লন্ডন: বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের গোড়াপত্তন শুরু করেছিল জামায়াত, এখনও সেই অপতৎপরতা অব্যাহত রেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম।
তিনি বলেন, ‘জঙ্গিবাদ আজ বৈশ্বিক সমস্যা হলেও বাংলাদেশে এর গোড়াপত্তন কিন্তু একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ থেকে।
‘আমরাও বলছি, আইএস সমর্থক, সহানুভূতিশীলদের পাশাপাশি রাজনৈতিক স্বার্থে এদের মদদদাতাদেরও উপস্থিতি রয়েছে বাংলাদেশে। তবে মদদ যতোই থাকুক বাংলাদেশের জনগণ এদের রুখবেই’।
বুধবার (২১ জুলাই) স্থানীয় সময় দুপুরে লন্ডন বাংলাদেশ হাইকমিশন ভবনে সংবাদ সম্মেলনে এসব মন্তব্য করেন তিনি।
‘বাংলাদেশে আইএস নেই, তবে সমর্থক আছে’ বলে মন্তব্য করে এইচ টি ইমাম বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য স্থানের মতো সাংগঠনিক কাঠামো নিয়ে বাংলাদেশে আইএস নেই, আছে বিভিন্ন নামে আইএস মতবাদে বিশ্বাসী কোনো কোনো গোষ্ঠী’।
অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের পর এফবিআই’র তদন্তের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এফবিআইও কিন্তু বলেনি, এটি আইএসের কাজ বা আইএস আছে’।
সংবাদ সম্মেলনে তার সঙ্গে লন্ডনের সেমিনারে আসা প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্য প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, জাতীয় পার্টির নেতা পানিসম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এমপি এবং লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার খোন্দকার মোহাম্মদ তালহা উপস্থিত ছিলেন। তারাও সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
এইচ টি ইমাম বলেন, ‘জঙ্গিবাদ আজ একক কোনো দেশ বা অঞ্চলের সমস্যা নয়, এর নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া বিশ্বব্যাপীই হয়। জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় বাংলাদেশকে সহযোগী মনে করে বলেই গুলশান হামলা তদন্তে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আমরা এটিকে ইতিবাচকভাবেই দেখছি’।
‘শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, প্রতিবেশী ভারতসহ বন্ধুপ্রতিম অন্যান্য অনেক দেশই আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। এই পাশে দাঁড়ানো জঙ্গিবাদবিরোধী বৈশ্বিক ঐক্যেরই অংশ’।
মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বাংলাদেশ বিষয়ক সেমিনারে অংশ নিয়ে দেশ ও সরকারের বিরুদ্ধে বহুমূখী অপপ্রচারের উত্তর দেওয়ার সুযোগ নিয়েছেন তারা- সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
তিনি বলেন, ‘একাত্তর বাঙালির সবচেয়ে বড় অনুভূতির জায়গা, যুদ্ধাপরাধী বাঙালি তথা সারা বিশ্বের সভ্য সমাজের কাছে অস্পৃশ্য- বাংলাদেশের জনগণের এ অনুভূতির কথা আমরা বলিষ্ঠ কণ্ঠে উপস্থাপন করতে পেরেছি। এ কারণেই সেমিনারের চেয়ার ব্রিটিশ এমপি আন মেইন জামায়াত নেতাকে বের করে দেওয়ার রুলিং দিয়েছেন। এই রুলিং একাত্তর ও যুদ্ধাপরাধী প্রশ্নে বাংলাদেশের জনগণের অনুভূতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন হিসেবেই আমরা ধরে নিচ্ছি’।
সংবাদ সম্মেলনে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ছাড়াও হাইকমিশনের মিনিস্টার (প্রেস) নাদিম কাদির, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান শরীফ, সহ সভাপতি এম এ রহিম, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নঈমুদ্দিন রিয়াজ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৬
এসএপি/এএসআর