লন্ডন: জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদ্যবিদায়ী স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের চলমান অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে প্রয়োজন সম্মিলিত প্রচেষ্টা। দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় রাজনৈতিক বিরোধ যেন বাধার প্রাচীর হয়ে না দাঁড়ায়।
সোমবার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে লন্ডনে তাকে নাগরিক অভ্যর্থনা দেওয়ার লক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ড. মোমেন এ কথা বলেন। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে দেশে ফেরার পথে পূর্ব লন্ডনের হোয়াইট হাউস ইভেন্টস ভেন্যুতে কমিউনিটির উদ্যোগে এ নাগরিক অভ্যর্থনা ও ডিনারের আয়োজন করা হয়।
সৈয়দ আনাস পাশার সভাপতিত্বে এবং সালিমা শারমিন হোসেইন ও সৈয়দ মুমিনের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদ্যবিদায়ী সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক সুলতান শরীফ, প্রবীণ রাজনীতিক শামসুদ্দিন খান ও আইনজীবী ব্যারিস্টার আখলাকুর রহমান চৌধুরী কিউসি।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জয়েন্ট কাউন্সিল ফর ওয়েলফেয়ার অব ইমিগ্রেন্টসের (জেসিডব্লিউআই) সদ্যবিদায়ী চিফ এক্সিকিউটিভ হাবিব রহমান, বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার নাদিম কাদির, বেগম সেলিনা আফরোজা, চ্যানেল আই ইউরোপের সিইও রেজা আহমেদ ফয়সল চৌধুরী শুয়েব, এনটিভি’র ডাইরেক্টর মোস্তফা সরওয়ার বাবু, ব্রিটিশ-বাংলাদেশ ক্যাটারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইয়াফর আলী, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জালাল উদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নঈমুদ্দিন রিয়াজ, যুগ্ম-সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হিরন মিয়া।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ড. মোমেনের ওপর নিউইয়র্কভিত্তিক টিভি চ্যানেল টিভিএন২৪’র সৌজন্যে চিত্রনির্মাতা মঈনুল হোসেন মুকুল নির্মিত ১০ মিনিটের একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়। এরপর বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে তাকে ফুল দিয়ে বরণ করা হয়।
অভ্যর্থনা গ্রহণের পর ড. মোমেন শিক্ষকতা পেশা থেকে কূটনৈতিক পেশায় আগমনের গল্প শোনান সবাইকে।
তিনি বলেন, চাকরির প্রথম জীবনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সরকারের অধীনে দায়িত্ব পালন করেছি। এরপর দীর্ঘদিন শিক্ষকতার সঙ্গে জড়িত ছিলাম। জীবনের শেষ লগ্নে জাতির জনকের কন্যার আহ্বানে ফিরে আসি কূটনৈতিক পেশায়।
দায়িত্ব পালনকালে অর্জিত অভিজ্ঞতাও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন ড. মোমেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিশ্বের অন্যতম একজন ডাইনামিক লিডার আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বিশ্বদরবারে বাংলাদেশ আজ একটি আত্মমর্যাদাসম্পন্ন জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে।
২০২১ সালে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ গড়তে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের কথা উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, উন্নতির পথে বাংলাদেশের চলমান অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে শুধু সরকারের সদিচ্ছাই যথেষ্ট নয়, প্রয়োজন সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা। রাজনৈতিক মতভিন্নতা এক্ষেত্রে যেন বাধার প্রাচীর হয়ে না দাঁড়ায়। দেশের সাধারণ মানুষদেরও এ বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জন বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে ব্যাপক প্রশংসিত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশ আজ সর্বোচ্চ ভূমিকা পালন করছে, বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের কোনো শত্রু নেই।
ড. মোমেন বলেন, সবার সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব, কার সঙ্গে শত্রুতা নেই- বাংলাদেশের এমন অবস্থানও প্রশংসিত আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স ও তার শান্তির বাণীও বিশ্ব ফোরামে ব্যাপক প্রশংসিত হচ্ছে।
বাংলাদেশের সহস্রাব্ধ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনে বিশ্ব নেতাদের ব্যাপক প্রশংসার কথা উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনেও বাংলাদেশ সফলতা দেখাবে বলে প্রধানমনন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রাখছে জাতিসংঘ।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সরকারের অধীনে কাজ করার সুযোগ হয়েছে, কাজ করেছি তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে। এটি আমার অন্যতম পরম পাওয়া। প্রধানমন্ত্রী যদি মনে করেন দেশের কাজে এখনও আমার ভূমিকা রাখার সুযোগ আছে, তাহলে জীবনের শেষ অধ্যায়ে এসে সে ভূমিকা রাখতেও আমার কোনো আপত্তি নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৫
এইচএ