ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লন্ডন

গার্লস সামিটের এক বছর: শেখ হাসিনার প্রশংসায় ব্রিটেন

সৈয়দ আনাস পাশা, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩০৫ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৫
গার্লস সামিটের এক বছর: শেখ হাসিনার প্রশংসায় ব্রিটেন ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

লন্ডন থেকে: ফিমেইল জেনিটাল মিউটিলেশন-এফজিএম (Female genital mutilation বা নারীর প্রজনন অঙ্গহানি) এবং বাল্য ও জোরপূর্বক বিয়ে বা চাইল্ড আর্লি ফোর্সড ম্যারেজ (সিইএফএম) বিরোধী গার্লস সামিটের প্রথমবার্ষিকী পূর্ণ হলো বুধবার (২২ জুলাই)।

গত বছর লন্ডনে অনুষ্ঠিত এ সামিটের প্রথমবার্ষিকী উপলক্ষে এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ বাস্তবায়নের অগ্রগতি মূল্যায়ন করতে গিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করেছেন যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী জাস্টিন গ্রিনিং।



বুধবার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রণালয় (ডিএফআইডি) থেকে বাংলানিউজসহ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রেরিত এক বিবৃতিতে গ্রিনিং এ প্রশংসা করেন।

বিবৃতির সঙ্গে গত বছর গার্লস সামিটে উপস্থিত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কয়েকটি ছবিও পাঠানো হয়। এ সময় ব্রিটিশ আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত এ গার্লস সামিট ছিল ফিমেইল জেনিটাল মিউটিলেশন-এফজিএম বিরোধী একটি অবিরাম যুদ্ধ শুরুর ক্ষণ। এর ফল হিসেবে মেয়ে শিশুদের জন্য বিশ্বে একটি ভালো জায়গা তৈরি হওয়া শুরু হয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশসহ যে ৫টি দেশে বাল্যবিয়ের উচ্চহার সেসব দেশ এটি বন্ধ করতে প্রথমবারের মতো আইনি প্রক্রিয়ায় নেমেছে। তারা বিষয়টি নিয়ে কাজও করছে।

বাংলাদেশে বাল্যবিয়ে সংক্রান্ত কিছু পরিসংখ্যান তুলে ধরে বিবৃতিতে তিনি বলেন, এ দেশের নারীদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকেরও বেশি ১৮’র কম বয়সে বিয়ে হয়। এটাই চলে আসছিল তবে বর্তমানে ২০ থেকে ২৪ শতাংশ বাংলাদেশি নারীর বিয়ে হচ্ছে তাদের ১৮তম জন্মদিনের আগেই। আর এর মধ্যে এক পঞ্চমাংশ রয়েছেন যাদের বিয়ে হচ্ছে ১৫ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে। তবে ভালো খবর হলো, বাংলাদেশের বাল্যবিয়ের এ হার নিম্নের দিকে। এ সময় তিনি এফজিএম ও সিইএফএম বিরোধী গার্লস সামিটের কথা স্মরণ করে বলেন, এটি অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যে ওই সামিটে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন।

গ্রিনিং বলেন, ১৮ বছরের কম বয়সী জনসংখ্যার নারীদের দেশের সমৃদ্ধ নাগরিক করতে তাদের শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে, যাতে তারা দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখার পাশাপাশি নিজেদের সুন্দর ভবিষ্যতও গড়তে পারে। আর এক্ষত্রে বাল্যবিয়ে ও শিশুমাতৃত্ব রোধের বিকল্প নেই।

ব্রিটিশ আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, আমি বিশ্বাস করি যখন মেয়ে ও নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা সংগ্রামের সময় আসে, সেই সংগ্রামে আপনি জিততে না পারলে, অবশ্যই আপনি আপনার সুযোগ হারাবেন। সুতরাং ব্রিটেন এ সংগ্রাম চালিয়ে যেতে চায় বাংলাদেশের মতো দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে।

বিবৃতিতে তিনি এ বিষয় বা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ ও এর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগ্রহ এবং অবদানের প্রশংসা করেন।

উল্লেখ্য, ফিমেইল জেনিটাল মিউটিলেশন-এফজিএম এবং বাল্য ও জোরপূর্বক বিয়ে বা চাইল্ড আর্লি ফোর্সড ম্যারেজ (সিইএফএম) বিরোধী গার্লস সামিটে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন হোস্ট এবং ইউনিসেফ, ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রণালয় কো-হোস্টের ভূমিকা পালন করে। এফজিএম ও সিইএফএম প্রতিরোধে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা আরও জোরদারের লক্ষ্য সামনে রেখে অনুষ্ঠিত হয় এ সামিট। সামিট বিষয়ে ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক এ্যান্থনী লেক সে সময় বলেন, এফজিএম এবং বাল্যবিবাহ খুব গভীর এবং স্থায়ীভাবে মেয়েদের ক্ষতি করে। তাদের নিজেদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে। মেয়েরা কোনো সামগ্রী নয়। তাদের অধিকার রয়েছে ভবিষ্যৎ নির্ধারণের। এদিকে বাল্যবিবাহের প্রভার আরও প্রসারিত এবং এটা ভুক্তভোগীদের সারা জীবন ধরে বঞ্চনার শিকার হতে হয়। এখনই আরও কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়া হলে আরও লাখ লাখ মেয়ে সর্ম্পূণ অপ্রয়োজনীয় এ ক্ষতির শিকার হবেন। লন্ডনে অনুষ্ঠিত ‘গার্লস সামিট-২০১৪’ সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লন্ডনে যান।

বাংলাদেশ সময়: ২৩০৬ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৫
আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

লন্ডন এর সর্বশেষ