লন্ডন: বাংলাদেশের বন্ধু ডাচ নাগরিক, মানবাধিকার নেতা, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ে বিশিষ্ট লেখক ড. পিটার কাস্টার্স আর নেই।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে নেদারল্যান্ডসের লাইডেনে নিজ বাসভবনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
মৃত্যুকালে পিটার ভারতীয় বংশোদ্ভূত স্ত্রী সুনিতা নায়ার, পুত্র সুকান্ত কাস্টার্সসহ অগণিত সহযোদ্ধা ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
সাম্রাজ্যবাদ ও যুদ্ধবিরোধী আন্দোলনে সত্তর দশকে ইউরোপীয় পুঁজিবাদী চেতনায় আঘাত করেছিলো যে প্রজন্ম, পিটার কাস্টার্স ছিলেন তাদেরই প্রতিনিধি।
ডাচ নাগরিক পিটার বাংলাদেশ অন্তপ্রাণ একজন মানুষ। বারবার তার লেখনীতে এসেছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, রাজনীতি, অসাম্প্রদায়িকতাসহ নানা বিষয়।
বাংলাদেশের নারীশ্রমিক, জলবায়ু পরিবর্তন, কর্নেল তাহের, কৃষক আন্দোলন, ধর্মীয় ফ্যাসিবাদ নিয়ে তার প্রচুর গবেষণা ও লেখা আছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশের মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে তার গ্রন্থ ‘রিমেম্বারিং মওলানা ভাসানী’।
বিদেশি হয়েও নানা দুর্যোগ-দুর্দিনে সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে বাংলাদেশের পাশে ছিলেন পিটার।
১৯৭৫ সালে বাঙালি জাতির ক্রান্তিলগ্নে এ দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে জেলেও গিয়েছিলেন পিটার। বেশ কিছুটা সময় বাংলাদেশের কারাগারে কাটাতে হয়েছে তাকে। ওই সময়ই আয়ত্ব করে ফেলেন বাংলা ভাষা।
সাম্প্রতিককালেও ইউরোপীয় রাজনীতিতে বাংলাদেশের পক্ষে লবিং করতে প্রগতিশীল বাংলাদেশিদের সঙ্গে ভূমিকা রেখেছেন পিটার কাস্টার্স।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টসহ নানা জায়গায় বাংলাদেশের ক্ষুধা, দারিদ্র্য, জলবায়ু, মৌলবাদ ও যুদ্ধাপরধীদের বিচারের দাবিতে সোচ্চার ছিলেন তিনি।
২০১১ সালে গোপন সামরিক আদালতে কর্নেল তাহেরের বিচারকে অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। এরপর ফের আলোচনায় আসেন ডাচ নাগরিক পিটার কাস্টার্স।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৫, ২০১৫
এমএ/