার বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান জানান দিয়েছেন ব্রিটিশ এমপিরা। মঙ্গলবার (ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সামনে বাংলাদেশে বিএনপি-জামাতের সহিংসতা বিরোধী এক সর্বদলীয় মানব বন্ধনে উপস্থিত হয়ে বেশ কয়েকজন ব্রিটিশ এমপি নিজেদের এই অবস্থানের কথা জানান দেন।
স্থানীয় সময় বেলা ২টা থেকে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচির আয়োজক ছিল ব্রিটেনের কয়েকটি বাংলাদেশি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত সর্বদলীয় জোট। আওয়ামী লীগ, বাসদ, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, কমিউনিস্ট পার্টি ও উদীচীসহ সমমনা বিভিন্ন দলের সমন্বয়ে সহিংসতা বিরোধী এই জোট সম্প্রতি গঠন করা হয়।
আন্দোলনের নামে পেট্রোল বোমার চোরাগোপ্তা হামলা করে মানুষ হত্যার প্রতিবাদে আয়োজিত ওই কর্মসূচি থেকে বাংলাদেশে গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানানো হয় ব্রিটিশ সরকার ও এমপিদের প্রতি।
জোটের মুখপাত্র সৈয়দ ফারুকের পরিচালনায় মানব বন্ধন সমাবেশে জোটের দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করতে উপস্থিত ছিলেন গর্ডন ব্রিষ্টউইসেল এমপি, স্টিভ রিড এমপি, জেসিকা মর্ডেন এমপি, স্যার এলান মিয়েল এমপি, সাবেক মন্ত্রী স্টিফেন টিমস ও শ্যাডো মিনিষ্টার এঞ্জেলা স্মীথ।
এমপিরা রাজনীতির নামে সন্ত্রাস ও সহিংসতার তীব্র সমালোচনা করে বলেন, রাজনীতি ও সন্ত্রাস দু’টো আলাদা বিষয়। একটি জনসেবা অপরটি অপরাধ। রাজনৈতিক আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস ও সহিংসতা সভ্য দুনিয়ায় কখনই গ্রহনযোগ্য হতে পারেনা। যেসব রাজনৈতিক দল এগুলো সমর্থন করবে তারা তাদের গণতান্ত্রিক চরিত্রই হারাবে।
এমপিরা বাংলাদেশে গণতন্ত্র রক্ষায় সকল পক্ষের সহনশীল ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ ও গণতন্ত্র চর্চায় সব পক্ষের অধিকার নিশ্চিতে সরকারকে ভূমিকা রাখতে হবে।
তারা বলেন, আমরা আসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত দেখতে চাই।
এদিকে মঙ্গলবার জোটের পক্ষ থেকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের কাছেও হস্তান্তর করা হয় একটি স্মারকলিপি। স্মারকলিপিতে বিএনপি-জামায়াত জোটের সহিংসতার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে বলা হয়, সন্ত্রাস ও সহিংসতার মাধ্যমে এই জোটটি জোরপূর্বক একটি গণতান্ত্রিক সরকারকে ক্ষমতা থেকে টেনে নামাতে চাইছে। টানা হরতাল-অবরোধের নামে পেট্রলবোমা মেরে মানুষ হত্যার ঘটনায় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ সেক্যুলার গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ জিহাদি ইসলামিস্টদের দখলে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয় স্মারকলিপিতে।
স্মারকলিপিতে অভিযোগ করা হয়, লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে এসব ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হচ্ছে। যুক্তরাজ্যে সেইভ বাংলাদেশসহ জামায়াতে ইসলামীর কিছু অঙ্গসংগঠন বাংলাদেশ সম্পর্কে অপপ্রচার চালাচ্ছে উল্লেখ করে স্মারকলিপিতে কিছু ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য এসব সংগঠনের অপপ্রচারে কান দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করা হয় এবং আদর্শগতভাবে আল–কায়দা এবং আইএস'র ঘনিষ্ঠ এমন ইসলামিস্টদের প্ল্যাটফর্ম করে দিচ্ছেন।
চিঠিতে বিএনপি-জামায়াতসহ সেইভ বাংলাদেশের মতো সংগঠনকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে কালো তালিকাভুক্ত করার পাশাপাশি ব্রিটেনে সংগঠনগুলোর কার্যক্রম নজরদারির জন্য ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৫