লন্ডন: লন্ডন প্রবাসী বিশিষ্ট কবি, ঔপন্যাসিক ও নাট্যকার ডা. মাসুদ আহমেদ আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। শনিবার (০৩ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল ৬টায় গ্রেটার লন্ডনের কুইন্স হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন তিনি।
মরহুমের বড় সন্তান সাগর বাংলানিউজকে মৃত্যু সংবাদ নিশ্চিত করে সকলের কাছে তার বাবার আত্মার শান্তির জন্য দোয়া চেয়েছেন।
মৃত্যুকালে ডা. মাসুদের বয়স হয়েছিলো ৭৩ বছর। তিনি স্ত্রী ডা. হোসনে আরা আহমেদ এবং দুই ছেলে সাগর ও সৈকতসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
দীর্ঘদিন ধরে তিনি দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যান্সারে ভুগছিলেন। ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পর তার সর্বশেষ নাটকটি রচনা করেন ডা. মাসুদ।
পেশাগত জীবনে চিকিৎসক ডা. মাসুদ আহমেদ মধ্য ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে এক সময় জিপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ব্রিটেন ও বাংলাদেশের সাহিত্যাঙ্গনের পরিচিত মুখ ডা. মাসুদের সাহিত্যযাত্রা সেই অল্প বয়সে দৈনিক পত্রিকার ছোটদের আসর থেকে। তিনি ষাটের দশকের সাহিত্য আন্দোলনের সঙ্গে বিশেষভাবে জড়িত ছিলেন। সে সময় তার বিচরণ ছিল মূলত ছোট গল্প ও কবিতায়।
ষাটের দশকের সাড়া জাগানো ‘কবিতা-৬’ এর অন্যতম কবি ডা. মাসুদ। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম বাংলা ডাইজেস্ট পত্রিকা ‘সৈকত’ এর তিনি ছিলেন প্রকাশক ও সম্পাদক। সেই সময় তার রচিত বেশ কিছু নাটক বেতার, টেলিভিশন ও ভয়েস অব আমেরিকা থেকে প্রচারিত হয়।
সত্তর দশকের শুরু থেকে ডা. মাসুদ আহমেদ ব্রিটেনে বসবাস করছিলেন। তার গল্প কবিতা নিয়মিত ব্রিটেনের বাংলা পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এক পর্যায়ে তিনি নাট্য রচনায় মনোনিবেশ করেন। তার লেখা ৮টি নাটক ও ৩টি শ্রুতি নাটক ব্রিটেনের বিভিন্ন মঞ্চে মঞ্চায়িত হয়।
তার গল্প অবলম্বনে নির্মিত বেশ কয়েকটি টেলিফিল্ম ব্রিটেন ও বাংলাদেশে প্রদর্শিত হয়েছে। তিনি ব্রিটেনের মূলধারার সঙ্গীত প্রতিষ্ঠান গ্রান্ড ইউনিয়ন অর্কেস্ট্রার সঙ্গীত রচয়িতা ছিলেন।
বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারসহ বেশ কিছু পুরস্কারে ভূষিত প্রয়াত ডা. মাসুদ আহমদের প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- সম্মিলিত কবিতা গ্রন্থ ‘কবিতা-৬’, ছোট গল্প ‘চন্দ্রবিন্দু’ ও গল্পগ্রন্থ ‘অক্ষ-দ্রাঘিমা’।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০১৬
এসএপি/এএসআর