আট্রিয়াম হল, লন্ডন থেকে: লন্ডনে মঞ্চস্থ হলো প্রবাসে বেড়ে ওঠা বাংলাদেশি তরুণ প্রজন্মের নাটক ‘বাসন্তী’। ব্রিটিশ-বাংলাদেশি প্রজন্মের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক শেকড় খোঁজার গল্প নিয়ে রচিত এই ‘বাসন্তী’ মুগ্ধ করে হলভর্তি ছয়শ’ দর্শককে।
বুধবার (২ মার্চ) লন্ডনের আর্টিয়াম হলে এটি মঞ্চস্থ হয়। নাটক মঞ্চায়নের আয়োজন করে ইউসিএল বাংলা সোসাইটি। নাটকের গল্প রচনা থেকে উপস্থাপনা সবই ছিল নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশিদের। এতে ছিল ইংরেজি, সিলেটি এবং প্রমিত বাংলা ভাষার সংলাপ।
নাটকে অভিনয় করেন অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি, লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্স, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন, কিংস কলেজ, সোয়াস, কুইনমেরি ইউনিভার্সিটির মতো শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীরা।
এদের মধ্যে ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তী। তিনি বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানার মেয়ে। রূপন্তী নাটকের একটি অংশে নৃত্য পরিবেশনও করেন।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের বাংলা সোসাইটির প্রেসিডেন্ট মেহজাবিন আহমেদ ও সাবাহ হোসেনের পরিচালনায় মঞ্চস্থ নাটকে অভিনয় করেন মাহাথির পাশা, নিশাত মনসুর, নিশাত আহমেদ, সাহমাত হক, রত্না আখতার, তাহমিদুর রহমান, তাফসির আহমেদ ও আয়শা চৌধরী প্রমুখ। দলনৃত্যে অংশ নেন আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তী।
মেহজাবিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিবছরই আমরা এরকম উদ্যোগ নিয়ে থাকি। নাটকের টিকিট বাবদ যে অর্থ উঠে তা নির্দিষ্ট একটি চ্যারিটিকে দান করে দেওয়া হয়। এমন উদ্যোগের মাধ্যমে নিজের শেকড় যেমন জানার চেষ্টা হয়, ঠিক তেমনি চ্যারিটি ওয়ার্কেও ভূমিকা রাখা হয়।
শেখ রেহানা কন্যা রুপন্তীর সঙ্গে সামনাসামনি হতেই তিনি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ‘কেমন লাগলো আমাদের নাটক’ বলে। ‘খুবই ভালো’ উত্তর দিতে রুপন্তীর ফের মন্তব্য, ‘প্রবাসে বেড়ে ওঠা আমরা এই প্রজন্ম শেকড়বিমুখ নই, শেকড় আমাদের অবিরত টানে’।
নাটক দেখতে এসে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নাজমুল ইসলাম নুরু ও গোলাম মোস্তফা আপ্লুত হয়ে পড়েন। তারা বাংলানিউজকে বলেন, সন্তানরা আমাদের শেকড় চিনবে কিনা, এমন একটা আশঙ্কার ভীতি কেটে গেল আজ।
নাটকের পাশাপাশি এতে ছোট চাচার চরিত্রে অভিনয় করা কুইনমেরি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী নিশাত মনসুরের লেখা, সুর ও কণ্ঠে ‘চলো আমরা বাংলাদেশটা ঘুরে আসি’ গান; বড় চাচার চরিত্রে অভিনয়কারী লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস’র স্টুডেন্ট ইউনিয়নের বিএমই অফিসার মাহাথির পাশার ‘বাংলাদেশ ইজ মোর দেন জাস্ট এ ল্যান্ড অব বেগারস, মস্কিউটোজ অ্যান্ড সুটকি/ লুক অ্যাট ইট, ইটস এ বিউটিফুল প্লেস’; মেঝচাচার চরিত্রে অভিনয়কারী ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের শিক্ষার্থী সাহমাত হকের ‘ওহ নো আই হেভনট অ্যানি ক্যাশ, টেক মাই কার্ড, মাই পিন নং ইজ 1971’; নানীর চরিত্রে অভিনয়কারী ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের শিক্ষার্থী নিশাত আহমেদের নিজের নাতি-নাতনীকে কবিতাপ্রেমিক স্বামীর গল্প শোনানোর প্রাণান্তকর চেষ্টাও দর্শকদের দারুণ আলোড়িত করে।
দর্শকসারিতে থাকা ছয়শ’ দর্শকের ৯০ ভাগই ছিলেন তরুণ প্রজন্মের ব্রিটিশ-বাংলাদেশি।
বাংলাদেশ সময়: ২২২৯ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০১৬
এইচএ/