লন্ডন: যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের তীব্র বিক্ষোভের মুখে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে অবতরণ করেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় ১২টা ১৫ মিনিট) আমিরাত এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে হিথ্রো বিমানবন্দরের টার্মিনাল-৩ এ এসে পৌঁছান খালেদা।
খালেদা জিয়া এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে এসে ঢোকার পর থেকেই লাউঞ্জের বাইরে তার লন্ডন সফরের প্রতিবাদে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃত্বে বিক্ষোভ শুরু হয়। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান শরীফ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফারুক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারোজ্জামান চৌধুরী, মারুফ চৌধুরী, যুক্তরাজ্য যুবলীগের সভাপতি ফখরুল ইসলাম মধু, সাধারণ সম্পাদক সেলিম খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামাল আহমেদ খানের নেতৃত্বে আয়োজিত এ বিক্ষোভে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী অংশ নেন।
বিক্ষোভ এড়াতে বেশ কিছুক্ষণ লাউঞ্জে বসেই ছেলে ও দলীয় নেতাদের সঙ্গে সময় কাটান খালেদা জিয়া। এ সময় বাইরে প্রচার হয়, খালেদা জিয়া টার্মিনাল-৩ নয়, টার্মিনাল-৫ এ এসে অবতরণ করেছেন। এ খবর শুনে বিক্ষোভরত নেতাকর্মীরা টার্মিনাল-৩ ছেড়ে চলে যান। এর পর পরই খালেদা জিয়াকে নিয়ে ছেলে তারেক রহমান ও স্থানীয় নেতারা হিথরো টার্মিনাল-৫ সংলগ্ন সুফিটেল হোটেলে এসে ওঠেন।
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ জানিয়েছে, লন্ডন সফরকালে খালেদা যেখানেই কর্মসূচিতে যাবেন, সেখানেই তারা বিক্ষোভ করবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফারুক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারোজ্জামান চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশে সন্ত্রাসের নতুন ধারা ‘আগুন সন্ত্রাস’ এর জনক খালেদা জিয়া কোনো সভ্য দেশে কর্মসূচি পালনের অধিকার রাখেন না। আগুনে পুড়িয়ে শত শত মানুষ হত্যাকারী এই বিএনপির নেত্রীর প্রতি তার প্রতিটি কর্মসূচিতেই বিক্ষোভ দেখাবেন প্রবাসীরা।
এদিকে খালেদা জিয়ার লন্ডন অবতরণ, অবস্থান ও কর্মসূচি সবকিছু নিয়েই চলছে নজিরবিহীন গোপনীয়তা। হিথরো বিমানবন্দরে অবতরণের আগ পর্যন্ত যুক্তরাজ্য বিএনপির শীর্ষ ২/৩ জন নেতা ছাড়া আর সবাই দলীয় চেয়ারপার্সনের লন্ডন সফর নিয়ে ছিলেন অন্ধকারে।
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ‘যেখানে খালেদা, সেখানেই প্রতিরোধ’ এমন ঘোষণার পর নেত্রীর সফর নিরাপদ রাখতে ২/৩ জন নেতা ছাড়া আর কাউকেই কিছু জানতে দেওয়া হয়নি। সাংবাদিকদের অনুসন্ধানের মুখে ওই ২/৩ জন শীর্ষনেতাও বারবার দোহাই দিয়েছেন কেন্দ্রের।
তারা বলছেন, ঢাকা ছাড়া তারা কেউই খালেদা জিয়ার সফর নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানেন না। এ নিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যেও রয়েছে ক্ষোভ।
এমনিতেই দলের বর্তমান কমিটি নিয়ে রয়েছে কোন্দল। তার ওপরে চেয়ারপার্সনের সফর নিয়ে তাদের কিছুই বলা হচ্ছে না, এ নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিলেন অনেকে।
সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী কয়দিন লন্ডন থাকবেন, কর্মসূচিই বা কি? যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, নেত্রী মাত্র আসলেন, আমরা এখনও কর্মসূচি বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর আপনাদের জানানো হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বিএনপি নেতা জানান, তাদের নেত্রী আপাতত সুফিটেল হোটেলে হোটেলেই বিশ্রাম নেবেন। তবে অন্য একটি সূত্র বাংলানিউজকে জানায়, বিশ্রাম শেষে বুধবারই খালেদা জিয়াকে নিয়ে যাওয়া হবে ক্যানারি ওয়ার্ফের রেডিসন হোটেলে। লন্ডন সফরকালে পুরোটা সময় সেখানেই অবস্থান করবেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৫
এএসআর