ঢাকা: একটি রাজনৈতিক দলকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই দলের কর্মীরা লন্ডনে বাংলানিউজের স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট সৈয়দ আনাস পাশাকে অপদস্থ করতে বিভিন্ন ধরনের অপৎতরতা চালাচ্ছেন। লন্ডনভিত্তিক একটি অনলাইন নিউজপোর্টালকে এ অপৎতরতার সামনে রাখা হয়েছে।
নিউজপোর্টালটিতে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের সঙ্গে আনাস পাশাকে জড়িয়ে বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, বানোয়াট, ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এরপর সে সংবাদটি ছড়িয়ে দেওয়া হয় বিএনপি-জামায়াতের কর্মীদের ফেসবুক-টুইটারের অ্যাকাউন্টে।
একজন পেশাদার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এ নোংরামিতে নিন্দার ঝড় বইছে যুক্তরাজ্যের বাঙালি কমিউনিটিতে। আনাস পাশার শুভানুধ্যায়ীরা এ বিষয়ে তাকে পুলিশে অভিযোগ এবং নিউজপোর্টালটির বিরুদ্ধে আইনি আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শও দিচ্ছেন।
নিউজপোর্টালটিতে ওই মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করার পর আনাস পাশা বিস্ময় প্রকাশ করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি বলেন, “আমি নিরপেক্ষ ব্যক্তি নই। মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার পক্ষে আমার অবস্থান। এতে যদি কেউ বা কোনো গোষ্ঠী আমার প্রতি অসন্তুষ্ট থাকেন, তাহলে আমার কিছুই করার নেই। একজন সংবাদকর্মী হিসেবে আমার লেখালেখি কোনো না কোনো মহলের স্বার্থে আঘাত করে। এই আঘাতের প্রতিঘাত হিসেবে নাম পরিচয়হীন কোনো অনলাইনে ভূয়া খবর আপলোড করে যখন আমার চরিত্র হননের চেষ্টা হয়, তখন সমাজের অন্যায়, অসঙ্গতি ও রাজনীতির নামে জনগণকে গিনিপিগ হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা যারা করেন, তাদের বিরুদ্ধে আমার কলম প্রতিবাদ স্বার্থক হচ্ছে বলেই মনে করি। এখানেই আমার পেশাগত স্বার্থকতা। আমার পাঠক, বন্ধুবান্ধব ও শুভানুধ্যায়ীরা এতে খুবই ক্ষুব্ধ। তাদের সান্ত্বনা দিতে গিয়ে আমি বলি, প্রথমে সলিসিটর নোটিশ দিয়ে হুমকি, শেষে চরিত্র হনন করে ভূয়া নিউজ সমাজের ভিলেনদের বিরুদ্ধে আমার লেখনী স্তব্ধ করতে পারবে না। বরং এ ধরনের অপপ্রচার আমার এই শক্তি আরও বাড়িয়ে দিল, অন্তত এজন্য হলেও আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। এসব অপপ্রচারে কষ্ট না পাওয়ার জন্য শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। ”
ওই স্ট্যাটাসে সামাজিক যোগাযোগকারীরা তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং আনাস পাশাকে বিভিন্ন পরামর্শ ও অনুপ্রেরণার কথা বলেন।
মোতোসসির চৌধুরী জনি নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কণ্ঠস্বর বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের বিশেষ প্রতিনিধি সৈয়দ আনাস পাশার বিরুদ্ধে ভূঁইফোড় একটি অনলাইনে মিথ্যা প্রপাগান্ডা- মানহানিকর - উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। ’
আহাদ চৌধুরী বাবু নামে আরেকজন বলেন, ‘ধন্যবাদ। আনাস পাশা সম্পর্কে এ ধরনের সংবাদ প্রকাশ অত্যন্ত লজ্জার। যতোদিন যাবত দেখছি, একজন আপোষহীন সৎ মানুষ হিসেবে জানি। তার সঙ্গে মতের অমিল থাকাটা স্বাভাবিক। কিন্তু একজন মানুষকে অকারণে বিব্রত করা হলুদ সাংবাদিকতা ছাড়া কিছু নয়। এটা নিন্দনীয়। ’
আনাস পাশাকে মানহানির মামলা দায়েরের পরামর্শ দিয়ে এম নাঈম খান নামে আরেকজন বলেন, ‘আপনার প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আপনার উচিত তাদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করা এবং এর কঠোর জবাব দেওয়া। ’
সৈয়দ লতিফ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে লেখালেখি করলে কিছু রাজাকার খুশি থাকতে পারে না। আপনি লিখতে থাকুন আমরা আপনার সঙ্গে আছি। ’
এ ঘটনায় দুঃখ না পেতে আনাস পাশাকে সান্ত্বনা দিয়ে চৌধুরী হাফিজুর রহমান বলেন, ‘পুরো কমিউনিটি আপনার সঙ্গে আছে। আমরা একসময় কালপ্রিটদের মূলোৎপাটন করতে পারবো। ’
এ বিষয়ে সৈয়দ আনাস পাশা বলেন, ‘বাংলানিউজে প্রকাশ হওয়া নিউজগুলোতে ক্ষুব্ধ হয়ে একটি রাজনৈতিক দলের লন্ডনভিত্তিক অনলাইন নিউজপোর্টালটি এ ধরনের অপতৎপরতা চালাচ্ছে। শুভানুধ্যায়ীদের পাশাপাশি এইচ টি ইমামও হাইকমিশনের সহায়তায় স্থানীয় প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন। আমি বিষয়টি নিয়ে রিপোর্ট করতে পুলিশে যাচ্ছি। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৫
এইচএ