হাউস অব কমন্স, ব্রিটিশ পার্লামেন্ট, লন্ডন থেকে: বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নে দেশটির রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার আহবান জানানো হয়েছে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের বাংলাদেশ বিষয়ক সেমিনার থেকে।
মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) স্থানীয় সময় বেলা ১টায় হাউস অব কমন্সের কমিটি রুমে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ-অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও রাজনৈতিক দলের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনার থেকে এই আহবান জানানো হয়।
শুরুতেই ‘চাটহাম হাউজ রুল’ এর নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ করে সেমিনারের কোনো ছবি তুলা বা এবিষয় কোনো নিউজ প্রকাশ করা যাবে না বলে সবাইকে জানিয়ে দেন সেমিনারের অন্যতম উদ্যেক্তা লর্ড কার্লাইল।
সেমিনারে বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগ তথা মহাজোট প্রতিনিধি দলের নেতা প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাবিহ উদ্দিন আহমদ, জাতীয় পার্টি নেতা পানিসম্পদ মন্ত্রী ব্যারিষ্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, আওয়ামী লীগ নেতা প্রশান্ত বড়ুয়া প্রমুখ।
সেমিনারে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রতিনিধিরা পরস্পরের প্রতি অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের মধ্যেই তাদের বক্তব্য শেষ করেন। সেমিনারে যৌথভাবে সভাপতিত্ব করেন লর্ড কার্লাইল ও বাংলাদেশ বিষয়ক অলপার্টি পার্লামেন্টারী গ্রুপের চেয়ার, কনজারভেটিভ দলীয় এমপি আন মেইন।
এতে উপস্থিত ছিলেন- সায়মন ডানসাক এমপি, রিচার্ড ফুলার এমপি, ব্যারোনেস ব্রিজ, এমোনেষ্টি ইন্টারন্যাশন্যালের আব্বাস ফয়েজ ও হিউম্যান রাইট ওয়াচের ব্রাড এডামস প্রমুখ।
দু’পক্ষের প্রতিনিধিদের বক্তব্য শেষে প্রশ্নোত্তরের সুযোগ দিলে জামাতে ইসলামীর ইউরোপীয় মুখপাত্র ব্যারিষ্টার আবু বকর মোল্লা জামায়াতের পক্ষে সাফাই গাওয়ার চেষ্টা করলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম অনুষ্ঠানের চেয়ার আন মেইনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, জামাত এখানে আছে জানলে আমরা এই সেমিনারে যোগ দিতাম না। সঙ্গে সঙ্গে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগর নেতারাও একযোগে জামায়াতের উপস্থিতির প্রতিবাদ জানাতে থাকলে আন মেইন আবু বকর মোল্লাকে সেমিনার ত্যাগ করার নির্দেশ দেন। কিন্তু আবু বকর মোল্লা এটি গণতান্ত্রিক আচরণ নয়, এমন মন্তব্য করতে থাকলে আন মেইন সিকিউরিটি ডেকে মোল্লাকে বের করে দেন সেমিনার থেকে।
সেমিনার শেষে বাইরে এসে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম সাংবাদিকদের বলেন, সেমিনারে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। অতীত ভুলে ভবিষ্যৎ উন্নয়নে একযোগো কাজ করার আহবান জানানো হয়েছে আমাদের। আমরা বলেছি অতীত মানে `১৯৭১ বাঙালি কখনও ভুলতে পারবেনা। বাঙালির চেতনার সঙ্গে মিশে আছে একাত্তর। সুতরাং আমাদের যাই করতে হয় একাত্তরের চেতনায়ই করতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক জঙ্গি তৎপরতা, গুপ্তহত্যা ইত্যাদি বিষয়ের তদন্ত অগ্রগতি সম্পর্কেও আমরা বলেছি।
যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত রাজনৈতিক দল জামাতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক ত্যাগের বিভিন্ন মহলের পরামর্শের কথা উল্লেখ করে এইচ টি ইমাম বলেন, আমরাও বার বার বলছি যুদ্ধাপরাধী দলের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করে বিএনপি জনগণের কাতারে ফিরে আসুক।
জঙ্গিবাদ মেকাবেলায় বিএনপির জাতীয় ঐক্যের আহবানে কি সরকার সারা দেবে এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রীর রজিনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেন, জঙ্গিবাদের মূল উৎস জামাতকে সঙ্গে নিয়ে জঙ্গিবাদ বিরোধী জাতীয় ঐক্যের স্লোগান দেয়াতো তামাসা ছাড়া আর কিছু নয়। আমরাতো বলেছি যুদ্ধাপরাধী সংগঠন জামাতের সঙ্গ ত্যাগ করে জনগণের কাতারে ফিরে না আসলে বিএনপি’র সঙ্গে কোনো ঐক্য হতে পারেনা।
বিএনপি কি জামাত সঙ্গ ছাড়বে বিএনপি প্রতিনিধি দলের নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমাদের ওপর এই দায় চাপানো কেন? সরকার জামায়াতের রাজনীতি বন্ধ ঘোষণা করলেই তো হয়। জামাত বন্ধ হয়ে গেলে তো আর আমাদের সঙ্গে থাকেনা।
**ব্রিটিশ পার্লামেন্ট থেকে জামায়াত নেতাকে বের করে দিলো সিকিউরিটি
বাংলাদেশ সময়: ০৪২৩ ঘণ্টাত, জুলাই ২০, ২০১৬
বিএস