লন্ডন: ব্রিটিশ অর্থনীতির সমৃদ্ধিতে বাংলাদেশিরা অন্যতম যোগানদার বলে মন্তব্য করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন।
বুধবার (১২ মার্চ) ইংল্যান্ডের মধ্যাঞ্চলীয় বাংলাদেশি অধ্যুষিত বার্মিংহামে নগরীতে দেশ ফাউন্ডেশন আয়োজিত ব্রিটিশ-বাংলাদেশি বিজনেস অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এ সময় তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের ব্রিটেনের অর্থনীতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে উল্লেখ করে তাদের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
ব্রিটেনে বাংলাদেশিদের শুরু করা রেস্টুরেন্ট শিল্প পুরো ব্রিটিশ জাতির খাদ্যাভাসই বদলে দিয়েছে। শুধু রেস্তোরাঁ সেক্টরই নয়, ব্যবসার অন্যান্য সেক্টরেও বাংলাদেশিরা সফলতার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছেন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
সম্প্রতি মাংস খাওয়া নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঐতিহ্যগতভাবেই ব্রিটেন একটি মাল্টি-কালচারাল এবং মাল্টি রিলিজিয়াস দেশ।
স্বাধীন ও নির্বিঘ্নে প্রতিটি সম্প্রদায়ের নিজ নিজ ধর্ম ও সংস্কৃতি চর্চার অধিকার রয়েছে এই সমাজে। সুতরাং ব্রিটেনে হালাল মাংস থাকবে কিনা এ নিয়ে বিতর্কের কোনো সুযোগ নেই।
মুসলিম সম্প্রদায়ের অবশ্যই হালাল মাংস খাওয়ার সুযোগ থাকবে বলেও জানান তিনি।
ব্রিটেন-বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাওয়ার্ড প্রবর্তনের প্রশংসা করে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই অ্যাওয়ার্ড নতুন নতুন ব্যবসা সেক্টরের প্রতি আগামী প্রজন্মকে আকৃষ্ট করবে। যা শুধু তাদের নিজেদের জন্যেই নয়, আমাদের অর্থনীতির জন্যেও হবে লাভজনক।
ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি কমিউনিটি ঐক্য সুদৃঢ় রাখতেও বাংলাদেশিরা যার যার অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখবেন বলে আমি আশাবাদী।
তিনি জানান, যে কোনো অপশক্তি মোকাবেলায় ঐক্যের শক্তি নিয়েই আমাদের কাজ করে যেতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, লর্ড অব উইম্বলডন তারিক আহমদ, ব্রিটেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনার আবুল হাসান ও চ্যানেল আই'র পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন দেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও বৃটিশ বাংলাদেশি বিজনেস অ্যাওয়ার্ডের প্রতিষ্ঠতা মিসবাউর রহমান, দেশ ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ নাসির ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শামীম চৌধুরী।
যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামে বুধবার প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয় বৃটিশ-বাংলাদেশি বিজনেস অ্যাওয়ার্ড। স্থানীয় সময় সন্ধা ৭টায় শুরু হওয়া বর্ণিল অনুষ্ঠান চলে রাত ১০টা পর্যন্ত।
প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন অনুষ্ঠানে ছিলেন প্রায় ৩৫ মিনিট। বক্তৃতা শেষে তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন বিবিসি'র মিডল্যান্ড টু ডে'র উপস্থাপক মাইকেল কলি ও অভিনেত্রী শমী দাশ।
দেশ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ওই অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন-ব্রিটেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার আব্দুল হান্নান এবং ব্রিটেন ও বাংলাদেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
ব্রিটিশ অর্থনীতি ও কমিউনিটি উন্নয়নে অবদান রয়েছে এমন ২১টি ক্যাটাগরিতে মোট ২৮জন ব্যবসায়ী, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও সমাজ সংগঠককে অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়।
অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্তরা হলেন-ফারজানা হোসেন নীলা, ফরিদ নাবির, রফিক হায়দার, আহবাবুর রহমান মিরন, মাজেদুল চৌধুরী, আলহাজ মনজুর আলীসহ মোট ২৮ জন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের কৃষি ও কৃষকদের উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখার জন্য মিডিয়া ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজকেও বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৫